Thikana News
২৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

নাগোর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার আর্মেনীয় 

নাগোর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার আর্মেনীয় 



 
বিতর্কিত নাগোর্নো-কারাবাখ এলাকা গত সপ্তাহে আজারবাইজানের দখলে যায়। এরপর থেকেই হাজার হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ানরা ওই এলাকা ছাড়তে শুরু করেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজারের মতো বাসিন্দা ওই ছিটমহলটি ছেড়ে আর্মেনিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে। এলাকাটিতে এক লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ানের বাস ছিল।

আর্মেনিয়ার সরকার যুদ্ধের কারণে বাস্তুহারা মানুষকে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর থেকেই তারা এলাকা ছাড়তে শুরু করে। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ওই এলাকায় 'জাতিগত নিধন' চলছে। 

নাগোর্নো-কারাবাখ দক্ষিণ ককেসাস এলাকার একটি পাহাড়ি এলাকা। এটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তবে তিন দশক ধরে এটি জাতিগত আর্মেনিয়ানরা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এই ছিটমহলের প্রতি আর্মেনিয়া এবং তাদের মিত্র রাশিয়ার সমর্থন ছিল। বছরের পর বছর ধরে সেখানে শত শত রুশ সেনা ছিল।

গত সপ্তাহে আজারবাইজানের সেনারা আক্রমণ চালালে রাশিয়ার পাঁচ জন শান্তিরক্ষী এবং ২০০ জন জাতিগত আর্মেনিয়ান এবং কয়েক ডজন আজারবানি সেনা নিহত হয়। আর্মেনয়িয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে সেখানে এটাই চলছে এবং এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক, কারণ এ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানানোর চেষ্টা করছি।

আজারবাইজান বলেছে, তারা জাতিগত আর্মেনিয়ানদেরকে সমান নাগরিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী গেগহাম স্টিপানিয়ান এক্স-এর (সাবেক টুইটার) মাধ্যমে এক পোস্টে জানিয়েছেন, কারাবাখের প্রধান শহর স্টেপানাকার্টের একটি পেট্রোল স্টেশনে বিস্ফোরণে ২০০ বেশি মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। তবে বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।

মানুষের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে আর্মেনিয়ার সীমান্তে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। গত রোববার আর্মেনিয়ার গোরিস শহরে যেসব শরণার্থীরা এসে আশ্রয় নিয়েছেন এমন কয়েক জনের সাথে কথা বলেছে বিবিসি। এই শহরটি কারাবাখের সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।

এক ব্যক্তি বলেন, আমি আমার সারা জীবন আমার মাতৃভূমির প্রতি উৎসর্গ করেছি। এভাবে পালিয়ে আসার চেয়ে তারা যদি আমাকে মেরে ফেলতো তাহলে বেশি ভাল হতো। ভেরোনিকা নামে এক নারী বিবিসি-কে বলেন, দ্বিতীয় বারের মতো শরণার্থী হয়েছেন তিনি। ২০২০ সালের লড়াইয়ের সময় প্রথমবার শরণার্থীতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। 

টিটিয়ানা ওগানেসিয়ান, যিনি নিজে একজন চিকিৎসক এবং একই সঙ্গে চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবী একটি ফাউন্ডেশনের প্রধানও, তিনি এখন গোরিস শহরে আসা শরণার্থীদের সহায়তা দিচ্ছেন। তিনি বিবিসিকে বলেন, যারা চিকিৎসকদের কাছে আসছেন তাদের বেশিরভাগই ক্লান্ত, অপুষ্টিতে আক্রান্ত এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন।

গত রোববার আর্মেনিয়ার সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, শত শত শরণার্থীদের এরইমধ্যে সরকারি খরচে বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু মানুষের এই স্রোতকে কিভাবে সামাল দেওয়া হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কোন পরিকল্পনা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী পাশিনিয়ান গত সপ্তাহে এক ঘোষণায় বলেছিলেন, ৪০ হাজার শরণার্থীকে দেখাশোনা করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স