আগামী নির্বাচনে জিতে বিএনপি যদি সরকারে আসতে পারে, তখনো তারা বর্তমান সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরকারের সঙ্গে যুক্ত রাখতে চায়, তাকে কাজে লাগাতে চায়। বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে তার যে পরিচিতি, সেটা ব্যবহার করতে ইচ্ছুক দলটি। লন্ডন বৈঠকের পর তারেক রহমানের এমন আকাঙ্খার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। এ বিষয়টি তুলে ধরে দ্য ফাইন্যান্সিয়াল পোস্টের প্রধান সম্পাদক এম এ আজিজ বলছেন, আগামী নির্বাচিত সরকারের রাষ্ট্রপতি হতে পারেন ড. ইউনূস- এমন যে আলোচনা এটা কখনোই হবে না। কারণ তিনি নিজের মতো করে কাজ করেন। তাই বিএনপি তাকে রাষ্ট্রপতি করবে না। কিন্তু বিশেষ দূত হিসেবে দেশে-বিদেশে জনকল্যাণমূলক কাজে যুক্ত করতে পারে।
‘ড. ইউনূস আমাদের জাতীয় সম্পদ। কিন্তু শেখ হাসিনা তাকে ব্যবহার না করে উল্টো অপদস্থ করেছে। বিএনপি তাকে দেশের কাজে লাগাবে বলেই বিশ্বাস।’- ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে এমন মন্তব্য করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম এ আজিজ।
১৯ জুন বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) হয়েছে এই আলোচনা অনুষ্ঠান। আর টকশোটি সরাসরি দেখা গেছে ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যনেলে। যেখানে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। লন্ডন বৈঠক, অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা, সংস্কার- এসব বিষয়ে ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের নানা প্রশ্নের জবাব দেন দুই অতিথি।
লন্ডন সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ছিলেন না, ছিলেন না পররাষ্ট্র সচিবও। ড. ইউনূসের সঙ্গে সেই সফরে দেখা গেছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানকে। কূটনীতি সামলাতে নিরাপত্তা উপদেষ্টা কী পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বিকল্প? এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেন, ‘বিষয়টি মোটেই এমন নয়। বরং একজন অন্যজনের পরিপূরক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজের পরিধি অনেক বেশি। কূটনীতিতে নানা ধরনের কাজ চলে। সে হিসেবে দুজনে নানামুখী কাজ করছেন। তবে কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের মধ্যে সমন্বয় আছে।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রায়ই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার কার্যক্রম তুলে ধরা হয়, সেটা আবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টার ক্ষেত্রে দেখা যায় না- এ প্রসঙ্গে পেশাদার সাংবাদিক আজাদ মজুমদার বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব জনসংযোগ বিভাগ আছে। সেখান থেকেই তাদের কার্যক্রম গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয়। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাজ করেন। তাই তার কাজগুলো প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রচার করা হয়। তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রয়োজন মনে করলে, তার কাজও তুলে ধরা হবে- বলছেন আজাদ মজুমদার।
এদিকে বড় দল হিসেবে বিএনপি সরকারকে চাপে রাখছে। নিজেদের মতো করে সবকিছু আদায় করে নিতে চাইছে। এমন অভিযোগ মানতে নারাজ দ্য ফাইন্যান্সিয়াল পোস্টের প্রধান সম্পাদক এম এ আজিজ। তিনি মনে করেন, এটা ঠিক যে, জাতীয় নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে। কিন্তু ক্ষমতায় আছে এনসিপি ও জামায়াত। তাই তারা বাগড়া দিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে।
তিনি আরো বলেন, আদালতের রায় থাকার পরও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানো হয়নি। সরকার ‘চালাকি’ করে তাকে বঞ্চিত করছে, দাবি করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম এ আজিজ।
একথার সঙ্গে একমত হননি প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। তার দাবি, বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। তারা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই শপথ পড়ানো থেকে বিরত আছেন। এক্ষেত্রে ইশরাক যদি মনে করেন তিনি ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না, সেক্ষেত্রে চাইলে তিনি আবার আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
ঠিকানা/এসআর