জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে এসে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কে আপনাকে স্বাগত। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যেখানে আমাদের প্রিয় স্বদেশ আজ সর্বমহলে প্রশংসিত। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে অভিবাদন।
জাতিসংঘের এবারের ৭৮তম অধিবেশন জাতিসংঘের দিক থেকে যেমনি, তেমনি বাংলাদেশ ও প্রবাসীদের দিক থেকেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের জন্য এই অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ, কেননা বিশ্বে এখনো নানা দিকে সামরিক উত্তেজনা। বিশ্ব পরিবেশ নিয়ে দুনিয়াজুড়ে দুশ্চিন্তা, ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা। জ্বালানি সংকট, কোথাও জলমগ্নতা, কোথাও মরুর আশঙ্কা, কোথাও উষ্ণতা বৃদ্ধি, কোথাও যুদ্ধ। পৃথিবী টালমাটাল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে। সেই যুদ্ধের অভিঘাতে বিশ্বমানবতার বিপর্যয়, দেশে দেশে মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। এ যুদ্ধ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। অসম অস্ত্র প্রতিযোগিতা। বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আবার ঠান্ডা লড়াই শুরুর ভয়াবহ আশঙ্কা। এসব নিয়ে জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়ক, সরকারপ্রধানদের মধ্যে আলোচনা। সেসব সংকট নিরসনে জাতিসংঘের ভূমিকা পালন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যও এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার শেষ সুযোগ তাঁর। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চাইবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এবার বাইরের শক্তিও খুব বেশি তৎপরতা দেখাচ্ছে। বাংলাদেশকে ঘিরে বাইরের শক্তিবর্গের নানামুখী স্বার্থের হিসাব-নিকাশ রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের মানবাধিকার, জঙ্গিবাদ, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি, গণতন্ত্র, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বহির্বিশ্বে অনেক প্রশ্ন, জানার অনেক কৌতূহল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয় সেসব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর নিয়েই আসবেন জাতিসংঘের এই অধিবেশনে।
প্রবাসীদেরও অনেক চাওয়া-পাওয়ার থাকবে। দীর্ঘদিনের অনেক না পাওয়ার উত্তরও প্রবাসী বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাওয়ার প্রত্যাশা তাদের। ভোটাধিকার, জাতীয় পরিচয়পত্র লাভ, বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট পুনরায় চালু করার প্রত্যাশা এবং প্রবাস থেকে পাসপোর্ট লাভের জটিলতা নিরসনের দাবিও রয়েছে প্রবাসীদের।
২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন এবং প্রবাসীদের সংবর্ধনায় ভাষণ দেবেন। সেখানেও অনেক কিছুর জবাব পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাঁর দীর্ঘ জীবন ও স্বাস্থ্য কামনা করি। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর সফল ও সার্থক হোক।