কাতার ও সৌদি আরব কাবুল ও ইসলামাবাদকে সংযম প্রদর্শন এবং সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছে। দুই দেশ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নেওয়া এই উদ্যোগের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে। আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উভয় পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি এবং সংযমকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং এমনভাবে মতপার্থক্য সমাধানের চেষ্টা করতে হবে, যাতে উত্তেজনা হ্রাস পায় এবং পরিস্থিতির আরও অবনতি রোধ করা যায়—যার মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জন সম্ভব।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে জানায়, ইরান তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং আফগানিস্তান ও পাকিস্তান—এই দুই প্রতিবেশী ও মুসলিম দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে যেকোনো সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ কারিবুল্লাহ সাদাত বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধের ধারাবাহিকতা সকল দেশের জন্য ক্ষতিকর। সমাধান একমাত্র সম্ভব পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সমঝোতার মাধ্যমে—আফগান দূতাবাস ও পাকিস্তানি দূতাবাসের মাধ্যমে।
তালেবানের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, কাতার ও সৌদি আরবের অনুরোধে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ স্থগিত করা হয়েছে। তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পাকিস্তান যদি আবার কোনো হামলা চালায়, আফগানিস্তান তার উপযুক্ত জবাব দেবে।
মুখপাত্র বলেন, কাতার ও সৌদি আরব যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানায় এবং আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুদ্ধ বন্ধ করেছে। তবে আজ সকালে আমাদের কাছে পাকিস্তানের হামলার খবর এসেছে। যদি এই হামলা অব্যাহত থাকে, আফগানিস্তান তার ভূখণ্ড রক্ষার অধিকার সংরক্ষণ করে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেন, তার দেশ জাতীয় স্বার্থ ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ভারতের সহায়তায় খারেজি সন্ত্রাসীরা আফগান অন্তর্বর্তী সরকারের ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে—এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে প্রমাণিত একটি বাস্তবতা।
একই সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি দাবি করেন, ইসলামিক আমিরাত বাহিনীর দ্বারা পাকিস্তানি ভূখণ্ডে গুলি চালানো আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি, যিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন; তিনি বলেন, আফগানিস্তানের একটি বৈশিষ্ট্য হলো—ভেতরের মতভেদ সত্ত্বেও যদি কোনো বিদেশি শক্তি হস্তক্ষেপ করে, তখন গোটা জাতি, ওলামা ও নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
ঠিকানা/এনআই