Thikana News
২৫ এপ্রিল ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে অর্থ উপদেষ্টা

সংস্কার এগিয়ে না নিলে দেশে আবার ‘ডিজাস্টার’ হবে

সংস্কার এগিয়ে না নিলে দেশে আবার ‘ডিজাস্টার’ হবে ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ
অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘমেয়াদি কোনো সংস্কারে হাত দেবে না। আর্থিক খাতের কিছু সংস্কার ডিসেম্বরের মধ্যে হবে। ব্যাংকখাত ও এনবিআরকে গতিশীল করতেও সংস্কার উদ্যোগ চলমান রয়েছে। তবে সবকিছুতেই এই সরকার পদচিহ্ন রেখে যেতে চায়। এসব ইতিবাচক কাজ ও সংস্কার কর্মসূচি যদি পরের রাজনৈতিক সরকার এগিয়ে না নেয়, তবে দেশ আবার ‘ডিজাস্টার’ হতে পারে। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এই আশঙ্কার কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরো যোগ করেন, ‘দেশে রাজনৈতিক সরকারের কোনো বিকল্প নেই। তবে আমরা যারা অন্তর্র্বতী সরকারে আছি আমাদের কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। আমাদের আগের যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের অনেকে ব্যাংকের মালিক, ইন্ডাস্ট্রির মালিক হয়েছেন। তারা নিজেরাই লুটপাট, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। আমাদের কারো মধ্যে এটা নেই। এতে জবাবদিহি নিশ্চিতে সুবিধা হচ্ছে।’
১৮ মার্চ মঙ্গলবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) এই টকশো সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে। যেখানে একক অতিথি হিসেবে ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আর্থিক খাতের সংস্কার কর্মূসচি ছাড়াও অর্থপাচার, দুর্নীতি, জাতীয় বাজেট, এলডিসি উত্তরণ, রাজস্ব, মূল্যস্ফীতির মতো বিষয়ে ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের নানা প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
গত কয়েক বছর ধরে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির কৃতিত্ব নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছে তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু বিগত ১৫ বছর ধরেই আর্থিক খাতে নানা লুটপাট হয়েছে, অন্তর্র্বতী সরকারের সময় এমন অভিযোগ সামনে আনা হচ্ছে। অথচ আগের সরকার স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যে রোডম্যাপ হাতে নিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত সেটাই অনুসরণ করছে এই সরকারও। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের দাবি একভাবে কী মেনে নেওয়া হচ্ছে? এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের অগ্রগতি গত ৫৩ বছরের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। রপ্তানি আয় বেড়েছে। দেশের অর্থনীতি বড় হয়েছে। কিন্তু গত ১৫ বছর যদি দুর্নীতি না হতো তবে অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিগত সরকারের পারফর‌ম্যান্স আরো ভালো হতো বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনীতি, নির্বাচন, সংবিধান- এসব বিষয়ে সংস্কার নিয়ে যতটা আগ্রহী, অর্থনীতি সংস্কারে সেই আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না, এমন অভিযোগ সামনে আনছেন সংস্কার-সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ। এ প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫ বছরের আর্থিক খাতের দুর্নীতি নিয়ে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে যে শ্বেতপত্র তৈরি হয়েছে, সেটা এক ধরনের প্রেসক্রিপশন। এর অথেনটিসিটি নিয়ে সাবধান থাকতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে শ্বেতপত্রটির তাত্ত্বিক দিক বেশি। কিন্তু তত্ত্ব দিয়ে অর্থনীতি চালানো যাবে না।
বর্তমান সরকারের মেয়াদ কত, তার সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে আসছে অর্থবছরের জাতীয় বাজেট এই সরকারকেই দিতে হবে। সেই বাজেট কেমন হতে পারে- এ নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগের সরকারের নেওয়া যেসব বড় প্রকল্পের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে, সেগুলো বন্ধ করা হবে না। তবে অনেক বছরে সামান্য কাজ হয়েছে, এগুলো বন্ধে করে দেওয়া হবে। আর আমরা বড় কোনো প্রকল্প নিচ্ছি না। স্থানীয় লেভেলে উন্নয়ন কাজ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি কীভাবে করা যায়- বাজেটে এসব বিষয় গুরুত্ব পাবে।’
সংস্কার করতে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তরুণরা দেশ নিয়ে নতুন স্বপ্ন তৈরি করেছে। যার কারণে সংস্কারের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর সব সংস্কারকই জনপ্রিয়তার বাইরে গিয়ে সংস্কার করেছেন। কারণ সংস্কার করতে হলে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হয়। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে এসব কথা বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা। তিনি আরো যোগ করেন, বর্তমান ক্ষমতাসীনরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহস নিয়ে অবস্থান নিচ্ছে না। সমন্বয়কদের নতুন দলটির অবস্থানও স্পষ্ট থাকছে না। তাই দেশের সার্বিক সংস্কার সেভাবে সম্ভব হবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কার কথাই বললেন ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা।
গত ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) এই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে। যেখানে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের উপস্থাপনায় এই টকশোতে অতিথিরা নারী ও শিশু নির্যাতন, মোরাল পুলিশিংসহ দেশের সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা বলেন।
দেশে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় প্রতি বছরই বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন থেকে আহ্বান থাকে। এবার এর বাইরেও এক ধরনের ‘মোরাল পুলিশিং’ দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখতে বাধ্য করার কিছু ঘটনা রয়েছে। এছাড়া দিনের বেলা আহার করার কারণে ব্যবসায়ী নেতা গিয়ে একজনকে কান ধরে উঠবস করাচ্ছেন, এমন ঘটনাও ভাইরাল হয়েছে। শুধু এটা নয় কোনো ধরনের মোরাল পুলিশিংই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। তিনি বলছেন, গত ১৫ বছর  আওয়ামী লীগ সামাজিক বোঝাপড়ার জায়গা নষ্ট করে দিয়েছে। মোরাল পুলিশিংয়ের ভিডিও সেই সময়ও দেখা যেত। সামাজিক বোঝাপড়া না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। তাই সামাজিক বোঝাপড়া কীভাবে তৈরি করা যায়, সেই উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে সম্প্রতি ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নিপীড়নের নানা ঘটনা সংবাদমাধ্যমে আসছে। এ প্রসঙ্গে নারী ও শিশু অধিকার বিষয়ক গবেষক ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, নারীর প্রতি সহিসংতা কোনো ক্ষমতাকেন্দ্রিক বিষয় না। এ বিষয়ক অসমতা সমাজে ও রাষ্ট্রে সবসময়েই বিরাজমান। তবে যখন রাষ্ট্রে অরাজকতা বেশি থাকে, তখন নারী নিপীড়নের মাত্রাও বেড়ে যায়- বলছেন তিনি।
তিনি আরো যোগ করেন, দেশে নারীর জন্য সমতা তো দূরের কথা, নারীবান্ধব কোনো পরিবেশই নাই। কন্যা শিশুর সুরক্ষার জন্য পর্যন্ত আন্দোলন করতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে যারা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েম করতে চায়, তাদের স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে। নইলে নয়া বন্দোবস্ত হবে হতাশাজনক। তবে নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো আদর্শিক বা জাতীয়তাবাদী জায়গা থেকে নয়, মানুষের অধিকারভিত্তিক রাজনীতি করতে চায়, বলছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। তার ভাষ্যমতে, ‘এনসিপি মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে চায় যেখানে সব মতাদর্শের মানুষের জায়গা হবে। আমরা সব ধর্মের মানুষের জায়গায়গুলো নিরাপদ করতে চাই।’
-
ঠিকানা/শই
 

কমেন্ট বক্স