নিউইয়র্কের ঐতিহ্যবাহী নাট্য সংগঠন- ড্রামা সার্কল-এর উদ্যোগে বর্ষবরণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর, সাপ্তাহিক নিউইয়র্ক সময় সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ জিকু, বর্ণমালা সম্পাদক মাহফুজুর রহমান।
ড্রামা সার্কলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও প্রবাসের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নার্গিস আহমেদ বলেন, আজ আমাদের অনেক প্রিয় মুখ হয়তো পাশে নেই। কিন্তু যারা এখনো আছেন, তাদের আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও সহযোগিতায় এই প্রবাসেও আমরা ড্রামা সার্কলের বিশুদ্ধ ও সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চা ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা কখনো চাঁদাবাজির আশ্রয় নিইনি। বরং স্বতঃস্ফূর্তভাবে, নিজেদের উদ্যোগে, পরিশ্রম আর দায়বদ্ধতা থেকে প্রতিটি আয়োজন করে থাকি। আমাদের লক্ষ্য- সংস্কৃতিকে বাণিজ্যিক নয়, হৃদয় দিয়ে তুলে ধরা।
নাসাও কলিসিয়ামে ড্রামা সার্কলের ঐতিহাসিক আয়োজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেই আয়োজনে শত বাধা-বিপত্তি থাকলেও আমরা কমিউনিটির সহযোগিতায় একটি সুসংগঠিত, প্রাণবন্ত ও আলো ছড়ানো অনুষ্ঠান উপহার দিতে পেরেছিলাম। কেউ কেউ চেয়েছিলেন সেটি থেমে যাক, কিন্তু সত্যিকারের সংস্কৃতিমনা মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় সেই চেষ্টা সফল হয়নি। তথাকথিত কিছু নেতা আদা-জল খেয়ে মাঠে নামলেও জনগণের পাশে দাঁড়ানো ভালোবাসা ও বিশ্বাসের কাছে তারা হার মানেন।
নার্গিস আহমেদ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ড. দেলোয়ার হোসেনের মতো গুণী, সজ্জন ও প্রজ্ঞাবান মানুষরা যখন এগিয়ে আসেনÑ অর্থ, সময় ও উৎসাহ দিয়ে, তখন আমরা অনুপ্রাণিত হই। এই সহযোগিতা আমাদের সংস্কৃতির পথচলায় আলোর দিশা দেখায়।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ড্রামা সার্কল সবসময় স্বচ্ছতা, শৃঙ্খলা ও দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কাজ করে গেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।
শুভেচ্ছা পর্বের পর শুরু হয় বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শুরুতেই ড্রামা সার্কলের শিল্পীরা পরিবেশন করে উদ্বোধনী বৈশাখী সংগীত। অংশগ্রহণ করে চন্দন চৌধুরী, জাফরিন আবেদীন, লেমন চৌধুরী, কান্তা আলমগীর ও ফারহানা তুলি।
এছাড়াও অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ে সংগীত পরিবেশন করেন হোসেন জব্বার শৈবাল ও ফারজানা মমো।
অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকটি পর্বে নীলা ড্যান্স একাডেমি ও অন্তরা সাহা নৃত্য দলের শিল্পীদের পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় নৃত্যানুষ্ঠান।
আবৃত্তি করেন ডা. ফারুক আজম। যন্ত্র সংগীতে কীবোর্ডে মাসুদ রহমান, অক্টোপ্যাডে তুষার রঞ্জন এবং বেজ গিটারে আকাশ আহসান।
এ বছর বিশেষ সম্মাননা জানানো হয় ড্রামা সার্কলের উপদেষ্টা, কমিউনিটির অতি পুরনো বিশিষ্টজন ড. দেলোয়ার হোসেনকে। কমিউনিটি বিনির্মাণ এবং ড্রামা সার্কল-এর দীর্ঘদিনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদানের জন্য ড. দেলোয়ার হোসন এবং তার সহধর্মিণী ডা. দিলরুবা হোসেনকে উত্তরীয় পরিয়ে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে শত শত অতিথির পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মকর্তা, সংস্কৃতিজন এবং কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা।