নন্দিনী মুস্তাফী
এই শহর আর আমার নেই,
এই আকাশটাও নয় আমার।
এত্ত সুগন্ধি রঙিন বাহারি-
ফুলের আন্দোলিত ছন্দ,
ক্রমশ বড় বেমানান হয়ে যায়
বিবর্ণ সব স্বপ্নের ভিড়ে।
এই চিরচেনা পথের পাঁচালি,
সেও আমায় যাবে ভুলে!
কফিশপের ধোঁয়াশা আঁধার;
কলম্বাসের পার্ক, হাডসনের হিম সাহিল
ইউনিয়ন স্কয়ারের চত্বরের ধূসর সন্ধ্যা;
এত্ত শত আত্মার আত্মীয় আমার
তারাও হারাবে কালের পরিক্রমায়,
যেভাবে হারায় অনন্তকাল।
যেভাবে হারিয়েছে কালিদাসের
বুকের না-বলা ব্যথার চিঠি নিয়ে
উত্তরীয় মেঘের ভেলায় করে!
নয়ন হয়ে যায় কেবল,
অজান্তেই নোনার সাগর
আমি যেন আজ কেবলই
তোমার শহরের অযাচিত মুসাফির।
চলে যাচ্ছি তোমাকে ছেড়ে
দেখব না আর নিয়নের আলোয়
মায়াবী আঁধারির খেলায়
লাল নীল আলোর ঝলকানি,
সারি সারি এলোমেলো যান্ত্রিক যানের
প্রাণহীন পিচের সড়ক
ভুলে যাবে আমায় নির্মম শূন্যতায়।
তবু ভালোবাসি তোমার আপাদমস্তক,
ম্রিয়মাণ এই জীবনের প্রতিযোগিতায়
আমাকে করেছিলে তেজস্বিনী,
আমায় জড়িয়েছ বুকের অলিন্দে,
মুক্ত করো না এই বন্ধন থেকে।