মেয়র এরিক অ্যাডামস নিউইয়র্কের দায়িত্ব গ্রহণের পর নানা কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে চলেছেন। নিউইয়র্ক সিটিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার অঙ্গীকার পূরণে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
এরিক অ্যাডামসের ভাষ্য : নিউইয়র্ক সিটিতে তিন দিনের শ্রম দিবসের ছুটিতে বিভিন্ন ভাবে নতুন বছরের সূচনা হয়। আমরা অনেকেই গ্রীষ্মের শেষ দিনগুলো উপভোগ করছি, ভ্রমণ করছি বা বন্ধুবান্ধব ও পরিবার-পরিজনের সাথে সময় কাটাচ্ছি এবং আমাদের বাচ্চারা স্কুলে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
আমেরিকান লেবার মুভমেন্টের (শ্রম আন্দোলন) জন্য শিথিল ও রিচার্জ করার এই সুযোগ সম্ভব হয়েছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ। শ্রম আন্দোলনের সদস্যরা মৌলিক নিরাপত্তা সুরক্ষা থেকে শুরু করে ৪০-ঘণ্টা কর্ম সপ্তাহ করা পর্যন্ত কর্মক্ষেত্রের অনেক সুবিধার জন্য লড়াই করে যা আমরা এখন গ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। সেই যুগান্তকারী অর্জন এবং শ্রমিক ও তাদের অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া মানুষের জন্য শ্রম দিবস উদযাপন করা হয়।
নিউইয়র্ক সিটির ব্লু-কলার মেয়র হিসেবে আমি সারাজীবন শ্রমজীবী মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছি। একজন প্রাক্তন ইউনিয়ন সদস্য এবং একজন ইউনিয়ন সদস্যের পুত্র হিসেবে, আমি শ্রম সংগঠিত করার রূপান্তরকারী শক্তির অভিজ্ঞতা পেয়েছি। একটি ইউনিয়নের অংশ হওয়ায় আমার মা আমাদের পরিবারের জন্য এবং আমাদের মাথার উপর একটি ছাদ রাখতে পেরেছেন। তিনি একা তার ছয় সন্তানকে একটি বাড়িতে লালন-পালন করতে সক্ষম হয়েছেন।
এখন আমি সিটি হলে থাকায় আমাদের প্রশাসন চাকরির সুযোগ তৈরি, শ্রমিক সংগঠনগুলোকে সমর্থন এবং শ্রমজীবীরা যাতে তাদের প্রাপ্য মজুরি, অধিকার ও সুবিধাগুলো পায় তা নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করছে। আমরা সক্রিয়ভাবে ‘ওয়ার্কিং পিপলস অ্যাজেন্ডা’ প্রচারের জন্য কাজ করেছি। এই অ্যাজেন্ডা আবাসন, চাকরির প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাসহ যারা আমাদের শহরে প্রতিদিন সেবা দেয় তাদের সহায়তার জন্য বিনিয়োগের আহ্বান জানায়।
আমাদের প্রশাসন আমাদের মিউনিসিপ্যাল ইউনিয়নগুলোকে সমর্থন করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে এবং ইউনিফর্মড অফিসারস কোয়ালিশনের সাথে যুগান্তকারী চুক্তিতে পৌঁছেছে, এজন্য আমি গর্বিত। ইউনিফর্মড অফিসারস কোয়ালিশন হলো এনওয়াইপিডি, এফডিএনওয়াই, ডিএসএনওয়াই এবং ডিপার্টমেন্ট অব কারেকশনস-এর একটি গ্রুপ। এছাড়াও আমরা ইউনাইটেড ফেডারেশন অফ টিচার্স, পিবিএ, ডিসি থার্টি সেভেন, নিউইয়র্ক সিটির বৃহত্তম পাবলিক সেক্টর ইউনিয়নের সাথে নতুন এবং উন্নত শ্রম চুক্তিতে পৌঁছেছি। এসব শ্রম চুক্তি নিউইয়র্ক সিটির হাজার হাজার কর্মীকে সমর্থন করে যারা আমাদের সমর্থন করে এবং নিউইয়র্ককে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ শহর হিসেবে রাখে।
আমাদের অর্থনীতি রেকর্ড প্রবৃদ্ধি এবং পুনরুদ্ধার প্রদর্শন অব্যাহত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, আমরা মহামারি চলাকালে হারানো বেসরকারি খাতের চাকরির ৯৯% পুনরুদ্ধার করেছি। আমরা আগের চেয়ে আরও বেশি চাকরি তৈরির দিকে মনোনিবেশ করছি। চাকরি দিয়ে আপনি আপনার জীবনকে গড়ে তুলতে পারেন এবং আপনি আমাদের শহর ও আমাদের অর্থনীতিকে গড়ে তুলতে পারেন।
আমরা অফিস অফ কমিউনিটি হায়ারিং তৈরি করে সরাসরি মানুষের কাছে চাকরি নিয়ে আসছি। ঠিকাদাররা যাতে প্রায়ই-উপেক্ষিত কমিউনিটিগুলো থেকে নিয়োগের জন্য শহরের ব্যয় থেকে উপকৃত হয় তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আরো ন্যায়সঙ্গত একটি অর্থনীতি তৈরি করতে পারে সেজন্য কমিউনিটি হায়ারিং শহরের বিপুল ক্রয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করবে। কমিউনিটি হায়ারিং একবার সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হলে আগামী পাঁচ বছরে অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত কর্মী এবং বাসিন্দাদের জন্য ১ লাখ ৮৬ হাজার চাকরি তৈরি করার সম্ভাবনা রয়েছে ।
আমরা নিউইয়র্ক সিটি পিআইএনসিসি বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন ক্যারিয়ারের উপায়সহ বেশ কয়েকটি নতুন চাকরির প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও চালু করেছি। এই প্রোগ্রামটি পরবর্তী তিন বছরে নির্মাণ, পরিবহন এবং ইউটিলিটি খাতে ২ হাজারের বেশি নিউইয়র্কবাসীকে উচ্চ-মজুরি, ক্যারিয়ার-ট্র্যাক চাকরির প্রশিক্ষণ দেবে এবং চাকরিতে স্থাপন করবে।
শ্রমিকরা হলো আমাদের শহরের সমৃদ্ধির ভিত্তি। যত বেশি আশ্রয়প্রার্থী আসছে, তারা যাতে নিজেদের সমর্থন করার এবং আমাদের সমাজে একীভূত হওয়ার সুযোগ পায়, আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই। এ কারণেই আমরা আশ্রয়প্রার্থীদের কাজের অনুমোদনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখার মতো তাদের অনেক কিছু আছে এবং নিউইয়র্কবাসী করতে চান না এমন চাকরি পূরণে তারা সহায়তা করতে পারে।
ম্যানুফ্যাকচারিং, ফুড সার্ভিস, হোম কেয়ার, ও ট্রান্সপোর্টেশনসহ নিউইয়র্ক সিটিতে আমাদের হাজার হাজার চাকরির পদ খালি রয়েছে। আগের অভিবাসীদের মতো আমাদের অবশ্যই নতুন আগতদের চাকরি পেতে সাহায্য এবং আমেরিকান স্বপ্নকে অনুসরণ করতে তাদের অংশ গ্রহণ করাতে হবে।
নিউইয়র্ক সিটি হলো আমেরিকার বৃহত্তম ইউনিয়ন শহর এবং ইউনিয়নের সংহতিই অনেক আমেরিকান স্বপ্নকে সম্ভব করে তোলে। বিভিন্ন ইউনিয়ন শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, আরও ভালো সুবিধা এবং একটি উচ্চমানের জীবনের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। জীবনের সর্বস্তরের শ্রমিকদের গর্বিত সমর্থক হিসেবে আমি একই বিষয়গুলোর জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। শুভ শ্রম দিবস!