আনন্দধ্বনির আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে তাদের নান্দনিক পরিবেশনায় মুগ্ধ দর্শক- শ্রোতা। শত শত দর্শক প্রশংসা করেছেন তাদের এই আয়োজনের। অত্যন্ত সুন্দর ও ঘোছালো একটি অনুষ্ঠান। ১৪৩২ বাংলা বছরকে বরণ করে নেওয়ার জন্য কুইন্স স্যোশাল এডাল্ট ডে কেয়ার সেন্টার ইনক-এর পেজেন্ট আনন্দধ্বনি ও টিএন২৪ এর আয়োজনে বর্ষবরণ ‘১৪৩২ ও বাংলা গানের আসর’এর আয়োজন করা হয়। গত ১৩ এপ্রিল রোববার বিকেল ৫টায় জ্যামাইকার দ্য মেরি লুইস একাডেমিতে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মঞ্চে আসে শিশু শিল্পীরা। অনুষ্ঠানের সূচনা ভাষ্যকার ও সঞ্চাচলায় ছিলেন হাফসা, মেহের ও অর্ঘ্য। সেতার ও আলাপে ছিলেন ইন্দ্রজিৎ রায় চৌধুরী, পিনু, দেবু। কোরাস গান ‘আজি এ আনন্দসন্ধ্যা’ দিয়ে গানের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ‘এ কথাটি মনে রাখিস’ পরিবেশন করেন লিলি মুজমুদার, ‘পরের জায়গা পরের জমিন’‘ গানটি পরিবেশন করেন তরুন চন্দ, প্রথম আলো আবৃত্তি করেন ক্ল্যারা রোজারিও, রাজীব সরকার পরিবেশন করেন ‘আমায় ভাসাইলিরে আমায়’, পুজা সিনহা রায় পরিবেশন করেন ‘আমার প্রাণে গভীর গোপন’, শিশু শিল্পীরা পরিবেশন করে সমবেত কন্ঠে ‘বিপদে মোরে রক্ষা করো’, পূর্বাশা রায় পরিবেশন করেন ‘তুমি নব নব রূপে এসো’, সনজীদা খাতুনের স্মরণে পাঠ করেন শুক্লা রায়, বড়রা সমবেত কন্ঠে পরিবেশন করেন ‘পথে চলে যেতে’, রাজশ্রী সাহা রায় পরিবেশন করেন ‘একবার যেতে না আমার’, বড়দের কোরাস ছিল ‘ও আমার বাংলা মা তোর’, হৃদয় চৌধুরীর কন্ঠে ছিল ‘আমার সকল রসের ধারা’, আবীর ঘোষের পরিবেশনায় ছিল ‘তোমার আঁখির মতো’, কনিকা দাস-‘মোরে ডাকি লয়ে যাও’, এরপর ছিল বড়দের নৃত্য পরিবেশনা ‘এসো হে বৈশাখ’ গানের সাথে।
প্রতিমা সাহার কন্ঠে ‘আমরা মলয় বাতাসে’, সিমলা/হিমু/সুপতার পরিবেশনায় ‘সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে’, পার্থ সারথী সিকদারের কন্ঠে ‘সার্থক জনম আমার’, কোরাস ছিল শিশুদের পরিবেশনায় ‘লাখো লাখো শহীদের’ গানটি। গার্গী মুখার্জী আবৃত্তি-‘বিপ্লব’, নবনীতা চক্রবর্তী গান ‘মাগো ধন্য হলো জীবন’, প্রজ্ঞা বড়ুয়ার কন্ঠে ‘তুমি যে হে প্রাণের বধু’, উৎপলা অধিকারী টুম্পার কন্ঠে ‘আনন্দধারা বহিছে ভূবনে’ শোনা যায়।
বড়দের কোরাস পরিবেশনায় ছিল ‘আপনি অবশ হলি’, খালেদা আখতার পিয়ালের কন্ঠে ‘দীর্ঘ জীবন পথ’, তমা চক্রবর্তীর কন্ঠে ‘ওগো নিঠুর দরদী’, সৈকত মুখার্জীর পরিবেশনা ছিল ‘উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী’। শিশু নৃত্য ছিল-‘সংকোচন হ্বিলতা’ গানের সাথে। অর্ঘ্য সারী সিকদার পরিবেশন করেছেন ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’, শুল্কা সরকারের আবৃত্তি ছিল ‘আগমন’ কবিতাটি। প্রিয়াঙ্কা দাশের পরিবেশনায় ‘ওগো সাঁওতালী ছেলে’, বড়দের নৃত্য ছিল- ‘এ যে অন্ধকারে বসে বন্ধ গানের সাথে’। এরপর আবৃত্তি করেন মিথুন আহমেদ, কোরাস গান ছিল বড়দের কন্ঠে ‘যশোর খুলনা বগুড়া পাবনা’।
বর্ষবরণের ঘোষণা পাঠ করেন ডা. দেবাশীষ মৃধা/হাফসা, মোবারক হোসেন এর পরিবেশনা ছিল ঢোল বাজনা। এরপর অনুষ্ঠিত হয় বাংলা গানের আসর। এই পর্বটি পরিচালনা করেন শুক্লা সরকার। একক শিল্পী হিসাবে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শাহ মাহবুব, কৃষ্ণা তিথী, জয়ী চ্যাটার্জী, দেবজানী বর্ষা, আলভান চৌধুরী, জেরিন মায়শা, শাহীন শাহ। শাহীনের গান শেষ হওয়ার আগে এই সময়ে সকল শিল্পী মঞ্চে আসেন এবং জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার তৈরী জন্য হন। সর্বশেষ পরিবেশনা ছিল ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’। এই গানটি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
আয়োজকরা এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করেন তাদের অনুষ্ঠানের সব চেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো তারা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা পর্ব রাখেন না। আর এই বক্তৃতা পর্ব না থাকার কারণে যারা বর্ষবরণের এই অনুষ্ঠানের আনন্দ নাচ, গান, আবৃত্তি আর পহেলা বৈশাখে আমেজে করতে চান তারা উপভোগ করতে পারেন সকল পরিবেশনা।