থাইল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা মঙ্গলবার দেশে ফিরতে চলেছেন। একই দিনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় ভোটে রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁর মেয়ে। ২০০৬ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে ৭৪ বছর বয়সী এই বিলিয়নেয়ারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল এবং ১৫ বছর তিনি স্ব-নির্বাসনে কাটিয়েছেন। থাকসিন দীর্ঘদিন ধরে বলেছেন যে তিনি দেশে ফিরতে চান, তবে একাধিক অপরাধমূলক অভিযোগের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে তাঁকে বার বার বাধা দেয়া হয়েছে। থাকসিনের দাবি সেইসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার মেয়ে পায়েংটার্ন সিনাওয়াত্রা, যিনি ফেউ থাই পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থীদের একজন, ইনস্টাগ্রামে বলেছেন, “মঙ্গলবার, ২২ শে আগস্ট, সকাল ৯ টায় আমি আমার বাবা থাকসিনের সাথে ডন মুয়াং বিমানবন্দরে সাক্ষাৎ করবো। তিনি নিশ্চিতভাবেই এবার বাড়ি ফিরছেন।”
শনিবার থাকসিন বিবিসি থাইকে বলেন, ‘‘আমি মানুষকে বিরক্ত করতে চাই না। আমি চাই সবাই একে অপরকে ভালোবাসুক। আমি চাই দেশটি শান্তিপূর্ণ হোক। আমি বৃদ্ধ, আমি আমার নাতি-নাতনিদের মিস করি, আমি আমার পরিবারের সাথে থাকতে চাই।’’ তার প্রত্যাবর্তনের দিনই বিকেলের ভোটে নিশ্চিত হয়ে যাবে স্রেথা থাভিসিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দেয়া হবে কিনা এবং মে মাসের সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে কয়েক মাসের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার অবসান হবে কিনা।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য স্রেথাকে ৫০০ জন নির্বাচিত সংসদ সদস্যের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে হবে, ৫০ সদস্যের সেনেট যা রাজ্যের শেষ জান্তা দ্বারা নির্বাচিত হয়েছিল। প্রগতিশীল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি (MFP) নির্বাচনে সর্বাধিক সংসদীয় আসন জিতেছে, কিন্তু রাজ্যের কঠোর আইন সংস্কার করার জন্য একটি বিতর্কিত নীতির জন্য সিনেট তার নেতাকে প্রধানমন্ত্রী হতে বাধা দেয়। ফেউ থাই দৌড়ে দ্বিতীয় হয়ে সরকার গঠনের চেষ্টা করছে। যদিও তিনি দীর্ঘদিন দূরে রয়েছেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশা করেন না যে থাকসিনের উপস্থিতি বিক্ষোভের জন্ম দেবে।
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভেরাপাট পারিয়াওং বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি থাই জনগণ থাকসিনকে ছেড়ে এগিয়ে গেছে। থাকসিনের আগমনের পর তাকে সম্ভবত আদালতে তোলা হবে।’’
থাকসিনের প্রত্যাবর্তনের অর্থ হলো তিনি আত্মবিশ্বাসী যে ইংল্যান্ডে অবতরণ করলে তিনি রাজনৈতিক খেলার শিকার হবেন না এবং তিনি একটি আরামদায়ক জীবন যাপন করতে পারবেন। তবে প্রশ্ন উঠছে আদৌ থাকসিন ফিরবেন কিনা। যদি হ্যাঁ হয় তাহলে তিনি সেই আশ্বাস কোথা থেকে পেলেন? ২০০৮ সাল থেকে থাকসিন আত্ম-নির্বাসনে বসবাস করছেন, বেশিরভাগ দুবাইতে এবং নিয়মিতভাবে ক্লাবহাউস সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে টনি উডসাম উপনাম ব্যবহার করে সমর্থকদের সামনে আসেন। বিদেশে থাকাকালীন সময়ে তাকে চারটি ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল । যদিও থাকসিন বরাবরই বলে এসেছেন, তিনি ন্যায়বিচারের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। সূত্র: ডন
ঠিকানা/এসআর