দুর্নীতি ছাড়া বিএনপি দেশকে কিছুই দিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির টাইমস স্কয়ারে অভিজাত ম্যারিয়ট মার্কি হোটেলে নিউইয়র্ক মহানগর আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি কী আসলেই নির্বাচন চায়? তাদের নেতা কে? এ সময় তিনি বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চুরি করা টাকা এখন আন্দোলনে খরচ করছে তারা। ক্ষমতার মধু খেতে পারছে না বিএনপি, সেজন্যই দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি বলে সমালোচনা করছে দলটি। আসলে দেশে ভোট হোক, এটাই তারা চায় না। দেশবিরোধী মিথ্যা-অপপ্রচার ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করা উচিত, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা উচিত।
বিরোধীদলের আন্দোলনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপির আন্দোলনে বাধা দিচ্ছে না সরকার। চুরি করা টাকা এখন আন্দোলনে খরচ করছে দলটি। এই চোরদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
নিউইয়র্ক : মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যরা।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এমন লাফালাফি থাকবে। দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। বাংলাদেশের মানুষ উপলব্ধি করে যে নৌকায় ভোট দিয়ে যেমন স্বাধীনতা পেয়েছে। তেমনি দেশও এগিয়ে গেছে। নৌকা মার্কায় ভোট চাই।
তিনি বলেন, বিশ্বনেতারা যখন বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির স্বীকৃতি দিচ্ছে তখন কয়েকটা চোর-চোট্টা কী বললো তাতে কান দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই আমাদের।
খালেদা জিয়ার দুর্নীতি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশ থেকে টাকা এলো এতিমের নামে। সেই টাকা খালেদা জিয়া মেরে দিলো। তারেক জিয়া রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়ে যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাড়াটে লোক দিয়ে তারেক জিয়া এখনও আমার বিরুদ্ধে ডেমোনেস্ট্রেশন করে যাচ্ছে। আমার প্রশ্ন এতো টাকা তারা কোথায় পায়?
তিনি বলেন, এরা গণতন্ত্র-নির্বাচন কোনোটাতেই বিশ্বাস করে না, তাদের মুখে ভোট ও গণতন্ত্রের কথা শোনা মানেই পাগলের প্রলাপ শোনা। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাটা তাদের পছন্দ হয় না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশে কারো মন্দায় ভোগান্তি হয় না।
নিউইয়র্ক : সমবেতদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করুন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তাদের কাছে তুলে ধরবেন। কেননা, তাদের কাছে অভিযোগ করেই একটা গোষ্ঠী দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং নিউইয়র্ক মহানগর শাখার সভাপতি ইমদাদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান মিঞা ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুর রহমান প্রমুখ।
নিউইয়র্ক : নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সুধীর একাংশ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সার্বিক সমন্বয় করেন। তাকে সহযোগিতা করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নূরুল আমীন বাবু. দুরুদ মিয়া রনেল, সাইকুল ইসলাম প্রমুখ।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল নেতা-কর্মী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সংবর্ধনায় যোগ দেন।