Thikana News
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
গ্রেফতারের পর জামিনে মুক্ত : নেয়া হয়েছে আঙুলের ছাপ ও মুখচ্ছবি

ট্রাম্পের নাটকীয় আত্মসমর্পণ

ট্রাম্পের নাটকীয় আত্মসমর্পণ


দিনভর নাটকীয়তা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আইন অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ম্যানহাটনের আদালতে হাজির করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুক্ষণ পর মুক্তিও পেয়েছেন ট্রাম্প। আদালতে শুনানিতে নিজের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগ অস্বীকার করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে সার্বিক প্রক্রিয়া শেষে তিনি আদালত চত্বর ছেড়ে যান। ট্রাম্পই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট যিনি ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হলেন। এদিকে মুক্তির পর নিউইয়র্কের ম্যানহাটন আদালত চত্বর ছেড়ে (বাকি অংশ ২৬ পাতায়)
ট্রাম্পের নাটকীয় আত্মসমর্পণি
ফরে গেছেন ফ্লোরিডার বাসভবন মার-এ লাগোতে। আদালত থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি ট্রাম্প। সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলেও তিনি এড়িয়ে যান। 
এর আগে ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার ম্যানহাটনের আদালতে পৌঁছার পর ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাঁকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর বিচারকের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় তাঁকে কিছুটা বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর আইনজীবীরা ছিলেন।
ট্রাম্প ফিফথ অ্যাভিনিউর ট্রাম্প টাওয়ার থেকে গাড়িবহর নিয়ে ম্যানহাটন ক্রিমিনাল কোর্ট ভবন এলাকায় যান। ওই এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেখানে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন।
আদালত ভবনে ঢোকার সময় সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন ট্রাম্প। তাঁর সমর্থনে ওই এলাকায় বিক্ষোভকারী ও তাঁর সমর্থকেরা জড়ো হয়েছেন। তাঁদের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখে পুলিশ। আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়। 
একাধিক সূত্র জানায়, আদালতে বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য ট্রাম্পের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও মুখচ্ছবি নেওয়া হয়। এরপর আদালতে তাঁকে অভিযোগের বিষয়ে জানানো হয়। ট্রাম্প আদালতে নিজেকে নির্দেষ দাবি করেন। 
এর আগে সকালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুঃখজনক এক দিন আজ।’ তাঁর এক ইমেইল বার্তার বিষয় ছিল, ‘গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আমার শেষ ই-মেইল।’ এতে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষায় জনগণকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করার জন্য ৩ এপ্রিল সোমবার ফ্লোরিডা থেকে নিউইয়র্কে পৌঁছান ট্রাম্প। আদালতে যে বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করবেন, তাঁকে ‘একবারেই দলবাজ’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ওই বিচারকের পরিবার ‘ট্রাম্পবিদ্বেষী হিসেবে সুপরিচিত’। 
ট্রাম্পকে নিয়ে গণমাধ্যমে আগ্রহ বরাবরই ছিল। তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বের তাবৎ সংবাদমাধ্যম ফলাও করে এ-সংক্রান্ত খবর প্রচার-প্রকাশ করে। ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে ভিড় করেন অসংখ্য সাংবাদিক।
ট্রাম্পের আদালতে আত্মসমর্পণের খবর সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত নিউইয়র্কের ‘এফটিভি’র সম্পাদক ফরিদ আলম ঠিকানাকে জানান, সাংবাদিক-পুলিশের ভিড়ে ট্রাম্প-সমর্থকদের ব্যানার হাতে বিক্ষোভ করতেও দেখা গেছে। ট্রাম্প সমর্থকদের অনেককে বলতে শোনা গেছে- ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ষড়যন্ত্রের অংশ। আগামী বছরের নির্বাচনে জিতে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে যাওয়া আটকাতেই তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ট্রাম্পকে নিয়ে গণমাধ্যমে আগ্রহ বরাবরই ছিল। তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বের তাবৎ সংবাদমাধ্যম ফলাও করে এ-সংক্রান্ত খবর প্রচার-প্রকাশ করছে। ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে ভিড় করেন অসংখ্য সাংবাদিক। সেখান থেকে ট্রাম্পের আদালতে পৌঁছানোর মুহূর্তের খবর সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে অনেক সংবাদমাধ্যমে। 
ফরিদ আলম জানান, যে ধরনের উত্তেজনার খবর শোনা যাচ্ছিল, বাস্তবে তার কিছু হয়নি। তবে একটি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র আইনের দেশ। ট্রাম্পই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম বিচারের মুখোমুখি হলেন। তিনি বলেন, সাংবাদিক হিসাবে অতীতের সব অজ্ঞিতাকে ছাপিয়ে গেছে ট্রাস্পের আত্মসমর্পণ। কর্মরত সাংবাদিকরা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলেন। সেই সঙ্গে নিজেকেও ভাগ্যবান মনে করেন সাংবাদিক ফরিদ আলম। 
এদিকে মূলধারার রাজনীতিক খোরশেদ খন্দকার এক বিবৃতিতে বলেছেন, রিপাবলিকান পার্টির নেতারা যাই বলুন না কেন- সত্যিকারের গণতন্ত্র এবং ন্যায়বিচার এখনও যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান। তিনি বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযুক্ত এবং তিনি ফৌজদারি আদালতের মুখোমুখি। এতে প্রমাণিত যে যুক্তরাষ্ট্রে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন।
এরপরও কি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন  করতে পারবেন ট্রাম্প?
বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, কোনো অভিযোগ বা ফৌজদারি অপরাধের পক্ষে রায় হলেও ট্রাম্প যদি চান তাহলে তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণা চালানো অব্যাহত রাখতে পারবেন। আর তিনি এরইমধ্যে আভাস দিয়েছেন যে, যা-ই হোক না কেন তিনি সামনে এগিয়ে যাবেন।
বাস্তবিকপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্রে এমন কোন আইন নেই যা একজন প্রার্থী, যিনি অপরাধে জড়িত থাকার কারণে দণ্ডিত হয়েছেন তাকে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো বা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন থেকে রুখবে। এমনকি কারাগারে থেকেও দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন- লাভের মধ্যে লাভ হতে পারে বিষয়টি ট্রাম্পের সমর্থকসংখ্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর বাইরে বিষয়টি আমেরিকান রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে আগে থেকেই বিদ্যমান তীক্ষè বিভাজনকে আরও গভীর করে তুলতে পারে।
 

কমেন্ট বক্স