মো. আবু তাহের চৌধুরী
সাতচল্লিশ বায়ান্ন উনসত্তর সত্তরে
যারা হত্যা করতে চেয়েছিল তোমাকে
তারা হত্যা করবে তো দূরে থাক, পারল না
ফুল দিয়েও একটা ঢিল ছুড়িতে।
কিন্তু কে জানিত, তাদের প্রেতাত্মা রয়ে গেছে ঘাপটি মেরে, স্বাধীন এই বঙ্গভূমিতে।
ব্যর্থ হয়ে রাজপথ কারাগার বন্দিশালায়,
পশ্চিমে বসিয়া পুবে ষড়যন্ত্র চালায়।
পশ্চিমের হায়েনারা পারিল না যাহা
বাংলার মীর জাফররা করিল তাহা।
পাপিষ্ঠ ঘাতক হিংস্র জানোয়ারের দল
থামেনি শুধু বঙ্গবন্ধু তোমায় করিয়ে কাতল।
তোমার সকল প্রেরণার প্রতীক বঙ্গমাতাকেও,
পাষণ্ড ঘাতকেরা নিষ্ঠুরতায় হত্যা করিল তাকেও।
সিমার এজিদরা বাঁচাতে নিজের পিঠের ছালকে,
হত্যা করিল কামাল, জামাল, শিশু রাসেলকে।
সুলতানা কামাল রোজী জামাল তাদেরকেও,
হায়েনারা প্রাণে বাঁচিতে নাহি দিল।
শহীদ হলেন শেখ নাসের সরলমনা,
কর্নেল জামিল আর মাহবুব সেনা।
কী দোষ করেছিল অন্তঃসত্ত্বা আরজুমণি,
আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ফজলুল হক মণি।
বঙ্গবন্ধুর বংশ বুঝি করিতে নিপাত,
হত্যা করিল সুখান্তবাবু সজীব সেরনিয়াবাত।
বাদ যায়নি কঁচি বেবী আরিফ বেন্টুখান,
শহীদ হলেন এক পরিবারের তাজা কুড়িটি প্রাণ।
এমন বেদনাবিধূর হত্যাকাণ্ড যখন ঘটিল,
বাংলার মানুষ অশ্রুজলে শিহরিয়া উঠিল।
রোধ করিতে বিচার প্রতিবাদ আন্দোলন,
বর্বরতায় জারি করিল সামরিক শাসন।
আইন করিয়া হত্যার বিচার বন্ধ করিল,
বহুকাল জাতি বিচার চাহিয়া বুক চাপড়াইল।
অবশেষে মানবতার জননী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায়,
বিচারে বিলম্বে হলেও জাতির কলঙ্ক মুছে যায়।
বঙ্গবন্ধু পরপারে যাওয়ায়-আমরা এতিম
হয়েছি বটে, তবে বিচার হয়েছে, শান্তি পাইÑ
যদিও কলঙ্ক ললাটে ॥