২৮ অক্টোবর বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কোনো বাধা দেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এও জানতে চেয়েছেন, ওই দিন গাড়ি চলাচল সচল থাকবে কি না। জবাবে মন্ত্রী তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কোনো বাধা দেওয়া হবে না।
২২ অক্টোবর রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। এর আগে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এ সময় তিনি বিএনপির কর্মসূচি ছাড়াও দুর্গাপূজা ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।
একজন রাষ্ট্রদূত হয়ে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাওয়া কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারাই বলুন এটা পারে কি না। উনি আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, আমি তাকে আমাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছি। বাকি বিষয়গুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখবে।
সারা দেশে দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে হবে কি না, পিটার হাসের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তাকে বলেছেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি বাংলাদেশে প্রতিবছরই পূজার সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিটি মণ্ডপেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আমাদের দেশের মানুষ শান্তিপ্রিয়। কাজেই পূজাতে কিছু হবে না বলেই আমারা বিশ্বাস করি। তার পরও যথেষ্ট সতর্ক অবস্থা আছে।’
২৮ অক্টোবর বিএনপির কর্মসূচির দিন রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হবে কি না বা অন্য কিছু করা হবে কি না, রাষ্ট্রদূতের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তাকে বলেছেন, ‘আমাদের ওই ধরনের কোনো কর্মসূচি নেই। আমরা মনে করি, তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে। তাহলে আমাদের কিছু বলার নেই। তার পরও আমরা অনুরোধ করব। ঢাকা এমনিতেই যানজটের শহর। সেখানে যদি ১০ লাখ বা তারও বেশি লোক ঢোকে, তাহলে একটা মিসম্যাচ হবে কমিউনিকেশনে। সেটা যাতে না হয় সে জন্য আমরা রিকয়েস্ট করব। আমরা আসা-যাওয়া বন্ধ কেন করব। আসা-যাওয়ায় বাধা দেব না। আমরা শুধু বলব, তারা যেন কোনো ভায়োলেন্সে লিপ্ত না হয়। চলাচল যেন সচল রাখে, এটুকুই আমাদের রিকয়েস্ট। তাকেও আমরা জানিয়ে দিয়েছি।’
আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে ওইদিন থেকে চূড়ান্ত ধাপ শুরুর লক্ষ্য দলটির। অন্যদিকে বিএনপিকে প্রতিহত করে রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও। দুই দলের এমন মুখোমুখি অবস্থানের কারণে আলোচনায় ফিরে এসেছে ১৭ বছর আগের আরেক ২৮ অক্টোবর।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনীতিতে সেদিন যুক্ত হয়েছিল রক্তক্ষয়ী সংঘাতের এক কালো অধ্যায়। তাতে প্রাণ গেছে অন্তত ২৩ জনের। সেই সংঘাতের সূত্র ধরেই সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের খপ্পরে পড়েছিল দেশ। যে জন্য চরম মূল্য দিতে হয়েছে দেশের শীর্ষ দুই নেত্রী থেকে শুরু করে প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রথম সারির নেতাদের। আবারও কি সেই পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশ?
ঠিকানা/এনআই