Thikana News
২৯ অগাস্ট ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৬৩ ফিলিস্তিনি 

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৬৩ ফিলিস্তিনি  ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজা উপত্যকায় অন্তত ৬৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে ইসরায়েলি সেনারা গাজা নগরীর ভেতরে আরও অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা করছে তারা। স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে ২৩ আগস্ট (শনিবার) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। 

শনিবার পাওয়া ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, ইসরায়েলি ট্যাংক গাজা নগরীর সাবরা এলাকায় প্রবেশ করেছে। এটি ওই অঞ্চলে সেনাদের স্থল অভিযানের সম্প্রসারণের ইঙ্গিত বহন করে। সাবরা গাজা নগরীর অবরুদ্ধ জায়তুন এলাকার কাছাকাছি, যেটি গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক হামলার শিকার।

আল-আহলি হাসপাতালের এক সূত্র জানিয়েছে, সর্বশেষ সাবরায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এদিন সকালে খান ইউনূসের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল আসদা এলাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবুতে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জন শিশু।

মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে দিনভর আরও অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খান ইউনূসের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে একজনকে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা। নেতজারিম করিডরের কাছেও খাদ্যের সন্ধানে আসা এক বেসামরিক নাগরিক গুলিতে নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮১ জনে। এর মধ্যে ১১৪ জনই শিশু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ বলেছেন, “ক্ষুধা নিঃশব্দে মানুষের দেহকে কুরে কুরে খাচ্ছে, শিশুদের জীবন থেকে বঞ্চিত করছে এবং প্রতিদিন তাঁবু ও হাসপাতালকে শোকে ভরিয়ে তুলছে।”

জাতিসংঘ ২২ আগস্ট (শুক্রবার) আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে—যা মধ্যপ্রাচ্যে এ ধরনের প্রথম ঘটনা। সংস্থাটি বলছে, প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ “বিপর্যয়কর ক্ষুধা”র মুখোমুখি। মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস একে “মানবসৃষ্ট দুর্যোগ” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজার প্রায় এক-চতুর্থাংশ জনগণ—৫ লাখ ১৪ হাজার মানুষ—বর্তমানে দুর্ভিক্ষে ভুগছেন। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ এ সংখ্যা বেড়ে ৬ লাখ ৪১ হাজারে পৌঁছাতে পারে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা জাতিসংঘের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও এ ঘোষণাটি অনেক দেরিতে এসেছে।

টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ক্ষুধার প্রকৌশল আসলে গণহত্যারই একটি অধ্যায়, যার মধ্যে স্বাস্থ্য খাত ও অন্যান্য খাতের ধ্বংসযজ্ঞ, গণহত্যা এবং প্রজন্ম নিশ্চিহ্ন করার নীতি অন্তর্ভুক্ত।”

ইসরায়েল ২৭ মে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে একতরফা ত্রাণ সরবরাহ ব্যবস্থা (জিএইচএফ) চালু করেছে। কিন্তু জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো একে অবৈধ এবং মানবিক নীতির পরিপন্থী বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জিএইচএফ চালুর পর থেকে সহায়তা নিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৬ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৩০০ জন আহত হয়েছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬২ হাজার ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ঠিকানা/এএস 

কমেন্ট বক্স