নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : নিউইয়র্কের স্মল বিজনেসকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নতুন করে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের লোন দেওয়া হচ্ছে। এই লোন পাওয়ার যোগ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো আবেদন করতে পারবে। কোন প্রতিষ্ঠান কত অর্থ পাবে, এটি নির্ভর করবে আয়ের ওপর। যাদের কাছে সরকারের ট্যাক্স পাওনা রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে না। যারা লোন নিয়েছে কিন্তু তাদের পেমেন্ট চলছে, তারা আবেদন করতে পারবে। আবেদন করার পর সব যোগ্যতা বিচার করেই লোনের অর্থ দেওয়া হবে। এই লোনের আবেদন করার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসের স্টাফসংখ্যা থাকতে হবে ১০০ জনের কম। ১০০ জনের বেশি স্টাফ হলে আবেদন করা যাবে না। আবেদন করতে হবে New York Forward Loan Fund (nyloanfund.com)-এ।
ফরওয়ার্ড ফান্ডে আবেদন করার জন্য বেশ কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটির অবস্থান নিউইয়র্কে হতে হবে এবং নিউইয়র্ক স্টেটের রেজিস্টার্ড হতে হবে। ব্যবসার বয়স কমপক্ষে এক বছর হতে হবে। কোম্পানির ট্যাক্স ফাইল থাকতে হবে। ট্যাক্স ফাইল না থাকলে সিপিএ দ্বারা প্রতিষ্ঠানের আয়ের হিসাবের কপি দিতে হবে। অফিসের স্টাফসংখ্যা ১০০ জনের নিচে থাকতে হবে। আয় থাকতে হবে ৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি। একেকটি কোম্পানি ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত লোন নিতে পারবে। এর আগে যারা লোন নিয়েছে, তারাও আবেদন করতে পারবে। লোন নেওয়ার জন্য প্রথমে আবেদন করতে হবে প্রি অ্যাপ্লাই সাইটে গিয়ে। আবেদন করার পর সেটি নির্বাচিত হলে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
গত ২০ জুলাই নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল নিউইয়র্ক ফরওয়ার্ড লোন তহবিল-২ ঘোষণা করেন। সেখানে বলা হয়, নিউইয়র্কের বিস্তীর্ণ স্টেট ক্ষুদ্র ব্যবসা ক্রেডিট উদ্যোগ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এম্পায়ার স্টেট ডেভেলপমেন্টের নেতৃত্বে এই মূলধন আগামী আট বছরের জন্য চালু থাকবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর ও অলাভজনকদের, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের ও ঐতিহাসিকভাবে ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত কমিউনিটি এবং গ্রামীণ ব্যক্তিদের সাহায্য করার দিকে মনোনিবেশ করবে। বিতরণ ও বিপণন থেকে সুবিধা সংস্কার পর্যন্ত এই অর্থ খরচ করা যাবে। এর মধ্যে অফিসের স্টাফদের বেতন-ভাতা দেওয়া, অফিসের অপারেশনাল খরচ এবং কোনো অফিস কেনার দরকার হলে কিংবা সংস্কার দরকার হলে, সেটি কেনা যাবে ও সংস্কার করা যাবে। লোনের অর্থ ব্যক্তিগত কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে বিনা মূল্যে সহায়তা পরিষেবাগুলো ঋণ চলাকালীন ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করবে।
গভর্নর ক্যাথি হোকুল বলেন, নিউইয়র্কে ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের স্টেটের অর্থনীতির প্রাণ এবং এগুলো নিউইয়র্ক স্টেটকে উন্নয়নশীল ও শক্তিশালী করার জন্য আবশ্যক। ব্যাপক যোগ্যতার সঙ্গে এই নতুন ও উন্নত নিউইয়র্ক ফরওয়ার্ড ঋণ তহবিলটি মহামারি চলাকালে ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করার জন্য প্রথম তহবিলের সাফল্যের ওপর বৃদ্ধি করে গড়ে ওঠে। স্টেটজুড়ে আরও ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের অবিরত বৃদ্ধি ও উন্নতিতে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
সূত্র জানায়, এই লোন পেতে হলে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে স্মল বিজনেসের আওতাধীন হতে হবে। রিয়েল এস্টেট খাতে হিউজ ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি হিসেবে কাজ করে, পলিটিক্যাল লবিস্ট ফার্ম হিসেবে কাজ করে, সরকার ও স্টেটের লোন বকেয়া রয়েছে, সিকিউরিটি বিজনেসের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান লোন পাবে না। গেমিং কোম্পানি বা প্রোহেবিটেড কোম্পানি হলে হবে না, নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান এই লোন পাবে।
লোনের ইন্টারেস্ট রেটের ব্যাপারে বলা হয়েছে, একটি কোম্পানি যোগ্যতা সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত লোন পেতে পারে। এই লোনের ইন্টারেস্ট রেট ৯.২৫ শতাংশ থেকে ১২.২৫ শতাংশ পর্যন্ত হবে। এটা নির্ভর করবে ওই কোম্পানি কত দিনের জন্য লোন নিচ্ছে। স্মল বিজনেসের মোস্ট রিসেন্ট ট্যাক্স রিটার্নের কপি লাগবে। ব্যবসাতে যারা মালিক রয়েছেন, তাদের সবার তথ্য থাকবে। বলা হয়েছে, ব্যবসায় যারা মালিক আছেন, তাদের ২০ শতাংশের বেশি মালিকানা থাকলে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল অ্যাড্রেস, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য দিতে হবে। ব্যবসার রেজিস্টার্ডের সব নথিপত্র জমা দিতে হবে। এই লোন স্টেট সরাসরি দেবে না লোন লেন্ডারের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। পার্সোনাল ক্রেডিট লাইন চেক করা হবে।
স্মল বিজনেস নিউইয়র্কের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে বড় ভূমিকা রাখছে। এ কারণে স্টেট থেকে এদের জন্য বড় ধরনের ফান্ডিং দেওয়া হচ্ছে। এর আগে এই ফান্ডের প্রথম পর্ব দেওয়া হয়েছিল।