Thikana News
২২ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী : মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী : মির্জা ফখরুল ছবি সংগৃহীত
রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিথ্যাচার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকালে শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশনে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে শেখ হাসিনা কিছু কথা বলেছেন। এককথায় তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করেছেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা নেই। ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এখন ৮ কোটির ওপরে চলে গেছে। ব্যাংকে জমা আছে। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে খালেদা জিয়া যাতে রাজনীতি করতে না পারেন, তার জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে।’

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সংকটজনক অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখে তাকে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা, ৪৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার একটা ভয়াবহ দানব সরকার, লুটেরা সরকার, বর্গীদের মতো সরকার। এরা সম্পদ বিদেশে পাচার করে বাড়িঘর বানাচ্ছে। আর দেশের মানুষ অসহায় ও অভুক্ত থাকছে।’

তিনি বলেন, ‘তারা এ রকম একটা ভয়াবহ রাষ্ট্র তৈরি করেছে। এটাকে রাষ্ট্র বলা যায় না, এ দেশ আওয়ামী লীগের নির্যাতনকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এই রাষ্ট্র পরিবর্তন করতে হবে, এর কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে এক দফার আন্দোলন করছি। গণতন্ত্রহরণকারী, মানুষ হত্যাকারী এই শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং জনগণের হাতে ক্ষমতা তু্লে দিতে হবে।’

শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই শ্রমিক শ্রেণিই অতীতে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। আমি বিশ্বাস করি, এবারও শ্রমিকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। ইনশা আল্লাহ আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে সক্ষম হব, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হব।’

রাজধানীর মতিঝিলে আইডিয়াল স্কুল ও টিঅ্যান্ডটি কলেজের সামনের সড়কে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এই কনভেনশন হয়। এতে ২০টি সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এটি দ্বিতীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের কনভেনশন। এর আগে স্বৈরাচার এরশাদের পতন আন্দোলনের সময়ে প্রথম কনভেনশন হয়েছিল।

কনভেনশনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির আসম আবদুর রব বলেন, ‘অনেকে আল্টিমেটাম দিচ্ছে যে আমাদেরকে রাস্তায় নামতে দেবেন না। আমরা কিন্তু এখনো আল্টিমেটাম দিইনি। যখন দেব তখন পরিস্থিতি কী হবে, জানি না। তবে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। জনগণ ধরলে কেউ রক্ষা পাবেন না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই সরকার নড়বড় করছে। দেশে-বিদেশে কোথাও তারা জায়গা পাচ্ছে না। সবাই মিলে আমরা জোরছে একটা ধাক্কা দিলে এই সরকারের পতন হবে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আজ দেশের জনগণের পেটে ভাত নাই। আর আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বাড়ি ভার্জিনিয়াতে। ৩০ একর জমি নিয়ে গলফ মাঠ দিয়ে সেই বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বোঝেন এই লুটেরা সরকারের নমুনা।’

শ্রমিক-কর্মচারী কনভেনশন আয়োজন কমিটির সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার ও মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় কনভেনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণফ্রন্টের সভাপতি টিপু বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূর, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম লালা, জাতীয় শ্রমিক জোটের মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের আশরাফ আলী আকন্দ, শ্রমিক ফেডারেশনের শাহ মো. আবু জাফর, বিএনপির মজিবুর রহমান সারোয়ার, আবদুস সালাম আজাদ, হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ-উজ জামান মোল্লা, আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, সুমন ভূঁইয়া, শাহ আলম রাজা, সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের এএম ফয়েজ হোসেন বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া শ্রমিক ফেডারেশন, সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ, চতুর্থ শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক জোট, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতি, বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতি, শ্রমিক আন্দোলন, শ্রমিক কল্যাণ মজলিস, জাতীয় শ্রমিক পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলন, ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা ও মিশুক চালক ইউনিয়ন, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন, প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ, শ্রমজীবী পরিষদ, ভাসানী শ্রমিক পরিষদ প্রভৃতি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।

ঠিকানা/এনআই

কমেন্ট বক্স