নিউইয়র্ক সিটির ৩৯ নম্বর কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট থেকে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসের পাতায় আরও একবার নিজের নাম লেখালেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জনপ্রতিনিধি শাহানা হানিফ। ২৪ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে তিনি প্রমাণ করেছেন জনগণের আস্থা, ভালোবাসা এবং প্রতিনিধিত্বের প্রতিশ্রুতি তাকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। মোট ৯৭.৫৬ শতাংশ ভোটের ফলাফলে তিনি ৬৯.৭৯ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ হাজার ৫৯২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি মায়া কর্ণবার্গ পেয়েছেন ২৬.১০ শতাংশ অর্থাৎ ১১ হাজার ৪৬৭ ভোট।
২০২১ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম নারী কাউন্সিলর হিসেবে। এবার তাঁর পুনঃনির্বাচন শুধুমাত্র একটি বিজয় নয়, বরং প্রগতিশীল নেতৃত্ব, কমিউনিটি সচেতনতা ও অভিবাসীবান্ধব রাজনীতির প্রতি জনসমর্থনের পুনঃনিশ্চয়ন।
কেনসিংটন, পার্ক স্লোপ, কারল রামেল হিলসহ বৃহত্তর ব্রুকলিন এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে গঠিত এই ডিস্ট্রিক্টে শাহানার কাজ ছিল বহুমুখী পার্ক ও রাস্তার উন্নয়ন থেকে শুরু করে স্কুল অবকাঠামো, পরিবেশবান্ধব প্রকল্প, স্বাস্থ্য ও অভিবাসন অধিকার সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন। তার উদ্যোগে পাশ হয়েছে “ইমিগ্র্যান্ট ওয়ার্কার প্রোটেকশন অ্যাক্ট”, গর্ভপাত অধিকার সুরক্ষা আইন এবং লুপাস সচেতনতা বৃদ্ধি সম্পর্কিত বিল।
নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর বিজয় উল্লাসে কেঁপে ওঠে শাহানার নির্বাচনী সদরদপ্তর। তিনি বলেন, এই জয় শুধু আমার নয়-এটি আমাদের পুরো কমিউনিটির। এই বিজয়ে প্রমাণ হয়েছে, বৈচিত্র ও মর্যাদার সঙ্গে নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব, এবং আমাদের কণ্ঠ চিরকাল প্রাসঙ্গিক থাকবে।
প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শাহানার বিজয় নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। অনেকেই বলছেন, শাহানার মতো প্রতিনিধি নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিকে নতুন মাত্রা দিয়েছেÑ যেখানে অভিবাসী, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব পাচ্ছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রবেশ করে শাহানা হানিফ অঙ্গীকার করেছেন,আরও বিস্তৃত পরিসরে সামাজিক ন্যায়বিচার, পরিবেশ সুরক্ষা এবং সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে কাজ করবো।
এছাড়া, তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের জনগণসহ সেই সকল অক্লান্ত পরিশ্রমী স্বেচ্ছাসেবক, সংগঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান-যাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় এই বিজয় নিশ্চিত হয়েছে।