মায়ামি জার্সিতে যেন প্রতি ম্যাচেই নতুন এক অধ্যায় লিখছেন লিওনেল মেসি। বুধবার রাতে নিউ ইংল্যান্ড রেভল্যুশনের মাঠে ইন্টার মায়ামির ২-১ গোলের জয়ে জোড়া গোল করলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। শুধু দলকে জেতালেন না, মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) গড়লেন এক অনন্য রেকর্ডও—টানা চার ম্যাচে একাধিক গোলের নজির, যা এর আগে কারও নেই।
ম্যাসাচুসেটসের সেই আলো ঝলমলে রাতে ম্যাচজুড়ে ছিলেন আগুনে মেসি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেভাবে খেলেছেন, তাতে যেন মনে হচ্ছিল—৩৮ নয়, যেন তিনি ঠিক সেই বার্সেলোনার স্বর্ণযুগের যুবক!
ম্যাচের ২৭তম মিনিটে নিউ ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার ট্যানার বিসনের একটি ভুল পাস ধরে বল পান মেসি। ডান দিক দিয়ে ছুটে গিয়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে বল পাঠিয়ে দেন জালে ১-০।
এর ঠিক ১০ মিনিট পর, সার্জিও বুসকেটসের নিখুঁত এক পাস পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে নিচু শটে বল জড়ান গোলরক্ষক ইভাচিচের বাঁ দিক দিয়ে। প্রথমার্ধেই নিশ্চিত হয়ে যায় ইন্টার মায়ামির জয়, আর মেসির রেকর্ডও।
এই ম্যাচে মেসির জোড়া গোলের ফলে তিনি হয়ে গেলেন এমএলএস ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড়, যিনি টানা চারটি লিগ ম্যাচে একাধিক গোল করেছেন।
তার জোড়া গোল এসেছে—
২৮ মে: মন্ট্রিয়ালের বিপক্ষে ৪-২
৩১ মে: কলাম্বাস ক্রুর বিপক্ষে ৫-১
৫ জুলাই: মন্ট্রিয়াল অ্যাওয়েতে ৪-১
৯ জুলাই: নিউ ইংল্যান্ড অ্যাওয়েতে ২-১
এই চার ম্যাচে মোট ৮ গোল! তার আগে ফিলাডেলফিয়ার বিপক্ষে ৩-৩ গোলের ড্র ম্যাচেও একবার জাল খুঁজে পেয়েছিলেন ‘লা পুলগা’।
এই পারফরম্যান্সে ইস্টার্ন কনফারেন্সের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে মায়ামি, যা প্লে-অফের পথে বড় পাওয়া।
মেসির এই গোলের ধারাবাহিকতা শুধু লিগেই নয়। ক্লাব বিশ্বকাপেও তিনি গোল করেছেন পোর্তোর বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে। যদিও দলটি পরে বিদায় নেয় শেষ ষোলো থেকে।
তবে তার গোলের ধারাবাহিকতা ও মাঠে প্রভাব যেন বয়সকে থামিয়ে দিয়েছে। গত বছরের মাঝামাঝি মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই যেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা আবার ফিরেছেন সোনালি অধ্যায়ে।
ম্যাচ শেষে ইন্টার মায়ামি কোচ হ্যাভিয়ের মাশ্চেরানো বলেন, ‘মেসি শুধু গোল করছে না, পুরো দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ওর উপস্থিতি তরুণদের আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে, আর আমাদের জয়ের মানসিকতা তৈরি করছে।’
লিওনেল মেসির মতো খেলোয়াড়রা প্রতিবার মাঠে নামার সময় শুধু গোলের জন্য নয়, ইতিহাস গড়ার জন্যই নামেন। নিউ ইংল্যান্ডের মাঠে সেই ইতিহাসটা যেন আরও একবার রাঙিয়ে দিলেন এই ফুটবল জীবন্ত কিংবদন্তি।
আর প্রশ্নটা আবারও ঘুরে ফিরে আসছে—এই বয়সেও কীভাবে এতটা ধারালো, এতটা ক্ষুধার্ত থাকা যায়? উত্তরটা হয়তো একটাই—কারণ তিনি মেসি।
ঠিকানা/এএস