মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে বিমানবন্দর থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধ আইনের মামলায় চার প্রবাসীর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে যাওয়া চার প্রবাসী হলেন- নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, জাহেদ আহমেদ এবং মাহফুজ।
৮ জুলাই (মঙ্গলবার) আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক কে এম তারিকুল ইসলাম তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিদের পক্ষে এমদাদুল হকসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত প্রত্যেকের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩ জুলাই তিন আসামি নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম এবং জাহেদ আহমেদকে মালয়েশিয়ান পুলিশ দেশে ফেরত পাঠায়। গত ৪ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩ টায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে পৌঁছান তারা। এসময় পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট তাদের হেফাজতে নেন। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে হয়। বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়েরের পর তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এছাড়া কুমিল্লা থেকে গত সোমবার মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা চারজনই এজাহারনামীয় আসামি।
গত ৫ জুলাই এন্টি টেররিজম ইউনিটের ইনটেলিজেন্স শাখার পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় ৩৫ প্রবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। তারা মলয়েশিয়ায় অবস্থান করা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। তারা মালয়েশিয়ার আইপি ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশি কতিপয় নাগরিকদের পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগমাধামে সদস্য সংগ্রহ এবং প্রচার-প্ররোচনা চালিয়ে আসছিল। আসামিরা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে সেদেশের জননিরাপত্তা, জনসাধারণের আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কর্যক্রম পরিচালনা করে। পরে গত ২৮ এপ্রিল থেকে ২১ জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়ান পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। আসামিরা সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হয়ে আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী স্বেচ্ছায় দেওয়া অনুদানের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন। পরে সংগৃহীত অর্থ ই-ওয়ালেট এবং আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তর পরিষেবার মাধ্যমে অন্য দেশে অর্থ প্রেরণ করে। সংগঠনটির সদস্য হিসেবে বছরে ৫০০ রিঙ্গিত চাঁদা প্রদান করত।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ও পলাতক আসামিদের মালয়েশিয়ান পুলিশ পর্যায়ক্রমে নিজ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। গোয়েন্দা তথ্য ও অপরাপর তথ্যের আলোকে জানা গেছে, আসামিরা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে এসে সন্ত্রাসবাদে জড়িত হয়ে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের অখণ্ডতা, সংহতি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জননিরাপত্তা, জনসাধারণের কোন অংশে আতঙ্ক সৃষ্টি উদ্দেশ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যেকোনো সময় বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার সম্ভবনা রয়েছে।
ঠিকানা/এএস