পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে কিছুদিন আগে। ক্যাথলিক চার্চে এখনো নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে এই শোক। কিন্তু এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এআই দিয়ে নির্মিত একটি ছবিতে নিজেকে পোপের সাজে পোস্ট করে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের রোষানলে পড়েছেন।
গত শুক্রবার (২ মে) রাতে নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম এবং হোয়াইট হাউসের সরকারি এক্স অ্যাকাউন্টে ছবিটি প্রকাশ করেন ট্রাম্প। ছবিতে তাকে পোপের সাদা পোশাকে, সোনালি ক্রুশের লকেট গলায় এবং বিশপদের টুপি পরে আকাশের দিকে আঙুল তুলে থাকতে দেখা যায়।
এই ঘটনার পরদিন শনিবার ছবিটি নিয়ে ভ্যাটিকানে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কার্ডিনালরা রোমে জড়ো হচ্ছেন নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য।
সম্প্রতি ট্রাম্প মজা করে বলেছিলেন, ‘আমি পোপ হতে চাই।’ এই মন্তব্যের পর ওই ছবি পোস্ট করলে ক্ষোভ বাড়ে।
ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি একে ‘বিশ্বাসীদের অপমান’ এবং ‘প্রতিষ্ঠান নিয়ে কৌতুক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ডানপন্থী রাজনীতির নেতা হিসেবে ট্রাম্পের এই আচরণ লজ্জাজনক।’
নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাথলিক কনফারেন্স এক বিবৃতিতে লিখেছে, ‘মি. প্রেসিডেন্ট, এই ছবিতে বুদ্ধিদীপ্ত কিংবা মজার কিছু নয়। আমরা সদ্য আমাদের প্রিয় পোপ ফ্রান্সিসকে বিদায় জানিয়েছি। কার্ডিনালরা এখন নতুন সেন্ট পিটার্সের উত্তরসূরি নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। আমাদের উপহাস করবেন না।’
ইতালি ও স্পেনের একাধিক গণমাধ্যম ছবিটির রুচিহীনতা ও শোকভঙ্গের বিষয়টি তুলে ধরে সমালোচনা করেছে। বামঘেঁষা ইতালীয় দৈনিক ‘লা রিপাবলিকা’ ছবিটি নিজেদের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশ করে ট্রাম্পকে ‘অহংকারে ভোগা রোগী’ বলেও মন্তব্য করেছে।
সমালোচনার জবাবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানান, ট্রাম্প ক্যাথলিকদের অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার একজন প্রবল সমর্থক। ট্রাম্প নিজে ক্যাথলিক নন এবং নিয়মিত গির্জায় না গেলেও তিনি পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন।
এদিকে রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এই বিতর্কের মাঝেও ট্রাম্পের প্রতি মজা করে সমর্থন জানিয়ে লিখেছেন, ‘প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট-পোপ—চমৎকার সম্ভাবনা! হোয়াইট স্মোকের অপেক্ষায় আছি, ট্রাম্প ২০২৮!’
ঠিকানা/এনআই