দেশে আন্দোলন সফল হোক বা না হোক, নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটি বিএনপি তাদের আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। প্রায় প্রতিদিনই সভা-সমাবেশের মাধ্যমে চাঙ্গা রেখেছে নেতা-কর্মীদের। বিদেশে আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রভাগে রয়েছে তারা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আরো ১৫টি স্টেট কমিটির কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। দলের হাইকমান্ডেরও নজরে এসেছে এ বিষয়টি।
জানা গেছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরামর্শে প্রায় এক দশক আগে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের সাংগঠনিক দায়িত্ব পান লন্ডন প্রবাসী দলের কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দেওয়ার ব্যাপারে কোনো সুপারিশ না করে তিনি বিকল্প হিসাবে একে একে ১৮টি স্টেট কমিটি সুপারিশ করেন, যা পরবর্তীতে কেন্দ্রের অনুমোদন লাভ করে। সেই হিসাবে নিউইয়র্কসহ ১৬টি স্টেট এবং স্টেট কমিটির মর্যাদায় নিউইয়র্ক সিটি উত্তর ও দক্ষিণ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। সম্প্রতি ১৮টি স্টেটের ৩৪জন নেতা লন্ডনে এক মতবিনিময় সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একযোগে সাক্ষাত করেছেন। ওই মতবিনিময় সভায় স্টেট নেতৃবৃন্দ তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটি কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম প্রশংসিত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একাধিক নেতা এ প্রতিবেদককে জানান, স্টেট কমিটি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে চায় হাইকমান্ড। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই কেন্দ্রের। অথচ ১৮ স্টেটের নেতারা যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পর সাংগঠনিক কার্যক্রম যেখানে আরো জোরালো করার কথা, সেখানে নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটি ছাড়া আর কোনো স্টেটের কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র একজন নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অনেক নেতা আছেন যারা অভিজ্ঞ রাজনীতিক। দলের হাইকমান্ড এখন তাদের চেয়ে স্টেট কমিটির নেতাদের বেশী প্রাধান্য দিচ্ছেন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক বিশ্বের রাজধানী। এছাড়া এখানে রয়েছে জাতিসংঘের সদর দপ্তর। ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউজ ও স্টেট ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। ফলে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আর কোথাও আন্দোলন করে লাভ কী? অথচ সিনিয়র ও ত্যাগী নেতাদের নিষ্ক্রিয় রেখে নিউইয়র্কের বাইরে ১৫ স্টেট কমিটি হয়েছে, যা অর্থবহ নয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা জানান, নিউইয়র্ক স্টেট, মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ওয়াশিংটন ডিসি এবং ভার্জিনিয়া বিএনপি সক্রিয় রয়েছে। অন্যরা ততটা সক্রিয় নয়। অবস্থানগত কারণে তাদের কার্যক্রমও চোখে পড়ছে না। তবে তারাও কমবেশী সক্রিয় বলে দাবি করেন ওই নেতা।
জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ: বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২৮ আগস্ট সোমবার বিকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি।
আয়োজক সংগঠনের আহবায়ক মাওলানা অলিউল্লাহ আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সমাবেশের সঞ্চালনা করেন সদস্য-সচিব সাইদুর রহমান সাঈদ । সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের লুটেরা সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার গঠনের অভিপ্রায়ে অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের বিকল্প নেই। সেই দাবি আদায়ে জাতিসংঘের মাধ্যমে বিশ্ববিবেকের সহযোগিতা চাচ্ছি। প্রধান বক্তা
সমাবেশে নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো ছিলেন স্টেট বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নাসিম আহমেদ, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, আলহাজ শহীদুল ইসলাম সিকদার, নীরা রাব্বানী, বদরুল হক আজাদ, দেওয়ান কাউসার, আশরাফ হোসেন, হুমায়ুন কবীর, আরিফুর রহমান এবং আনিসুর রহমান , আহবায়ক কমিটির সদস্য জিয়াউর রহমান মিলন, কাইয়ুম, হাবিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান এবং ওয়াহেদ আলী মন্ডল, জাসাসের আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার সায়েম রহমান, সাবেক সদস্য সচিব কাওসার আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক দল ও জাসাস নেতৃবৃন্দ। মহিলা দলের কয়েকজন কর্মকর্তাও ছিলেন সমাবেশে।