নির্বাচন কমিশন (ইসি) যদি শাপলা প্রতীক না দেয় তাহলে রাস্তায় নামবে এনসিপি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন আইন প্রণেতা, আইনজ্ঞ ও আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, শাপলাকে নির্বাচনি প্রতীক দিতে কোনো আইনগত বাধা নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন (ইসি) শাপলা প্রতীক দিচ্ছে না। তাদের যদি এটুকু স্বাধীনতা না থাকে, তাহলে নির্বাচনে তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারবো না। শাপলা প্রতীক পাবার জন্য যদি এনসিপিকে রাজপথে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেতে হয়, তাহলে একইসঙ্গে এনসিপি ওই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনেরও আন্দোলন করবে। আজ ২৬ অক্টোবর (রবিবার) দুপুর পৌনে ২টায় কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কবে হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা না থাকায়, শুধুমাত্র নির্বাচনের কথা বিবেচনা না নিয়ে এনসিপি মেরদণ্ড সোজা রেখে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি। যেদিন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা তৈরি হবে, সেদিনই জনগণের পক্ষ থেকে এনসিপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। আওয়ামী লীগ প্রশ্নে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের প্রশ্নে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, মৌলিক সংস্কার এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিএনপি ও জামায়াত এককভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে এনসিপির অংশগ্রহণ ও সহায়তা আবশ্যক।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জাতীয় সংগীত ও জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে শুরু হয় এনসিপির সমন্বয় সভা। কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব আহনাফ সাঈদ খানের সভাপতিত্বে জেলা সংগঠক ইকরাম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথি ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দারসহ কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির, দিদার শাহ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সারজিস আলম আরও বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য এনসিপিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় সফর করছি। আশা করি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিটি জেলায় কমিটি হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে সব উপজেলায়ও কমিটি হয়ে যাবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রশাসনের সব স্তরে বড় দলগুলোর লোকজন বসে আছেন। তারা সুবিধা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দলের লোক পরিচয় দিতে চান। আমি অমুক দলের ওসি, অমুক দলের এসপি, এরকম পরিচয় দিতে চান। এদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের আন্দোলনে গুলি করে যারা হত্যা করেছিল, তারা বিভিন্ন দলের সঙ্গে আঁতাত করে। প্রশাসন বা বিচার বিভাগে থাকা কর্মকর্তাদের সাথে আঁতাত করে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসছে। হাইকোর্টে একের পর এক জামিন হয়ে যাচ্ছে। কারণ, হাইকোর্টে এখনও আওয়ামী লীগের দোসররা বিচারকের আসনে বসে আছেন। বিভিন্ন আদালতে আইনজীবী থেকে বিচারকরা এই হত্যা মামলার আসামিদের জামিন দিয়ে দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।
সারজিস বলেন, জুলাই আন্দোলনের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, তাদের আমাদের কোনো সংগঠনে নেব না। শুধু তাই নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এনসিপি কেবল কয়েকটি আসনের জন্য কোনো অ্যালায়েন্সে যাবে না। কোনো দল যদি জুলাইয়ের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে কমিটেড থাকে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ দোসরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কমিটেড থাকে, তাহলেই তাদের সঙ্গে অ্যালায়েন্সে যাবে। এনসিপির সমন্বয় সভা উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিসহ আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
ঠিকানা/এএস

ঠিকানা অনলাইন


