Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সুখ

সুখ
একটুখানি স্বস্তি, একটুখানি প্রশান্তি, একটুখানি শান্তির আশায় যেন একদলা সুখ আহরণে বেসামাল ছুটছে সাহিদা। কোথায় যাবে গন্তব্য জানা নেই তার। তবু হাঁটছে। জ্যামাইকা হিলসাইডের ফুটপাত ধরে ছুটছে সে।
মেরিক ব্লুবার্ডের চওড়া রাস্তাটা মাথার সিঁথির মতো দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এক ভাগ পারসন ব্লুবার্ড আর অন্য সাইড জ্যামাইকা ওয়ান সিক্সটি ফাইভ, সিক্স, সেভেন, এইট। এভাবে ক্রমান্বয়ে সংখ্যা বাড়তে থাকে।
সাহিদা হাঁটতেই থাকে, কেন হাঁটছে, কোথায় যাচ্ছে, কতদূর যাবে, তা নিজের কাছে নির্ধারিত নেই। তবে সময়টা তার কাছে নির্ধারিত। সন্ধ্যা নামার পূর্বেই তাকে হিলসাইডের ওয়ান সিক্সটি ফাইভ স্ট্রিটে পৌঁছাতে হবে। এখানেই রোজ শেষ হয় তার গন্তব্য। তারপর নির্ধারিত বাসযোগে আবার পৌঁছে যাবে ফ্লাশিংয়ে সেই চার দেয়াল ঘেরা ছোট্ট বাক্সটার ভেতর। যেখানে নিরবচ্ছিন্ন শূন্যতায় প্রতিদিনের মতো দেয়ালে ঠেসে রাখা অ্যাকুরিয়ামের ভেতর রঙিন মাছের মতো সেও হয়ে যাবে চিরচেনা পুরোনো স্মৃতির জলে ঘূর্ণমান আরেকটি মাছ যেন। একা একা কেবল তড়পাবে আর তড়পাবে।

নিউইয়র্কের এই ফ্লাশিং বাড়িটায় সে একা থাকে। জীবনের রঙিন বসন্তগুলো সে এই ছোট্ট বাড়িটায় পার করে দিয়েছে নির্বিঘ্নে। অথচ একসময় এই ছোট্ট বাড়িটা জনসমাগমে ভরে থাকত। স্বামী, ছেলেমেয়ে, আত্মীয়, বান্ধব। এখন সবই দুঃসহ স্মৃতি। সময়ের তাণ্ডবে সাহিদা এখন নিঃসঙ্গ।

স্বামী প্রয়াত। ছেলেমেয়ে যে যার মতো যাপিত জীবনের ঘোরে আচ্ছন্ন। দুজনেই যার যার পরিবার নিয়ে থাকে অন্য জায়গায়। সাহিদার আশপাশেই থাকে, তবে খুব দূরেও না আবার খুব একটা কাছেও না। যখন তাদের সময় হয়, তখন আসে মায়ের কাছে নাতিদের নিয়ে।
কিন্তু যখন সাহিদা অনন্ত সময়ের ঘোরে একমুঠো সুখের প্রত্যাশায় দৈন্যদশা ভিখারির মতো সন্তানদের সঙ্গ খোঁজে, তখন তারা দারুণ ব্যস্ত, তটস্থ, নিরুপায়।

মেয়েটা তো প্রায় একরকম খেঁকিয়ে ওঠে-এখন ফোন দিলা মা, এখন তো কাজে আছি। ফেরার পথে আবার জ্যাকসন হাইটসে ইত্যাদিতে ঢুকতে হবে। কাঁচা সবজি ফুরিয়ে গেছে। তোমার জামাই পাতে সবজি না পেলে কুরুক্ষেত্র বানিয়ে ফেলে। কাল কল দিই, মা। তোমার কি কিছু লাগবে?
-না না না, সব আছে। গত সপ্তাহে ফ্রিজ ভরে যে খাবার দিয়ে গেছিস, দু-একটা আইটেম এখনো ছুঁয়েই দেখিনি।
তারপর সাহিদার আঙুল ছুঁয়ে যায় মোবাইলের অন্য বাটনে। চিরচেনা সেই নম্বর। কিন্তু কল ধরে ছেলের বউ।
-সায়ন কই?
-ও তো ঘুমায়, মা। কাজ থেকে ফিরেছে মাত্র। একটু ন্যাপ নিচ্ছে। আবার বেরোবে। ডেকে দেব, মা?
-না না না, ডাকতে হবে না। রেস্ট করুক। বলো, এমনি কল দিয়েছিলাম।
সাহিদা ফিরে আসে নিজের ভেতর। যেখানে একদঙ্গল অসোয়াস্তি ভেতরে ভেতরে তীব্র আলোড়িত করে তাকে। দলা দলা ভালো না লাগারা রঙিন মাছের মতো তড়পাচ্ছে ভেতরে ভেতরে। এক সূক্ষ্ম অহেতুক ঘটনা দিয়ে আরম্ভটা হলে নদীর মতো এঁকেবেঁকে পুরো জীবনের ঘটে যাওয়া ভালো না লাগারা ক্রমে আক্রমণ করে।
সেই বাল্য বয়স থেকেই যখন শ্বশুরবাড়িতে তার আগমন ঘটে, তার পরের সমস্ত অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এখনো তার ভেতরে তীব্র আলোড়ন তোলে। সমাজ-পরিবার, স্বামী-শাশুড়ি-ননদÑতাদের আচরণের সূক্ষ্ম খেলা কবে থেমে গেছে। কিন্তু তার ঝাঁজালো আঁচ এখনো রয়ে গেছে বুকের এক নিভৃত কোণে। সময়ে তা নাড়া দিয়ে জেগে ওঠে যখন, তখনই সাহিদা উঠে দাঁড়ায়। বার্ধক্যে প্রায় নেতানো শরীরটার অস্তিত্ব অনুভব করে মনে মনে, সব ঠিক আছে তো। না, পায়ে আজ কোনো ব্যথা নেই। তখন আয়নার কাছে যায়। অকারণে সাজগোজ করে। নতুন শাড়ির ভাঁজ ভাঙে। অনেক সময় ধরে সাজে। তারপর যত্নসহকারে দরজার লকটা লাগিয়ে বেরিয়ে পড়ে অনির্দিষ্ট গন্তব্যে। চেনা চেনা জায়গা ধরে।
কিন্তু পা দুটো টানে তার জ্যামাইকা হিলসাইডের দিকেই বেশির ভাগ সময়। বিশেষ করে, সেখানেই সব কটি বাঙালি গ্রোসারি। মান্নান, প্রিমিয়াম, ফাতেমা স্টোর। চেনা চেনা খাবারের গন্ধ-ডালপুরি, শিঙাড়া, নানরুটি, গরম গরম চা। তারপর আছে শাড়ি, জুয়েলারি দোকান।
সাহিদা সব সময় কিনুক আর না কিনুক, এসব দেখতে তার ভালো লাগে। তন্ন তন্ন করে খোঁজে স্টোরের শাড়ির আলনা, ড্রেসের আলনা।
কী খোঁজে?
নতুন ফ্যাশন নাকি ডিজাইন।
নাহ্!
তার তো ঘরে ওয়ার্ডরোব, আলমারি ভরা শাড়ি, ড্রেস। তার তো আর দরকার নেই ওসবের। তবু খোঁজে, প্রতিনিয়তই খোঁজে।
আসলেই কী খোঁজে?
-একদলা সুখ খোঁজে, শান্তি খোঁজে।
নিঃসঙ্গতার একাকিত্বে ভেতরটা নির্ভার করতে কোনো একপ্রকার প্রশান্তি খোঁজে।
তবু মাঝে মাঝে দরকার না থাকলেও দুলটা, চুড়িটা, শাড়িটা কিনে ফেলে।
সেই সাথে চেনা মুখগুলো। অজস্র বাঙালি। অনাত্মীয় বাঙালি। অচেনা বাঙালি। কিন্তু দেখতে দেখতে চেনা হয়ে গেছে।
সাহিদা প্রায় সপ্তাহেই ওখানে যায়। কথা হয় ওদের সাথে। কথা হতে হতে চেনা হয়ে গেছে। চেনা হতে হতে আপন হয়ে গেছে। আপন হতে হতে যেন পরম আত্মীয়ের মতো হয়ে গেছে। এখন ওদের না দেখে থাকতে পারে না। তাই ওই হিলসাইডেই আড্ডাটা হয় তার বেশি। ওখানে গেলে সুখ-দুঃখের কথা হয়। কেউ কেউ নিজেকে প্রকাশ করে। অনন্ত দুঃখের যন্ত্রণাগুলো উন্মোচন করে ওখানে। সান্ত্বনা পায় সাময়িকÑএভাবেই সুখ পায়।
সাহিদা বুঝি তাই সেই একদলা সুখের অন্বেষায় প্রায়ই জ্যামাইকা হিলসাইডে যায়। আজকেও হাঁটছে। বাস থেকে নেমে কিছুটা হাঁটার পথ।
আজকে তার মনটা বেশি খারাপ। ছেলেটা কথা বলেনি। রাতেও না, সকালেও না। কী জানি ব্যস্ত। কাজের ব্যস্তটা, সংসারের ব্যস্ততা।
মায়ের কথা এখন মনে পড়বে কেন? এখন তো আর মাকে দরকার নেই। হাতে-পায়ে বড় হয়ে গেছে। শক্তি-বুদ্ধিতে বড় হয়েছে। এখন মাকে কী দরকার। এক দিন মায়ের সাথে কথা না বললে কী হয়।
ছেলের কিছু হয় না কিন্তু মায়ের তো হয়। ঘরে ফিরল কি না, বাইরে কত রকমের ঘটনা ঘটে। যতক্ষণ ঘরে না ফিরে সাহিদার শান্তি হয় না। এই সহজ জিনিসটা সে ছেলেকে, ছেলের বউকে বোঝাতে পারে না। একটা ফোন দিয়ে জানালে কী হয়?
সাহিদাও একবুক অভিমান নিয়ে ফোনের বাটনের দিকে চেয়ে থাকে কিন্তু নিজে বাটন টিপে না সহজে। আসলে ফোনটা পেয়েই ছেলেটার জবাব মনটা আরও বেশি খারাপ করে দেয়।
যদি কল করে সাহিদাÑবাবা, কী খবর। সারা দিন একটা কল দিলি না।
-মা, কাজে তো। কাজ ফেলে কল দেওয়া যায়!
কেমন তিরিক্ষি হয়ে ওঠে ছেলের গলার স্বর।
-ও, তাই, এখন কই?
-এই তো মাত্র বাসায় ফিরলাম। টানা ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করে ঘরে ঢুকলাম মাত্র।
-আচ্ছা আচ্ছা, রাখি রাখি, বাবা ফ্রেশ হও।
সাহিদা ফোন রেখে দিতে চাইলে ছেলে অধীর আগ্রহে জিজ্ঞেস করে, কিছু লাগবে মা, ফ্রিজে খাবার আছে তো। তোমার বউমা যেগুলো রান্না করে দিয়ে গেছিল, আছে তো? নাকি কোনো বান্ধবী ডেকে সব উজাড় করে দিয়েছ। তোমার তো আবার মন বড়Ñহে হে হে।
সাহিদা ফোন রেখে দেয়। এসব অরুচিকর টিপ্পনী তার ভালো লাগে না।
আসলে মায়ের ভালো লাগা আর মন্দ লাগা নিয়ে সন্তানের মাথাব্যথা নেই। সাহিদার স্বামী মারা গেছে বছর তিনেক আগে। আগে সঙ্গ দেওয়ার মানুষ ছিল। ছেলেমেয়ে চলে গেছে আলাদা বাসায়। যার যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত। একাকিনী মা, কী করবে? দু-একটা বান্ধবী জুটেছে। মাঝেমধ্যে আসে। ঘরে বসে গল্প করে। দুপুরে একসাথে ফ্রিজের খাবার ভাগাভাগি করে খায়। এতেও দোষ খোঁজে ছেলে? টিপ্পনী কাটে? ছেলে কীভাবে বুঝবে প্রৌঢ়া এক মায়ের ভেতরটা। তার তো এখন টগবগে যৌবন।
এর ওপর গত ঈদে সাহিদা শখ করে নাতনির জন্য বেশ দাম দিয়ে একটা ফ্রক কিনে নিয়ে গিয়েছিল। সে ভেবেছিল, ছেলে, ছেলের বউ, নাতনি সবাই খুব খুশি হবে। কিন্তু না। নাতনি খুশি হলেও নিজের ছেলেই প্যাকপ্যাক করে কতগুলো কথা শুনিয়ে দিয়েছেÑমা, তোমাকে না বারণ করেছি নিজের হাতের ক্যাশ টাকা নষ্ট করবা না। এই সব ফ্যাশন আর চলে না। এত টাকা খরচ করে এগুলো কিনেছ। এগুলো ও পরবে না। তোমার বউমাও পছন্দ করবে না। কেন কিনতে যাও এগুলো।
কেন সাহিদা কিনতে যায় এগুলো। এক মুঠো প্রশান্তির অন্বেষায়। ছেলে কী করে বুঝবে এগুলো। আসলে কোথায় শান্তি, কোথায় সুখ। নিজেরটা নিজের বোধেই থাকে। তা বলে বোঝানো যায় না। অন্যকে বলে বোঝানো যায় না।
সাহিদা হাঁটতে থাকে আর ভাবতে থাকে। একদল কষ্ট গলার ভেতরে যেন আটকে থাকে। সারাক্ষণ কষ্ট দেয়।
হঠাৎ দেখা হয়ে যায় পথের ধারে হুইলচেয়ারে বসে আছে ফাতেমা। পেছনে চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে আছে সম্ভবত মেয়ে কিংবা ছেলের বউ। চমকে ওঠে সাহিদা, এতটাই চমকপ্রদ হয় যে ভাষা হারিয়ে ফেলে।
-এ কী? কী হয়েছে ফাতেমা আপা, আপনার।
সাহিদা কাছে যায়। মাথায় আদুরে হাত রাখে।
ফাতেমার বাড়ি কুমিল্লায়। বয়স্ক স্বামী নিয়ে হিলসাইডে থাকে। মেয়ের মারফত গ্রিনকার্ড নিয়ে আমেরিকায় এসেছে কয়েক বছর আগে। প্রায়ই দেখা হয় ফাতেমা আপার সঙ্গে। সাজনা শাড়ির স্টোরে ফাতেমা আপার সঙ্গে দেখা হয়েছিল প্রথম দিন। তারপর প্রায়ই দেখা হতো। সাজনা স্টোরের ম্যানেজার শবনম আপার ঘনিষ্ঠ একজন ফাতেমা। তবে শবনম আপার এক অপার্থিব গুণ। অপরিসীম মায়ায় আটকে রাখতে জানে মানুষকে। সাহিদা সাজনায় গেলেই শাড়ি-চুড়ি দেখার আগেই ভেতরে ডেস্কে লুকানো খাবারের পোঁটলা থেকে একটা লোভনীয় খাবার বের করে সাহিদার সামনে ধরবে-বাংলাদেশি পিঠা, আচার দেওয়া খিচুড়ি, গরুর মাংস। নয়তো কথার মায়া।
-কী সুন্দর লাগছে সাহিদা আপুকে। একদম ষোলো বছরের কিশোরী।
একদিন সাহিদার খুব মন খারাপ করা বিকেল ছিল। অগত্যা হাজির হয়েছিল সাজনায় শবনম আপার কাছে। কথায় কথায় নিজের ভেতরের আটকে থাকা কষ্টটা উন্মোচন করে দিয়েছিল শবনমের কছে। যে যন্ত্রণাটা সময়ে অসময়ে তার ভেতর প্রচণ্ড তোলপাড় করত। সাহিদার স্বামীর দেওয়া কারণে অকারণে তীব্র ভর্ৎসনার কথা সে শবনমকে জানান দেয়।
-ঘরে ঢুকলেই মানুষটা সামান্য জিনিসপত্র এদিক সেদিক ছড়িয়ে থাকতে দেখলেই চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দিত। যদি একবার আরম্ভ করত তো ঘণ্টাখানেক আগে থামত না। কী যে অসহনীয় ঘরটা আমার ছিল আপা।
ঠিক তখন শবনম আপা এমনভাবে জবাব জানিয়েছিল, এর পর থেকে স্বামীর প্রতি সাহিদার আর কোনো খেদ থাকল না।
-এই ঘরটাই তো সে আপনার নামে লিখে দিয়ে গেছে। তার ছেলের নামেও দিয়ে যায়নি, মেয়ের নামেও দিয়ে যায়নি। একমাত্র দিয়ে গেছে আপনার নামে। তাহলে বোঝেন, তার পৃথিবীতে প্রিয় মানুষ ছিলেন একমাত্র আপনি।
এভাবে অদ্ভুত এক কথার মায়াও আছে শবনমের ভেতর। সে মায়া দিয়ে আকর্ষণ করে রাখে শবনম মানুষকে। সেখানেই ফাতেমা আপার সাথে পরিচয়। তারপর সাগর রেস্টুরেন্টে বসে চা আর নানরুটি খাওয়া। সুখ-দুঃখের আলাপ হয়। কিন্তু এই আলাপ তো হয় নাই।
ফাতেমার কান্নাভেজা কণ্ঠ-পা’টা কেটে ফেলা হয়েছে। ডায়াবেটিস, ফোড়া হয়েছিল।
-আহ্! সাহিদার গলার স্বরে অস্ফুট বের হয়।
-আজ তিনটা মাস যাবৎ ঘরে। বিছানায়। সাহেবও অসুস্থ। তারও ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। কে আমাকে বাইরে নিয়ে আসবে। ঘরে মন আনচান করে। তাই মেয়েকে খবর দিলাম। একটু দুনিয়াটা দেখে আসি।
সাহিদা ভাষা খুঁজে পায় না।
-দোয়া করি আপা, ভালো হয়ে যান।
এবার কান্নার মতো হেসে ফেলে সাহিদা।
-আর ভালো হব। পা নেই...।
পা নেই,
পা নেই।
সাহিদা হাঁটতে থাকে আর নিজের মনে বিশ্লেষণ করতে থাকে। হাঁটছে তো হাঁটছেই। একদলা সুখের আশায় ঘর থেকে বের হয়ে এসেছে সে। কোথায় সুখ?
তবে তার তো দুটো পা আছে। অক্ষত দুটো পা আছে। নাড়াচাড়া করার মতো দুটো হাত আছে। সুস্থ সবল একটা দেহ আছে। নিজের মতো করে চলতে পারে। হাঁটতে পারে। যেখানে খুশি যেতে পারে। এর চেয়ে বড় সুখ আর কী হতে পারে। কোথায় সুখ। সুখ ঘরেও নেই। সুখ বাইরেও নেই। সুখ ছেলের কাছেও নেই, মেয়ের কাছেও নেই। সুখ আসলে নিজের ভেতর।
সাহিদ আজ অনেক দিন পর সত্যিকারের সুখের সন্ধান পায় আর পরম প্রশান্তিতে বুকভরে নিঃশ্বাস টানে।
 

কমেন্ট বক্স