যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া নতুন পরমাণু চুক্তি প্রস্তাবে ‘অনেক অস্পষ্টতা ও প্রশ্ন’ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। ৩ জুন (মঙ্গলবার) লেবানন সফরকালে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। তার এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে পরমাণু আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়ছে। খবর এএফপির।
আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমরা যে লিখিত প্রস্তাব পেয়েছি, তাতে অনেক অস্পষ্টতা ও প্রশ্ন রয়েছে। এই প্রস্তাবের অনেক বিষয় স্পষ্ট নয়।’
এর আগে শনিবার ইরান জানায়, ওমানের মধ্যস্থতায় পরিচালিত পাঁচ দফা আলোচনার পর পরমাণু চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি লিখিত প্রস্তাব পেয়েছে।
ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পরমাণু চুক্তি সম্পন্ন করার আলোচনায় মূল বিষয় হলো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ। ইরান এটিকে তাদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অধিকার হিসেবে তুলে ধরছে। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটিকে একটি ‘রেড লাইন’ বলছে।
গতকাল সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির অধীনে ইরানকে কোনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অনুমতি দেওয়া হবে না।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক আজ বলেন, ‘ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়া আমাদের রেড লাইন।’ ইরান তার ‘নীতিগত অবস্থান এবং ইরানের জনগণের স্বার্থের’ ভিত্তিতে আগামী দিনে এই প্রস্তাবের জবাব দেবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি বলেন, ‘আমরা ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার জন্য কারও অনুমতি চাইব না। তবে এই সমৃদ্ধকরণ যাতে পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনের দিকে না নিয়ে যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’
এর আগে গতকাল সোমবার কায়রোতে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসির সঙ্গে বৈঠক করেন আরাগচি। এ সময় জাতিসংঘের এই পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে আরও স্বচ্ছতার আহ্বান জানায় ইরান।
সম্প্রতি আইএইএর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তেহরান উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের উৎপাদন বাড়িয়েছে। দেশটি ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের উৎপাদন বাড়িয়েছে, যা পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় ৯০ শতাংশ স্তরের কাছাকাছি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টার অভিযোগ করে আসছে। অন্যদিকে, দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে বলে জোর দাবি করছে ইরান। তেহরানের এই কঠোর অবস্থান ওয়াশিংটনকে পরমাণু আলোচনায় স্পষ্টতা নিশ্চিত করতে চাপে ফেলবে বলে ধরণা করা হচ্ছে।
ঠিকানা/এএস