বিদেশে যে মুহূর্তে সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে, বিভিন্ন লবিং ফার্ম অর্থ ঢালছে, সেই মুহূর্তে অর্থ সংকটে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। অবস্থা এমন হয়েছে যে লবিংয়ের জন্য অর্থ খরচ করা দূরে থাক, সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর মত অর্থ হাতে নেই সংগঠনটির। অথচ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অনেক নেতা গত প্রায় এক যুগে ‘আঙুল ফুলে কলা গাছ’ হয়েছেন, অর্থাৎ বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে গেছেন তারা। 
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছে বিভিন্ন লবিং ফার্ম। তারা সরকারের নানান ভুল সামনে তুলে এনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ সরকারের কতশত শুভাকাক্সক্ষী সক্রিয় ছিলেন, যারা ব্যাংক-বীমার মালিক হয়েছেন, সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো দায়িত্ব পালন করছেন, এমনকী সরকারের কাছ থেকে ব্যাপক সুবিধা নিয়েছেন, সেইসব সুবিধাভোগীদের এখন কোথাও দেখা মিলছে না। সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নতা-কর্মীদের উপস্থিতি চোখে পড়ে না। আগে বিভিন্ন দিবস ও দলীয় কর্মসূচি উপলক্ষে পার্টি হল ভাড়া করে সভা-সমাবেশের আয়োজন হতো। এখন তা ডাইভারসিটি প্লাজা নির্ভর হয়ে পড়েছে। আগে একটি সভা আহ্বান করলে শত শত নেতা-কর্মীর উপস্থিতি ঘটতো, এখন ৫০ জনেরও উপস্থিতি ঘটে না। 
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রথম সারির একজন নেতা ঠিকানাকে জানান, ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি দেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭৮ জনের কমিটি অনুমোদন দেন তিনি। দলের মধ্যে নেতৃত্বের কোন্দল থাকলেও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নেতা-কর্মীদের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি ঘটতো। এখন ২০ জনকে উপস্থিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অথট এই মুহূর্তে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ জরুরি। 
ওই নেতা জানান, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় কমিটির মাত্র ১৬জন উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা সফল করতে সাধারণ নেতা-কর্মীদের ফোন করে ওই সভায় আনা হয়েছিল। তারা না এলে ১৬ জন দিয়েই অনুষ্ঠান শেষ করতে হতো। 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন নেতা এ প্রতিবেদককে জানান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বহু নেতা বাংলাদেশে গিয়ে নানান সুবিধা নিয়েছেন। একাধিক নেতা ব্যাংক পেয়েছেন। কেউ পেয়েছেন বীমা কোম্পানি। কেউ কেউ সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ দলের আশীর্বাদ নিয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। কিন্তু দলের প্রয়োজনে এখন তারা দূরে দূরে থাকছেন। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকবে কী না এটা ভেবে তাদের অনেকে নিরাপদ অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের লোকদের চিহ্নিত করার সময় এসেছে। 
একটি সূত্র জানায়, আগামী মাসে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে আসবেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাঁচ তারকা মানের হোটেলের বলরুমে প্রতি বছর তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এজন্য বিপুল অর্থ খরচ হয়। প্রতি বছরে অনুষ্ঠানের খরচ খুব সহজেই উঠে যায়। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম হতে পারে। কারণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের দাতারা এবার দূরে দূরেই রয়েছেন। 
 
                           
                           
                            
                       
     
  
 

 ঠিকানা রিপোর্ট
 ঠিকানা রিপোর্ট  
                                
 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                 
                                                     
                                                
