Thikana News
২৭ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

হৃদয়বিদারক ও শোকাবহ ১৫ আগস্ট পঁচাত্তর

হৃদয়বিদারক ও শোকাবহ ১৫ আগস্ট পঁচাত্তর



 
মুহম্মদ শামসুল হক

নবাব আলিবর্দি খাঁর নয়নমণি বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মির জাফরের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের ফলে ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলা মায়ের সিথির সিঁদুর ভেসে গিয়েছিল ভাগীরথীর বানে। আর ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের খোয়ানো সম্ভ্রম এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কুলাঙ্গার মোশতাক গংদের প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের ফলে সপরিজনে নিহত হয়েছিলেন সহস্র বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

তাই বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের অলিগলি ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা স্বদেশপ্রেমিক বাঙালি জনগোষ্ঠীর শোক নতুন করে উথলে ওঠে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট। সর্বস্তরের বীর বাঙালি সকৃতজ্ঞচিত্তে, অশ্রুসিক্ত বদনে ও হৃদয়নিঃসৃত ভালোবাসায় সপরিজনে নিহত জাতির জনক এবং অন্য শহীদদের স্মরণ করেন এবং তাঁদের প্রতি সশ্রদ্ধ ভালোবাসা নিবেদন করেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ঘটনাবলির সবিস্তার আলোচনা এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত স্মৃতিচারণা ছাড়াও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে শহীদদের আত্মার চিরপ্রশান্তি কামনা করা হয়। এবারও জাতির জনকের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ এবং বহির্বিশ্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো এবং মহাজোট সরকারের পক্ষ থেকে পবিত্র কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল, কাঙালিভোজ, আলোচনা সভা ইত্যাদি কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

অবশ্য বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জাতীয় শোক দিবসের কিছুকাল আগ থেকেই জনমনে সাহারার লু হাওয়ার মতো নানা ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ঝড় বইতে শুরু করেছে। আবার সরকার এবং প্রতিপক্ষীয় রাজনৈতিক দলগুলোর উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য, সংঘাতময় কর্মসূচি এবং মাঠদখলের ঘৃণ্য প্রতিযোগিতা শান্তিপ্রিয় দেশবাসীকে দুশ্চিন্তার টর্নেডো অভিমুখে ঠেলে দিচ্ছে। তাই সরকার এবং বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং অত্যুৎসাহী কর্মী-সংগঠকেরা নিজেদের আবেগ-উচ্ছ্বাস ও কর্মতৎপরতার লাগাম যথাসাধ্য টেনে না ধরলে সংঘাত এবং অস্থিরতার ঘূর্ণিঝড়ে দেশের সহায়-সম্পদের অবর্ণনীয় ক্ষয়ক্ষতি অবধারিত বললে সম্ভবত বাড়িয়ে বলা হবে না।

সাবেক পূর্ব পাকিস্তান এবং সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব সামরিক-বেসামরিক আমলা-কামলা সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের মাঠ থেকে শীর্ষ পর্যায়ে কর্মরত ছিলেন, তারাই ১৬ ডিসেম্বর পরবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত ও সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রশাসনিক হাল ধরেন। পূর্ব পাকিস্তান থেকে রাতারাতি খোলস বদলে বাংলাদেশের আমলা-কামলা হিসেবে রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের প্রশাসনিক হাল ধরলেও তাদের চিন্তাচেতনা-ধ্যানধারণা-কর্মকাণ্ড-রুচিবোধে পরিবর্তনের দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো নমুনা মেলেনি। ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্ত অনুসারে, ১৮৩৫ সালে লর্ড ম্যাকেলে প্রবর্তিত ডাউনওয়ার্ড ফিলট্রেশন থিওরির ভাবধারায় শিক্ষিত বাঙালিদের দিয়েই ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষ শাসন করেছিল। 

অনুরূপভাবে প্রয়োজনের পটভূমিতে পাকিস্তানি প্রশাসনিক আদলে প্রশিক্ষিত আমলা-কামলাদের দিয়েই অগতির গতি হিসেবে জোড়াতালি দিয়ে বাংলাদেশের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের সূচনা হয়েছিল। আর রাজকীয় দৃষ্টিভঙ্গির বাতিকগ্রস্ত আমলাদের অহমিকাবোধের কারণে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে জনসেবা এবং দেশবাসীর কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড গোড়াতেই চরমভাবে হোঁচট খেল। তা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খন্দকার মোশতাক, তাহের উদ্দিন ঠাকুরের মতো অনেক জাঁদরেল আওয়ামী লীগার দায়ে ঠেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিলেও তাদের ভূমিকা আগাগোড়া প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ ঠেকাতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো পঁচাত্তর-পূর্ববর্তী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে স্বাগত জানাতে ছিল পরাক্সমুখ।

এদিকে পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে পদার্পণ করলে আপামর জনগোষ্ঠী আহ্লাদে আটখানা হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কোনো রহস্যজনক কারণে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের যাবতীয় প্রশাসনিক দায়িত্ব স্বেচ্ছায় কাঁধে তুলে নিলেও বঙ্গবন্ধু যুদ্ধকালীন সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক নায়ক তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা কিংবা সলা-পরামর্শ করেননি। এমনকি দৈবশক্তি কিংবা জাদুমন্ত্রের প্রভাবে যুদ্ধকালীন সার্বিক পরিস্থিতির পাশাপাশি দলীয় শীর্ষস্থানীয় নেতাকর্মী ও মুক্তিযুদ্ধের সেনানীদের ভূমিকা সম্পর্কে জনাব তাজউদ্দীনের কাছ থেকে পুরোপুরি অবহিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তাও বোধ করেননি বঙ্গবন্ধু মুজিব। তাই সময়ের অগ্রযাত্রায় অকৃত্রিম দেশপ্রেমিক ও আওয়ামী লীগার তাজউদ্দীন ও মুক্তিযুদ্ধের একনিষ্ঠ সংগঠকগণ ধীর লয়ে কোণঠাসা হতে থাকেন এবং মোশতাক গংদের প্রশাসনিক আধিপত্য ডালপালা মেলে বিশাল মহিরুহে পরিণত হতে থাকে। 

আবার সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের পাকিস্তান প্রত্যাগত সেনাসদস্যদের চেয়ে দুই বছরের জ্যেষ্ঠতা প্রদান সেনাবাহিনীতেও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছিল। এ ছাড়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী শেখ ফজলুল হক মণি ও রাজনীতির রহস্যপুরুষ সিরাজুল আলম খানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে রব-জলিলের নেতৃত্বে জাসদের আত্মপ্রকাশ ছিল বাংলাদেশের রাজনীতির ভাগ্যাকাশে রীতিমতো অশনিসংকেত। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী রাজাকার-আলবদর-আলশামস প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাসদের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে এবং নানাভাবে দলের নেতাকর্মীদের মদদ ও উসকানি দিতে থাকে। একপর্যায়ে সশস্ত্র বিপ্লবের নামে ক্ষমতা দখলের ভুল সিদ্ধান্তের জেরে জাসদ সমর্থক উঠতি বয়সী কিছুসংখ্যক সশস্ত্র ছাত্র ও মুক্তিযোদ্ধা গুপ্তহত্যা শুরু করে এবং অত্যন্ত বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সমাজতন্ত্রের ভুল ব্যাখ্যায় উদ্বেলিত এই উঠতি বয়সী যুবকেরা সর্বস্তরে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলা শুরু করে এবং সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আরোহণের দিবাস্বপ্নে মেতে ওঠে। 

জাসদের নেতাকর্মীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে হামলাসহ নানা ধরনের অরাজনৈতিক ও চরম হঠকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মেতে ওঠে। অন্যদিকে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরপরই একশ্রেণির বুভুক্ষু আওয়ামী লীগারও বিহারিদের সহায়-সম্পদ, হিন্দু-সরকারি-বেসরকারি সম্পদ দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে দেশপ্রেমিক আওয়ামী লীগারদের মুখে কলঙ্কের কালিমা লেপন করে। সেই চরম দুর্যোগঘন মুহূর্তে সরকার অস্তিত্ব বজায় রাখার খাতিরে প্রতিপক্ষীয় রাজনীতিকদের প্রতি অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালায়। বিশেষত, রক্ষীবাহিনী নামক সরকারগঠিত বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা এ সময় জাসদের রাজনীতিকদের প্রতি নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। আবার একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে পাটের গুদামে আগুন লাগানোসহ নানা ধরনের অপকর্মের মাধ্যমে নিজেদের আখের গোছায় এবং প্রশাসনে লেজেগোবরে পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

এমনতর মাৎস্যন্যায় পরিস্থিতিতে সুযোগসন্ধানী স্বাধীনতাবিরোধী এবং একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের যোগসাজশে জাতির জনকের জনপ্রিয়তায় চিড় ধরায়। আবার দীর্ঘকালীন খরা ও অনাবৃষ্টি এবং অনাকাক্সিক্ষত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ব্যাপক ফসলহানি দেশকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দেয়। কিছু মিডিয়ার নেতিবাচক প্রচার, আমলা-কামলাদের কুকীর্তি, দলীয় কিছু লোকের ডাকাতি সরকারকে চরম বেকায়দায় ফেলে। 

আবার একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার চুয়াত্তর ও পঁচাত্তরের চরম দুর্ভিক্ষের সময় বিশেষ কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের কেনা গম সঠিক গন্তব্যের স্থলে অন্যত্র প্রেরণ করে। ফলে বাংলাদেশে সেই কেনা গম পৌঁছাতে বহু বিলম্ব হয় এবং তত দিনে জনগণের দুর্ভোগ তুঙ্গে ওঠে এবং সরকারের প্রতি জনগণের বিদ্বেষ ও অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সেই চরম শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে সুযোগসন্ধানী ও মুখোশধারী-স্বার্থান্বেষী আওয়ামী লীগার এবং সামরিক-বেসামরিক আমলারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিজনে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। আর এভাবেই এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ও রক্তিম সূর্যখচিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে সংযোজিত হয় ঘৃণ্যতম কালো অধ্যায় এবং একাত্তরের পরাজিত শত্রুচক্রের রাজনীতিতে পুনরুত্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

নিরপেক্ষ পর্যালোচনার দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করলে বলা যায়, রক্ত-মাংসে গড়া একজন মানুষ ও রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধু ত্রুটি-বিচ্যুতির ঊর্ধ্বে ছিলেন না। তা সত্ত্বেও বাকশাল প্রতিষ্ঠা, স্মরণকালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, দলীয় লোকদের লোভ-লালসা, জাসদ কর্মীদের মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হুঁশিয়ারিতে কর্ণপাত না করায় বঙ্গবন্ধুকে সপরিজনে খুন হতে হয়েছে বলে অনেকে দাবি করেন। প্রকৃত প্রস্তাবে এসব  নিছক খোঁড়া যুক্তি এবং তা কোনোক্রমেই ন্যায়বিচারের আওতায় পড়ে না। বরং অনস্বীকার্য যে কিছুসংখ্যক বিপথগামী সেনাসদস্য ও খন্দকার মোশতাক মার্কা আওয়ামী লীগারই বঙ্গবন্ধুকে সপরিজনে নৃশংসভাবে খুন করে সমগ্র বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল বদনে অকৃতজ্ঞতা ও কৃতঘ্নতার কলঙ্ক লেপন করেছে। বিশেষভাবে স্মর্তব্য, ১৬ আগস্ট ১৯৭৫-এ ৬০ জন গভর্নরের শপথ ও দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে সারা দেশের সর্বস্তরের আওয়ামী লীগারই সশরীরে ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন। অথচ সেই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের পর কারও পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়নি। নিয়তির নির্মম পরিহাস হিসেবে খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারে বঙ্গবন্ধুর বেশ কয়েকজন চিরবিশ্বস্ত বন্ধু ও ডাইসাইটে মন্ত্রীও হাসিমুখে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

যাহোক, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারকাজ সম্পন্ন হওয়ায় এবং অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মাধ্যমে জাতি কিছুটা হলেও অভিসম্পাত ও কলঙ্কমুক্ত হয়েছে বলা চলে। আবার বিগত কয়েক বছরে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন, কর্ণফুলী টানেলসহ দেশের অভাবনীয় উন্নতি সাধিত হয়েছে। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট যুগেও পদার্পণ করেছে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রশ্নে বিদেশি কূটনীতিকদের বারবার ছোটাছুটি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, দুরারোগ্য ক্যানসারের মতো রাষ্ট্রযন্ত্রের শিরা-উপশিরায় ঘুষ-দুর্নীতির বিস্তার, পেশিশক্তির মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি, প্রতিপক্ষের প্রতি অসহিষ্ণু মনোভাব এবং কিছুসংখ্যক অত্যুৎসাহী আওয়ামী লীগারের অযাচিত নেত্রী-বন্ধনা সরকারকে দেশে-বিদেশে মোটামুটিভাবে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। তাই সবকিছু বিরোধীদের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে হাইব্রিড আওয়ামী লীগার এবং দুর্নীতিপরায়ণ আমলা-কামলা-রাজনীতিবিদ-সুবিধাভোগীদের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখা সময়ের দাবি বলে আমাদের বিশ্বাস।

জাতীয় শোক দিবসে সর্বস্তরের বাঙালির সঙ্গে আমরাও গভীরভাবে শোকাহত এবং ১৫ আগস্ট ও পরবর্তী সময়ে জেল হত্যাকাণ্ডসহ নানা অনাকাক্সিক্ষত হত্যাকাণ্ডে নিহতদের আত্মার চিরপ্রশান্তি কামনা করছি। হে বিশ্ববিধাতা, এবারের শোক দিবসে অতীতের যাবতীয় গ্লানি, হানাহানি, পরশ্রীকাতরতা, প্রতিহিংসা, দুর্নীতি, মাদকের বিষবাষ্প থেকে বাংলাদেশ এবং জাতি হিসেবে আমাদের পরিত্রাণ দাও। আমরা তোমার বিশেষ আশীর্বাদ ও রহমত কামনা করছি। আমিন! 

লেখক : সহযোগী সম্পাদক, ঠিকানা, নিউইয়র্ক। ৮ আগস্ট ২০২৩

কমেন্ট বক্স