Thikana News
১৩ মার্চ ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি

স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি সংগৃহীত
দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। তারা সবার আগে চায় জাতীয় নির্বাচন। অন্যদিকে সরকারি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচন দাবি করেছে। তাদের দাবির পক্ষে জোরালো সমর্থন জোগাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। জামায়াতে ইসলামীও নীরবে এ দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পরস্পর বৈরী এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সরকারের দিক থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসায় ইসি সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হলে দেশে গৃহযুদ্ধ দেখা দেবে, অর্থাৎ রক্তক্ষয়ী হানাহানি, মারামারির আশঙ্কা করছেন তিনি।
স্থানীয় সংস্থাসমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠানেরও দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। স্থানীয় সরকার সংস্থাসমূহ সরাসরি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বলে নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে নির্বাচনের সময় সম্পর্কে নির্দেশনা আশা করে থাকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নির্বাচন নিয়ে পরস্পর বিপরীত অবস্থানে থাকার পরও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত দিচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন, এই নির্লিপ্ততার মাধ্যমে মন্ত্রণালয় বৈষম্যবিরোধীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনের আগেই সরকার স্থানীয় সংস্থার নির্বাচনের পক্ষে।
স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর প্রধান স্তম্ভ ইউনিয়ন পরিষদ। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে গ্রামের মানুষদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ-উদ্দীপনা দেখা দেয়। আগামী বছরের প্রথম ভাগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সরকার চাইলে মেয়াদপূর্তির ছয় মাস আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে থাকে।
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী এবং তাদেরই গড়া নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার পক্ষে। তারা ডিসেম্বরের মধ্যে স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচনের দাবি করেছে। উদ্দেশ্য, এর মাধ্যমে দেশের জেলা, উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও তাদের দলকে প্রতিষ্ঠিত তোলা। স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে এবং নতুন কর্মী-সমর্থকদের জড়ো করে শক্ত ভিতসম্পন্ন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট তারা। শিক্ষার্থীরা অনেক জায়গায়ই এরই মধ্যে প্রার্থীও চূড়ান্ত করেছেন। তৃণমূলে দলকে গড়ে তুলে তারা জাতীয় নির্বাচন জোরালোভাবে করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় সরকার সংস্থাসমূহের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তর ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার। এর মধ্যে চার হাজারের বেশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা পালিয়েছিলেন। গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে, নানা অনিয়ম-দুর্নীতির ভয়ে তারা অফিস না করে আত্মগোপনে ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের কাছে তারা নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের নেতৃত্বেই প্রধানত তৃণমূলে সংগঠন গড়ে তুলছেন। ডিসেম্বরে তাদের প্রস্তাবিত সময়ে ও ব্যবস্থায় নির্বাচনের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই নির্বাচনে বৈষম্যবিরোধীদের ছায়াতলে থাকা ব্যক্তিরাই প্রার্থী হবেন। তারাই হবেন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ের বৈষম্যবিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিনিধিত্বকারী।
জানা গেছে, ইউনিয়ন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ মিলিয়ে আত্মগোপনে থাকা সত্তর হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধি বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছেন। তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ দলীয় এবং স্বল্পসংখ্যক বিএনপি ও এরশাদের জাতীয় পার্টির।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকার সংস্থাসমূহের নির্বাচন দলীয় প্রতীক ভিত্তিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে। এর মাধ্যমে তৃণমূলেও নির্বাচনী কলহ, হিংসাত্মক প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে তোলা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার এ ব্যবস্থা রহিত করে পূর্ববর্তী ব্যবস্থায় নির্বাচন করার পক্ষে বলে জানা যায়।
 

কমেন্ট বক্স