বিশ্বজুড়ে চলছে অর্থনৈতিক মন্দা। আর এই মন্দায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মধ্যবিত্তরা। ব্যয় বাড়লেও বাড়েনি তাদের আয়। বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে তাদের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। তবে ঈদ বলে কথা। ঈদে সন্তানদের জন্য নতুন জামাকাপড় না দিতে পারলে বাবা-মার মনে শান্তি আসে না। সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে তাই মধ্যবিত্তের ভরসা এখন ফুটপাতের দোকান।
জানা গেছে, স্টোরে একটি পাঞ্জাবী বা সালোয়ার কামিজের দাম ৭০ থেকে ১০০ ডলার হলে ফুটপাতে সেটাই ৪০ ডলারে মিলছে। অপেক্ষাকৃত কম মানের হলেও মধ্যবিত্তের জন্য এ যেন সোনায় সোহাগা।
জ্যাকসন হাইটসের বাসিন্দা আলিম হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, গত ৭ এপ্রিল শুক্রবার থেকে প্রায় প্রতিদিন তিনি সপরিবারে জ্যাকসন হাইটসে আসা যাওয়া করছেন ঈদের বাজার করতে। দুই মেয়ে ও এক ছেলের জন্য ঈদের জামাকাপড় কিনতে বিভিন্ন স্টোরে ঘুরেছেন। কিন্তু চড়া দামের কারণে কিরতে পারেননি। অবশেষে ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার ফুটপাত থেকে মেয়ের জন্য জামা এবং এক ছেলের জন্য পাঞ্জাবি কিনেছেন। তিনি জানান, মেয়ের জন্য যে জামা ৫৫ ডলার চেয়েছিল স্টোরে, সেই জামা তিনি ডাইভারসিটি প্লাজার ফুটপাতের দোকান থেকে কিনেছেন ২৫ ডলারে। ছেলের জন্য পাঞ্জাবি নিয়েছেন ৩০ ডলারে। অথচ স্টোরে ৫০ ডলারের নিচে কোনো পাঞ্জাবি নেই।
এদিকে ঈদের বাজার জমে না উঠলেও ফুটপাতে দিন দিন দোকানের সংখ্যা বাড়ছে। সিটির অননুমোদিত হলেও অসংখ্য দোকান গড়ে উঠছে ফুটপাতে। নিউইয়র্কের কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসে সবচেয়ে বেশী দোকান লক্ষ করা যায় ফুটপাতে। এরপর রয়েছে জ্যামাইকা ও ব্রঙ্কস। চাঁদরাতে এসব এলাকায় পথচারিদের হাঁটা অসম্ভব হয়ে পড়ে ফুটপাতে দোকান বসানোর কারণে। অবৈধ হলেও সিটি প্রশাসন বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছেন।
তবে ফুটপাতে দোকান বসায় অসন্তুষ্ট স্টোর মালিকেরা। তারা বলছেন, সিটিকে আয়কর দিয়ে স্টোরে তারা পণ্যের পসরা জামান। মাস শেষে স্টোরের ভাড়া গুনতে হয়। অথচ পুলিশের নাকের ডগায় ফুটপাতে অবৈধ দোকান বসলেও তারা এড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে স্টোর মালিকদের ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে।
জ্যাকসন হাইটসের একজন ব্যবসায়ী জানান, ফুটপাতের অবৈধ দোকানের ব্যাপারে তারা সিটি প্রশাসনে আপত্তি জানিয়েছেন। অবৈধ দোকান বন্ধ না হলে তারা আবারো অভিযোগ করবেন।
এদিকে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের দোকান বৈধ। সিটির অনুমোদন নিয়েই তারা ব্যবসা করছেন। দু-একজন মওসুমী ব্যবসায়ী থাকলেও থাকতে পারেন। ফুটপাতের জন্য স্টোর মালিকদের ব্যবসার ক্ষতির প্রশ্নই আসে না। তবে স্টোরে চড়া দামে পণ্য বিক্রি হয়। বাধ্য হয়ে ক্রেতারা ফুটপাতের দোকান বেছে নেন।