Thikana News
২০ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেয়ার ব্যাখ্যা দিলেন নীলা ইসরাফিল

এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেয়ার ব্যাখ্যা দিলেন নীলা ইসরাফিল



 
শাপলা প্রতীক বরাদ্দের দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় প্রতীক অন্তর্ভুক্তির জন্য সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের দাবিও জানিয়েছে দলটি।

১৯ অক্টোবর (রবিবার) এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদের কাছে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

এদিকে, এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন দলটির সাবেক নেত্রী ও অভিনেত্রী নীলা ইসরাফিল।

তিনি বলেন, দলীয় ভাঙন, অভ্যন্তরীণ জটিলতা এবং প্রতীকের মালিকানা নিয়ে বিভ্রান্তির কারণে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি তার ফেসবুকে লিখেছেন, সম্প্রতি NCP-এর নাহিদ ইসলাম প্রশ্ন তুলেছেন ‘শাপলা প্রতীক কেন তাদের দেওয়া যাবে না?’ তিনি আইনি ব্যাখ্যা চেয়েছেন। আমি মনে করি, প্রশ্নটা করার অধিকার যেমন তার আছে, তেমনি আইনের ব্যাখ্যাটা পরিষ্কার করে বলা আমাদেরও দায়িত্ব। যদিও আমি আইনের ছাত্রী নই, তবু যেটুকুন বুঝি সেটুকুন জায়গা থেকে বলা।  প্রথমেই স্পষ্ট করা দরকার, ‘শাপলা’ শুধু একটা ফুল না, এটা বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক।

সংবিধানের দ্বিতীয় তফসিলে (Second Schedule) স্পষ্টভাবে বর্ণনা আছে, জাতীয় প্রতীকে শাপলা ফুলকে কেন্দ্র করে ধান, পাট ও জ্যোতির্ময় সূর্য ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ ‘শাপলা’ জাতীয় প্রতীকের কেন্দ্রবিন্দু।

এনসিপির সাবেক এই নেত্রী বলেন,  Election Symbols (Allocation and Registration) Order, 1972 অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্ব আছে প্রতীকের তালিকা নির্ধারণ ও অনুমোদনের ক্ষেত্রে। সেই আইনেই বলা হয়েছে, কোনো প্রতীক যদি জাতীয় প্রতীক, ধর্মীয় চিহ্ন, বা রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেটি রাজনৈতিক দলকে দেওয়া যাবে না।

কারণ, এতে জাতীয় প্রতীকের অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকে। এই আইনি সীমারেখা মানেই হচ্ছে  ‘শাপলা’ প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না, কারণ এটি রাষ্ট্রীয় পরিচয়ের অংশ।

ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নীলা বলেন, অন্যদিকে, যারা যুক্তি দেন ‘ধানের শীষ’ জাতীয় উপাদান, তাদের জন্যও বলা জরুরি, ‘ধানের শীষ’ কোনো রাষ্ট্রীয় প্রতীক নয়। এটি জাতীয় ফুল বা প্রতীকের অংশ নয়, বরং কৃষিভিত্তিক সমাজের চিহ্নমাত্র। অর্থাৎ ‘শাপলা’ জাতীয় প্রতীকের অংশ ‘ধানের শীষ’ নয়।

এই পার্থক্যটাই আইনগতভাবে বিষয়টিকে নির্ধারণ করে দেয়। তাহলে এখন প্রশ্ন থাকে একটি দল কি চায়, রাষ্ট্রীয় প্রতীককে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের নিরপেক্ষতার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে? শাপলা মানে বাংলাদেশ, কিন্তু বাংলাদেশ কারো দলের নয়। একটি প্রতীকের পবিত্রতা তখনই টিকে থাকে, যখন সেটি রাষ্ট্রের বাইরে রাজনীতিতে ব্যবহৃত না হয়।

শাপলা রাষ্ট্রের প্রতীক  দলীয় নয় উল্লেখ করে নীলা ইসরাফিল আরো বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, যারা সত্যিকারের রাজনীতি করেন, তারা জানেন, প্রতীক মানে শুধু ভোট নয়, এটি বিশ্বাসের চিহ্ন। আর ‘শাপলা’র বিশ্বাসটা সবার, কোনো দলের নয়। তাই আইন যেমন বলছে না, নৈতিকতাও বলছে এই প্রতীক কাউকে দেওয়া যাবে না। শাপলা রাষ্ট্রের প্রতীক দলীয় প্রতীক নয়।’

নীলা লিখেছেন, ‘আইন, সংবিধান আর রাষ্ট্রের মর্যাদা, সবই একই কথা বলছে। আমরা যদি রাষ্ট্রের প্রতীককে দলীয় স্বার্থে ভাগ করি, তাহলে রাজনীতির মানে হারিয়ে যাবে। আমরা যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তারা রাষ্ট্রকে দলীয়করণে নয়, রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র হিসেবেই দেখতে চাই।’

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স