Thikana News
১৭ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

নোবেল শান্তি পুরস্কার : ট্রাম্পকে নিয়ে কমিটির স্পষ্ট বার্তা

নোবেল শান্তি পুরস্কার : ট্রাম্পকে নিয়ে কমিটির স্পষ্ট বার্তা ছবি : সংগৃহীত



 
শান্তির জন্য এ বছর নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন না সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প—এ তথ্য প্রায় নিশ্চিত। তবে পুরস্কার না পেলে তিনি কী প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন, সেটি নিয়েই এবার উদ্বেগে রয়েছে নরওয়ে নরওয়েজিয়ান নোবেল।

নরওয়ের স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ১১টায় (০৯০০ জিএমটি) বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে নোবেল কমিটি। তার আগেই দেশটির সোশালিস্ট লেফট পার্টির বৈদেশিক নীতির মুখপাত্র সতর্ক করে বলেছেন, ‘ট্রাম্প যেকোনো কিছু করতে পারেন, আমাদের সব কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

বিশ্বজুড়ে চলমান সংঘাতের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে গবেষকদের মধ্যেও। সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘাতের সংখ্যা ছিল রেকর্ড পরিমাণে বেশি।

এর মধ্যেই ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি আটটি বড় সংঘাতের মীমাংসা করেছেন এবং এ কারণেই তিনি নোবেলের উপযুক্ত। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্তত এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার তার হাতে যাচ্ছে না। সুইডেনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পিটার ভ্যালেনস্টেইন বলেন, ‘না, ট্রাম্প এবার পাচ্ছেন না। তবে ভবিষ্যতে হয়তো...’

অসলো পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নিনা গ্রেগার জানান, গাজায় শান্তি আনার ট্রাম্পের উদ্যোগ থাকলেও তার বহু নীতিই আলফ্রেড নোবেলের উদ্দেশ্যের পরিপন্থি। নোবেল উইলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, জাতির ভ্রাতৃত্ব এবং নিরস্ত্রীকরণ উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে। গ্রেগার বলেন, ‘ট্রাম্পের নীতিগুলোর তালিকা লম্বা—আন্তর্জাতিক সংস্থা ও চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া, বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু, গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি, দেশে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন, মতপ্রকাশ ও একাডেমিক স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ—এসব নীতিই তার সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়েছে।’

নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ইয়োরগেন ওয়াতনে ফ্রিডনেস বলেছেন, ‘আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র দেখি—কারও কাজ ও অবদান বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, শান্তির জন্য প্রকৃত অর্জন।’

এবারের পুরস্কারের জন্য ৩৩৮ ব্যক্তি ও সংস্থাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তালিকা ৫০ বছর গোপন রাখা হয়। মনোনয়নের অধিকার রয়েছে সংসদ সদস্য, মন্ত্রিসভার সদস্য, নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আগের বিজয়ীদের।

২০২৪ সালে শান্তি পুরস্কার পেয়েছিল জাপানের পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সংগঠন নিহোন হিদানকিও।

এবার স্পষ্ট কোনো ফেভারিট না থাকায় তালিকায় ঘুরছে বিভিন্ন নাম—যেমন, সুদানের যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের সহায়তায় কাজ করা ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুমস’, রুশ বিরোধী নেতা নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া এবং ইউরোপের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘অফিস ফর ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’।

নরওয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক হালভার্ড লেইরা মনে করেন, সম্প্রতি নোবেল কমিটি ক্ল্যাসিক ‘শান্তি’ ধারণায় ফিরেছে। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নারী অধিকারে গুরুত্ব দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সম্ভবত এবার পুরস্কার যাবে বিতর্কহীন কারও হাতে।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা যেখানে ট্রাম্পের মতো নেতৃত্বের চাপে, সেখানে জাতিসংঘ, আইসিজে, আইসিসি কিংবা ইউএনএইচসিআরের মতো প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দিয়ে কমিটি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, নোবেল কমিটি আবারও শান্তির ঐতিহ্যিক ধারায় ফিরছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মানবাধিকার, গণতন্ত্র, নারীর অধিকার ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কমিটি।

তবে অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, পুরস্কারের ঘোষণা সবসময় চমকপ্রদ হতে পারে। একেবারে অপ্রত্যাশিত কেউও হয়ে যেতে পারেন এবারের শান্তির দূত। সূত্র: এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান

ঠিকানা/এএস 

কমেন্ট বক্স