Thikana News
১৯ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪


 

ডলারের ঊর্ধ্বমুখীতে আবার বেড়েছে হুন্ডি 

৫ শতাংশ প্রণোদনা  দিচ্ছে না ব্যাংক
ডলারের ঊর্ধ্বমুখীতে আবার বেড়েছে হুন্ডি 


বাংলাদেশে ডলারের সঙ্কট কমছে না। বাড়ছে ডলারের দাম। একদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধি এবং চাহিদার কারণে বিভিন্ন ব্যাংকে ডলারের দামের ব্যাপক তারতম্য চলছে। কার্বমার্কেটে ডলারের দাম ব্যাংকগুলোর চেয়ে অনেক বেশী। ফলে দেশে হুন্ডিতে লেনদের আবার বেড়ে গেছে। ফলে সরকারের প্রবাসী আয় কমছে, যার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের রিজার্ভে। 
এদিকে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার প্রণোদনা ৫ শতাংশ ঘোষণা করেছে। প্রবাসীরা এখন থেকে দেশে টাকা পাঠালে ৫ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন। নতুন এই অতিরিক্ত ২ দশমিক ৫ শতাংশ দিবে ব্যাংকগুলো। ২২ অক্টোবর রোববার থেকে সরকারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও ৫ শতাংশ প্রণোদনা এখনো কার্যকর হয়নি। প্রবাসীরা গত তিন দিন ধরে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা পাচ্ছেন। এতে প্রবাসীরা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। 
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) গত ২০ অক্টোবর শুক্রবার রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় ৫ শতাংশ প্রণোদনার সিদ্ধান্ত নেয়। ২২ অক্টোবর রোববার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বাফেদা চেয়ারম্যান এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফজাল করিম। 
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনতে হচ্ছে রেমিট্যান্স হাউজগুলো থেকে। আবার নির্ধারিত দামে ডলারও মিলছে না। তাই ডলার সংকট কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে ডলার প্রবাহ বাড়বে এবং ডলার সংকট কাটাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এছাড়া দু’দিনের মধ্যে রেমিট্যান্স ছাড় দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তিন দিন পেরিয়ে গেলেও ব্যাংকগুলো সিদ্ধান্ত কার্যকর করেনি। 
নিউইয়র্কে জনপ্রিয় মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান সানম্যান গ্লোবাল এক্সপ্রেসের ফাইন্যান্সিয়ার ডিরেক্টর আমিনুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, সরকার ৫ শতাংশ প্রণোদনার সিদ্ধান্ত নিলেও ব্যাংকগুলো এখনো তা কার্যকর করেনি। এতে গ্রাহক অসন্তুষ্ট হচ্ছেন। তিনি বলেন, সম্ভবত যারা সরকার নির্ধারিত ব্যাংক রেটে রেমিট্যান্স পাঠাবেন তাদের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ প্রণোদনা কার্যকর হবে। তিনি জানান, বর্তমানে ব্যাংক রেট ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। তবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বৈধ চ্যানেলেই রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য দিচ্ছে ১১৬ টাকার ওপরে। সঙ্গে আড়াই শতাংশ প্রণোদনাও পাচ্ছেন। এ কারণে গ্রাহকরা সরকারি রেটে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছেন না। 
এখানে উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ সরকার। এ সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলারে দাঁড়ায়, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। একইভাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রবাসী আয়ে ব্যাংকে ১ মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাওয়া যায় ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। তার ওপর সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিত। এতে এক ডলারে পাওয়া যেত ১১৩ টাকা ২৬ পয়সার কিছু বেশি। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন ব্যাংকগুলো দেবে আরও ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা। ফলে এখন থেকে প্রবাসীরা এক ডলারে পাবেন ১১৬ টাকার কিছু বেশি। ব্যাংক নিজস্ব আয় থেকে প্রবাসীদের ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেবে। এটি আমদানীকারকদের থেকে নেওয়া হবে না।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসাইন বলেন, যারা অবৈধ পয়সা দিয়ে ডলারের ব্যবসা করেন, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কারণ ১৩০ টাকা ডলার রেট অফার করা হলে তারা ১৪০ টাকায় কিনবে। এ জন্য হুন্ডির সঙ্গে ডলারের ফরমাল রেট মেলানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। তবে আশা করা যাচ্ছে, প্রণোদনা বাড়ার ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসা বাড়বে। ডলার সংকট কাটাতে এই উদ্যোগ সুফল বয়ে আনবে।
অন্যদিকে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর দু’দিনের মধ্যে তা প্রাপকের হাতে পৌঁছে দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করে বলেছিল, ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে দু’দিনের মধ্যে রেমিট্যান্স ছেড়ে দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক নোটিশে বলেছে, ‘সম্প্রতি লক্ষ করা গেছে যে এই নিয়ম মানা হচ্ছে না।’

কমেন্ট বক্স