Thikana News
১৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪


 

শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের আনন্দ ও বেদনার কথা

শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের আনন্দ ও বেদনার কথা


১৪ দল ও মহাজোটের শরিক বেশ কয়েকটি দলের শীর্ষ ও শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতা তাদের পছন্দের নির্বাচনী এলাকায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে  শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের  সরকারি দল ও জোটের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। তবে তাদের বিজয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ থেকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা দেওয়া হবে।
১৪ দল, মহাজোটের শরিকদের শীর্ষস্থানীয় নেতারা তাদের বর্তমান আসন ধরে রাখার পক্ষে। এসব আসনে কয়েকবার নির্বাচন করার মাধ্যমে তারা স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে পরিচিতি লাভ করেছেন। এলাকার সমস্যাসমূহ সম্পর্কেও তারা কমবেশি অবহিত। দলীয় সাংগঠনিক একটা অবস্থানও গড়ে তুলেছেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতা এসব আসনে প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। কোনো কোনো সম্ভাব্য প্রার্থীর ব্যাপারে শীর্ষ পর্যায় থেকে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে। তারা নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগও বাড়িয়েছেন। আবার কোনো কোনো নির্বাচনী এলাকায় ১৪ দলের শরিক দলের কোনো কোনো শীর্ষ ও শীর্ষস্থানীয় নেতার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা, অসন্তোষ রয়েছে। শীর্ষ পর্যায়ের হস্তক্ষেপেই কেবল এ অবস্থার অবসান হতে পারে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন রাজধানীর পল্টন, সেগুনবাগিচা ও মতিঝিল এলাকা থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত। পরপর তিনবার এই আসনে বিজয়ী হওয়ার ফলে এখানকার ভোটার সাধারণের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গেও সখ্য গড়ে উঠেছে। কিন্তু আগামী নির্বাচনে এই আসনে প্রার্থী হতে চান আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতা। কামাল উদ্দিন চৌধুরী নামে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা এই আসনে দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছেন। পোস্টারে ছেয়ে দিয়েছেন গোটা এলাকা। প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াও এখান থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী। চাঁদপুরে তার নির্বাচনী এলাকা হলেও সেখান থেকে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম। সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। বিএনপি শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে এলে মিলন এখান থেকে প্রার্থী হবেন। তাকে বিশেষ এক বিবেচনায় ছাড় দেওয়া হতে পারে। বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচন যদি না করে, তাহলেও স্বতন্ত্রভাবে বা জাতীয়তাবাদী আন্দোলন বা তৃণমূল বিএনপির ব্যানারে মিলনসহ বিএনপির নির্বাচনমুখী নেতারা যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিকল্প পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছেন।
ঢাকার রমনা-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ফজলে শামস পরশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে পারেন। অথবা তেজগাঁও-মগবাজার এলাকা থেকেও তার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আসনে দলীয় এমপি হচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। পরশ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত শেখ ফজলুল হক মণির জ্যেষ্ঠ পুত্র। তেজগাঁও শিল্প এলাকায় তিনি শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত ছিলেন। পিতার এই এলাকা থেকে নির্বাচন করতে পরশ নিজেও আগ্রহী। শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-রমনা এলাকা থেকেও তাকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর যশোরের আসনে পরিবর্তন আনা হবে না। যদিও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এখানে দলীয় লোক চান। আগ্রহী প্রার্থীও রয়েছেন। সাধারণ সম্পাদকসহ জাসদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের তেমন একটা ছাড় পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দারÑজাতীয় রাজনীতিতে চরম বিড়ম্বনাময় অবস্থায় রয়েছেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সভাপতি কমরেড দিলীপ বড়ুয়া। তার কোনো নির্বাচনী এলাকা নেই। যদিও জন্মসূত্রে তিনি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের অধিবাসী। এখানে তার দলের কার্যকর কোনো কমিটি নেই। তবে নামেমাত্র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য নেতাদের সমন্বয়ে কমিটি রয়েছে। আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-সংগঠকদের মিরসরাইয়ের নিজ বাড়িতে আমন্ত্রণ করে তাদের মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়িত করেন। তার এই আচরণকে খুবই অস্বাভাবিক মনে করছেন স্থানীয় নেতারা।
দিলীপ বড়ুয়া এই আসন থেকে জোটের মনোনয়ন চাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী ও ১৪ দলীয় জোটপ্রধান শেখ হাসিনার কাছে সরাসরি এই আবেদন করেন তিনি। মি. বড়ুয়ার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা দিলীপ বড়ুয়াকে নিজ এলাকার সাধারণ মানুষ, ভোটার এবং আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ, দ্রুত সম্পর্কোন্নয়ন করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই দিলীপ বড়ুয়া নির্বাচনী এলাকায় তৎপরতা বাড়িয়েছেন।
জেপি সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবার শারীরিক কারণে নির্বাচন করতে পারছেন না। তার স্ত্রী বা কন্যাকে তিনি প্রার্থী করতে চান। নির্বাচনী এলাকায় তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। গোপালগঞ্জে জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলামও মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। কিন্তু শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা এর বিপক্ষে।
এই দলগুলোসহ ১৪ দলের শরিক প্রতিনিধিত্বশীল কোনো দলকেই বঞ্চিত করা হবে না। সৎ, যোগ্য, জনপ্রিয় হিসেবে এলাকায় পরিচিতি রয়েছে, এমন নেতাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে বলেই জানা যায়। ছোট ছোট দলগুলোর মনোনীত প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে। তবে বর্তমান এমপিদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাদের তালিকায় রয়েছেন। বিভিন্ন সংস্থার মাঠপর্যায়ের জরিপের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। সংশ্লিষ্ট দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে কোনো অবস্থাতেই আসন যাতে হাতছাড়া না হয়, সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে ধরে নিয়েই প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে। বিএনপি নির্বাচনে না এলেও এলাকার ভোটার সাধারণের সঙ্গে সম্পর্কহীন, অসৎ, দুর্নীতিবাজ, মাস্তান, সন্ত্রাসীদের লালনকারী, কালোটাকার মালিক, প্রশাসনকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে নিরীহ মানুষের ক্ষতি সাধনকারীরা যাতে মনোনয়ন না পান, সে ব্যাপারে শীর্ষ পর্যায় ও নীতিনির্ধারকেরা কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। ১৪ দল ও মহাজোটের শরিক দলগুলোকেও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।










 

কমেন্ট বক্স