গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় কমপক্ষে আরও ৭১ জন নিহত হয়েছেন। এই ব্যাপক প্রাণহানির মধ্যেই নতুন করে জানা গেল, গত চার সপ্তাহে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। খবর আল-জাজিরার।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে বা তার কাছাকাছি এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় চার হাজার ৬৬ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এসব কেন্দ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) দ্বারা পরিচালিত।
জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ত্রাণ বিতরণে ইসরায়েলি বাধা একটি নিয়মিত সমস্যা। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডাব্লিওএফপি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বিশেষ করে উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কারণে রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গেছে। ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো নিয়মিত তল্লাশি ও নিষেধাজ্ঞার শিকার হচ্ছে, যা খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছানোকে আরও কঠিন করে তুলছে।
ডাক্তারস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ)-এর মতো সংস্থাগুলো বারবার অভিযোগ করছে, ত্রাণবাহী দলবদ্ধ গাড়িগুলোতে হামলা চালানো হচ্ছে অথবা তাদের চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এই বাধাগুলো ফিলিস্তিনিদেরকে মরিয়া হয়ে ত্রাণের কাছে যেতে বাধ্য করছে, যেখানে প্রায়শই ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।
ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হওয়ার ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অবিলম্বে গাজায় নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৬ হাজার ২৫৯ জন নিহত এবং এক লাখ ৩২ হাজার ৪৫৮ জন আহত হয়েছেন।
ঠিকানা/এসআর