অস্টিওপোরোসিস একটি জটিল রোগ। কোনো ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। এমনকি সময়মতো কিৎসা না হলে অল্পতেই হাড়ে চিড় ধরে। এমনকী হাড় ভেঙে যেতেও পারে। এই রোগে সাধারণত নারীরা বেশি আক্রান্ত হন, তবে বর্তমানে পুরুষের মধ্যেও এর প্রবণতা বাড়ছে। তাই নারী বা পুরুষ, সকলেরই এই রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি—এই পরামর্শই দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। হাড় ভালো রাখতে চাইলে চিকিৎসকের কিছু পরামর্শ মেনে চলা জরুরি। এমন কিছু নিয়ম সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক। এগুলো মানলেই আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রসস্থ হবে।
শরীর চর্চা বাধ্যতামূলক
বিশেষজ্ঞদের মতে, যত বেশি শুয়ে বসে দিন কাটাবেন, হাড় ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কা ততটাই বাড়বে। তাই আজ থেকেই অলসতা ত্যাগ করুন। প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট জিমে গিয়ে শরীর চর্চা করুন। আর জিমে যেতে না পারলে বাড়িতেই পুশআপ, সিটআপ, প্ল্যাংক ও স্কোয়াটের মতো ব্যায়ামগুলো করুন। এতেও উপকার মিলবে। এ ছাড়া দিনে অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত গতিতে হাঁটার অভ্যাস করুন।
শরীরে রোদ লাগান
অধিকাংশ লোকই ইদানিং শরীরে রোদ লাগান না। এ কারণে অনেকের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি হয় না। যার ফলে হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়ে যায়। শরীরে এই ভিটামিনের অভাব হলে হাড়ের ভেতরে ক্যালসিয়াম প্রবেশ করতে পারে না। সেই কারণে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টার মধ্যে যেকোনো সময় ১০ থেকে ১৫ মিনিট শরীরে রোদ লাগান। তাতেই উপকার মিলবে।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান
হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে ডায়েটে রাখুন দুধ, ছানা, দই ও পনিরের মতো দুগ্ধজাত কিছু খাবার। কারণ এসব খাবারে রয়েছে ক্যালসিয়ামের ভাণ্ডার। এই খনিজ হাড়ের জোর বাড়ায়। এ ছাড়াও নিয়মিত সবুজ শাক খান। কারণ, তাতে দেহে ভিটামিন কে-এর ঘাটতি পূরণ হবে। এই ভিটামিনও হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। যার ফলে অনায়াসে অস্টিওপোরোসিসের রোগের ফাঁদ থেকে এড়িয়ে চলা যায়।
ধূমপান, মদ্যপান ত্যাগ করুন
নেশায় জড়িয়ে পড়া বা মাদকাসক্তি আসলে একটি ব্যাধি। এটি মানুষকে সর্বনাশ করে। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে। তাতে শরীরের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব। এমনকী বাড়বে হাড়ের জোর।
নিয়মিত পরিক্ষা করুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স ৪০ পেরোলে প্রতি বছর নিয়ম করে ডেক্সা স্ক্যান করতে হবে। এই স্ক্যানের মাধ্যমেই হাড়ের ক্ষয় সহজে ধরা পড়ে। তারপর এটির চিকিৎসা শুরু করা যায়। এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস, প্রেশার ও থাইরয়েডের মতো রোগগুলোকেও নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। অন্যথায় এই ক্রনিক সমস্যাগুলোর জন্যও হাড়ের সমস্যা বাড়তে পারে। এই কয়েকটি নিয়ম মানলেই সুস্থ থাকা সম্ভব।
ঠিকানা/এসআর