আজ নয়না আসবে। নয়না আসবে আজ...নয়না। জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্টে একটি টেবিল দখল নিয়ে ধূমায়িত চায়ের কাপে ঠোঁট ভেজায় অসীম। রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প একচ্ছত্র বিজয় পেল। ডেমোক্রেটিক দলের কমলা হ্যারিসের চরম পরাজয়। পাশের টেবিলে এ নিয়ে তুমুল বাগবিতণ্ডায় কান পাতলেও মন পড়ে থাকে তার জেএফকে এয়ারপোর্টে। শাকিব খান অপু বিশ্বাসের সাথে মিলে গেছে, বুবলীর কী হবে, তাতে অসীমের কিছু যায়-আসে না। পরীমনির আরেক নতুন কেচ্ছা। তাতে অসীমের কী? এসব গল্প শুনতে আজ আর তার মোটেও কোনো আগ্রহ নেই। ছাত্র-আন্দোলন-জনতা ড. ইউনূস সরকারের সাথে কত দিন সুযোগ পাবে বাংলাদেশটাকে পুনর্গঠন করতে। অসীমের আজ আর সেদিকেও কোনো খেয়াল নেই। ‘জুলাই অভ্যুত্থানে’ গুলিবিদ্ধ আব্দুল্লাহ আজ ১৪ নভেম্বর মারা গেছেন। খবরটা শুনে কিছুক্ষণ থমকে থাকলেও পরক্ষণেই ভুলে যায় সে, কারণ সমস্ত ইন্দ্রিয় সত্তা দখল করে আছে একমাত্রÑআজ নয়না আসবে। নবান্ন রেস্টুরেন্টের চমক আড্ডায় আজ সে আর নিজেকে মেলাতে পারে না। তার মগজে কেবল একটা জিনিসই চক্রাকারে ঘুরছে-আজ নয়না আসবে। তার সন্তান সোনাও আসবে। দীর্ঘ পনেরো বছরের সাধনার আজ কাক্সিক্ষত ফল মিলবে। মাত্র এক সপ্তাহ কাছে পেয়েছিল এই প্রিয় মানুষটিকে সে। বিয়ের সাত দিন পরই তাকে বেছে নিতে হয়েছিল সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে আমেরিকার এই প্রবাসজীবন। সেই ১৫ বছর আগে টুকটুকে লাল পরিটা কী গভীর চাহনিতে এক মোহময় মায়ার ঢেউ তুলেছিল অসীমের দেহ-মনে। যার রেসটুকু নিয়ে এই প্রবাসজীবনে নিউইয়র্কের হাজার মানুষের ভিড়েও নিঃসঙ্গ অসীম এক অদম্য শক্তিতে দীর্ঘ ১৫ বছর দিনের পর দিন রাতের পর রাত পার করেছে কেবল আজকের দিনটার প্রত্যাশায়। সেই আজ-আজকেÑআজই তো নয়না আসবে। কাগজপত্রের জটিলতার কারণ অসীমকে এত বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে বাংলাদেশে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে কিংবা পরিবারকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে। এত বছর পর তা আজ সম্ভব হয়েছে। তাই তো আজ নয়না আসবে। জ্যাকসন হাইটসের বাঙালি ভিড় গলে অসীম এবার রাস্তায় নামে। লম্বা লম্বা পা ফেলে হাঁটতে থাকে। দু-একটা ক্ষণ বুঝি তার কাছে অনন্ত এক মহাকাল। পারলে সে এক লম্বা পায়ে চওড়া রাস্তাটা পার করে ফেলে।
কিন্তু মুহূর্তে ট্রাফিক সিগন্যালে পড়ে যায়। ভয়ানক আফসোস হয়Ñইশ্ আর এক সেকেন্ড লম্বা পা ফেললে এই দুঃসহ সিগন্যালটা পোহাতে হতো না। কিন্তু কী আশ্চর্য, সামনের সারির গাড়িটি থেমেই থাকে আর কী মনে করে হাত ইশারায় অসীমকে রাস্তা পার হতে নির্দেশ দেয়। পরম কৃতজ্ঞতায় মনটা ভরে যায় অসীমের অচেনা চালকের প্রতি। এবার ছোটে সাবওয়েতে ‘এক্সপ্রেস ই’ ট্রেন ধরবে বলে। কিন্তু সাবওয়েতে প্রচণ্ড ভিড়। কার আগে কে যাবে। সারা পথ স্বাভাবিকভাবে চলাচল করবে ঠিকই মানুষ কিন্তু সাবওয়েতে প্রবেশ করেই বুঝি এক দমকায় গতি বেড়ে যায়। সবার মধ্যে একপ্রকার তাড়াহুড়ো।
এই বুঝি ট্রেন ছেড়ে দিল। এই ট্রেনটাই তাকে ধরতে হবে। এই ট্রেনটা না ধরতে পারলে বুঝি মারাত্মক এক ক্ষতি হয়ে যাবে। আসলে ট্রেনের গতির প্রতিক্রিয়া মানুষের মধ্যেও বুঝি প্রতিফলিত হয়। অসীমও ভিড় উগরে সবার সাথে একরকম ঠেলেঠুলে বগিতে ঢুকে পড়ে। কী আশ্চর্য-দরজা-সংলগ্ন একটা সিট ফাঁকা। অসীম সটান বসে পড়ে। নিজেকে পরম সৌভাগ্যবান মনে করে। আসলে সবই নয়নার ভাগ্য।
আজ নয়না আসবে। আহা, আজ নয়না আসবে। আকস্মিক চোখ পড়ে অসীমের গায়ের সাথে প্রায় ঠেসে থাকা সহযাত্রীটির দিকে। ধবধবে সাদা তরুণী, খোলা রঙিন চুল, চোখের পাতায় অতিরিক্ত পাপড়ি বসানো কিন্তু সংক্ষিপ্ত বসনা। নাউজুবিল্লাহ! অস্ফুট উচ্চারণে একমুহূর্তেই মুখ ঘুরিয়ে নেয় অসীম। আপনাতেই মুখের পেশি শক্ত হয়ে ওঠে। সে বুঝে কুলিয়ে উঠতে পারে না। মেয়েটা তো এমনিতেই সুন্দর। নিজেকে কদর্যভাবে উন্মোচন করে সৌন্দর্য আর কী মহত্ত্ব জাহির করতে চায় সে।
তবে একটা ব্যাপারে তার বেশ ধারণা আছে। সেটা আমেরিকার পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। আমেরিকার পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীদের মুক্ত স্বাধীনতার নামে যথেচ্ছাচার ব্যবহার করে থাকে সুকৌশলে। যদিও প্রতিটি দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী পোশাক নির্বাচিত হয় কিন্তু আমেরিকায় নারীদের মুক্ত-স্বাধীনতার নামে খোলা পোশাক রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত। আর নারীদের এই পোশাক ছোট হতে হতে ক্রমে বিকিনি পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। এর নাম নারী স্বাধীনতা নয়। মুক্ত পোশাক মানে মুক্ত স্বাধীনতা নয়। সুকৌশলে নারীকে ভোগ করার এক অপপ্রয়াস এই নিষ্ঠুর পুরুষতান্ত্রিক সমাজের। এমনকি এই সবকিছু অবলা, অবুঝ নারীদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে কোনো লোভাতুর পুরুষ স্বাধীনতার নামে অনায়াসে লিভ টুগেদার করে নিজ ইচ্ছা অভিলাষ পূরণ করতে পারে। তাতে আইনগত কোনো বাধা নেই। ভোগ শেষে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভ্রƒণও তাদের জঠরে রেখে যেতে পারে বিনা দ্বিধায়। এতেও পুরুষের কোনো অপরাধ নেই। অপরাধী হবে নারীটি। সে পুরুষের রেখে যাওয়া এই ভ্রƒণটি যদি সমূলে উৎপাটন করে ফেলে দেয়, তা হবে আইনগত মহা অপরাধ। এই ভ্রƒণ হৃষ্টেপুষ্টে বড় হবে নারীদেহে। নারীর নাম-পরিচয়েই বেড়ে উঠবে সে, এতে পুরুষের কোনো দায় নেই। পুরুষের পক্ষে দায় নেবে পুরুষতান্ত্রিক মহান রাষ্ট্রব্যবস্থা। Ñহায় নারী! নিজেদের মস্তিষ্কের সেলিব্রাল কর্টেক্সে হিপোক্যাম্পাসের মাধ্যমে নিজেকে এমনভাবে সাজিয়ে নিয়েছে যে যত্রতত্র নির্বিকারে নিজের পুরোটাই উন্মোচন করাটাই তাদের ফ্যাশন। এই কাজে তাদের আর কোনো দ্বিধা নেই, নেই কোনো সংকোচ। একজনকে দেখে আরেকজন, এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকবে এইরূপ সামাজিক ধারা। কবে যে নারীদের ইন্দ্রিয় সজাগ হবে। নিজেদের মানুষ ভাবতে পারবে। থাক অসীমের এত কিছু ভেবে লাভ নেই। এসব ভাবার জন্য কমলা হ্যারিসরাই যথেষ্ট। তার এত মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই রে বাবা! তবে একটা জিনিস। আমেরিকায় মেয়েগুলো আসলেই সুন্দরী। এত সুন্দর যে, প্রথম প্রথম দেখে অসীমের মাথায়ই ঢুকত না, এরা কি আসলেই মানুষ নাকি হুরপরি বেহেশত থেকে নেমে এসেছে সরাসরি। আসলে এখানে নারীরাও আয়-ইনকাম করে। তাই নিজের টাকা নিজেরা ইচ্ছেমতো খরচ করে। যে যার মতো সাজুগুজু করে যেমন ইচ্ছে তেমন। কোনো বিধিনিষেধ নেই। বাংলাদেশের মতো তো আর নয় যে পরিবারের একজন আয়-ইনকাম করবে আর অন্য দশজন তার ঘাড়ে ঠ্যাং দিয়ে মহা আনন্দে যাবতীয় শখ-আহ্লাদ পূরণ করবে।
তবে অসীমেরও কিন্তু একটা শখ আছে। বেজায় শখ। সেই কবে থেকে, পনেরো বছর আগে থেকেই। এসব বিদেশি পোশাকে সে নয়নাকে সাজাবে। তারপর মনভরে দেখবে। সেই তেরো-চৌদ্দ বছর আগেই সে যাচাই-বাছাই করে বেশ কয়েকটি স্টোর ঘুরে কিনে রেখেছে এক সেট এ দেশের পোশাক। গোলাপি টি-শার্ট আর কালো প্যান্ট। সে এই পোশাকে কল্পনার রঙে কতবার সাজিয়েছে নয়নাকে কত রকমে। আজ সেই প্রত্যাশিত স্বপ্নকুঁড়ি ফুল হয়ে ফুটবে। রাত গভীরে তাদের মেয়েটা সোনামণি যখন ঘুমিয়ে যাবে, তখনই চুপেচাপে ওয়ার্ডরোব খুলে সেই কিনে রাখা পোশাকটি বের করে নয়নাকে বলবে-নয়ন, এই ড্রেসটা একটু পরে এসো না, দেখি এ দেশের পোশাকে আমার বউটাকে কেমন লাগে। নয়না লজ্জা পাবে। শত বাহানা করবে। না, অসীম শুনবে না, মানবে না কোনো অজুহাত। নয়নাকে তার পাতলা-লতানো শরীরে কালো প্যান্ট আর গোলাপি টি-শার্টে সেই আকাশ থেকে নেমে আসা ঠিক বেহেশতের হুরপরিদের মতোই লাগবে।
ট্রেন চলছে দুরন্ত বেগে। তার সাথে তাল রেখেই বুঝি অসীমের সারা শরীরের সমস্ত রক্তের শিরা-উপশিরায় সেই বেগ প্রবাহিত হতে থাকে। সেই সাথে অদ্ভুত এক শিহরণে অসীমেরও শরীর-মন চনমনে জেগে ওঠে। সাটফিন ব্লুবার্ড থেকে এয়ারট্রেনে অসীম সরাসরি জেএফকে এয়ারপোর্টের ৪ নং টার্মিনালে পৌঁছে যায়। রাত আটটায় এমিরেট ল্যান্ড করবে। কিন্তু কী আশ্চর্য, এতক্ষণেও সন্ধ্যা নামেনি। ঘড়ির কাঁটা অচল হয়ে গেল নাকি! একপ্রকার সন্দিহানে সে মোবাইলের সাথে ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে নেয়। ইশ্, আর কত দেরি।
রাত ভোর হয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু অসীমের চোখে ঘুম নামেনি। তার বাহুডোরে এ কোন নয়না? গভীর ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে আছে এক মধ্যবয়সী নারী। শরীরের ওজনের চেয়ে বুঝি তার পেটের ওজন বেশি। কই, সে পনেরো বছর আগের মায়া-মায়া চোখের লাজুক চাহনি। লাল শাড়ি পরা কাজলমাখা সেই মায়াবী চোখের চাহনির নয়নার সাথে আজকের এই নয়নার কোনো মিল নেই। বয়সের ভারে চামড়ার ভাঁজে চেহারায় আর কোনো কমনীয়তা নেই। খাটের রেলিংয়ে দলা হয়ে পড়ে আছে অসীমের অতি শখের কেনা সেই পোশাকটি-গোলাপি টি-শার্ট আর কালো প্যান্ট, যা নয়নার গায়ের মাপের সাথে একদম বেমানান। এই নয়না অসীমের স্বপ্নের সেই প্রিয় নয়না নয়। এ অন্য কেউ। মধ্যবয়সী এক নারী। ভেতরের ক্ষরণে সে একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়ে থাকে। অসীমের দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে লালিত স্বপ্নখানি কে যেন এক খামচি দিয়ে উগরে নিয়ে গেছে।
সেই সাত বছর বয়সে বাবা মারা গেছেন। কয়েক ফালি জমি আর ভিটেটা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। জীবন-চাকার সাথে মায়ের সেলাই কলের চাকা ঘুরিয়ে পর্যুদস্ত মা। শেষে ভিটের একাংশ বিক্রি করে চেয়ারম্যান সাহেবের শ্যালকের মাধ্যমে অসীমকে পায়ে-পথে পাঠিয়ে দিলেন দূর এই পরবাসে। তিন মাস তেরো দিন অসীমের কোনো হদিসই ছিল না। মায়ের সাথে কোনো যোগাযোগই ছিল না। শেষমেশ মেক্সিকোর দেয়াল টপকে আমেরিকা প্রবেশের পর যখন মায়ের কাছে ফোন দিল, মা তখন আর নেই। আর আজ দীর্ঘ পনেরো বছর ধরে তিলে তিলে গড়া স্বপ্নের হুরপরিটাও যে কখন আসমানে উড়ে গেছে-অসীমের বাহুবন্ধনে ফেলে রেখে গেছে বুঝি তার খোলসটা। এই প্রবাস-জীবন, স্বপ্নের আমেরিকা তছনছ করে সব নিংড়ে নিয়ে গেছে তার সবকিছু। রংহীন ফিকে পোশাকের মতো আজ অসীমের এক ফালি জীবন। বেদিশায় হাঁসফাঁস করে ওঠে ভেতরটা তার। সে অতি সন্তর্পণে নয়নার সাথে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে বাইরে পা রাখে। বারান্দার রেলিংয়ে ভর করে জলভরা চোখ খোলা আকাশে মেলে ধরে। শান্ত-সুনীল আকাশ অথচ ভেতরের ঝড়ের যাবতীয় তাণ্ডব প্রচণ্ড গর্জনে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিতে থাকে তাকে।
আব্বা, আপনের চা। আপনে-না মসলা চা খাইতে পছন্দ করেন। মায়ে আমারে শিখায় দিসেÑঅসীম চমকে পেছনে তাকায়। এ কে? গোলগাল মায়ের টুকটুকে মুখখানি। চোখের ওপর জোড়া ভ্রু, পুরুষ্ঠ ঠোঁট। অবিকল মা। জলজ্যান্ত মা দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে। গাঁয়ের সাধারণ জামা পরা ছিপছিপে তরুণীটি পাঁচ ফিট পাঁচ ইঞ্চি, বুঝি অবিকল নয়নার আদল। এই তো নয়নার মায়াবী চোখ। কী গভীর মায়া নিয়ে ধোঁয়া-ওঠা গরম চায়ের কাপ হাতে এক সোনামণি। অসীমের ঔরসজাত সন্তান, সোনামণি। গতকাল এয়ারপোর্টে ঘুমে আচ্ছন্ন ওড়না মাথায় জড়োসড়ো সোনামণিকে অসীম ভালো করে খেয়াল করতে পারেনি। আজ এই ক্ষণে প্রাণভরে মায়ের মুখখানি দেখে নেয় সে। কে বলে অসীম সবকিছু হারিয়ে ফেলেছে। এই যে নয়নার মায়াবী চোখ। পাঁচ ফিট পাঁচ ইঞ্চি নয়নার লতানো শরীর। কোমর ছাড়িয়ে যাওয়া নয়নার ঘন কালো চুল। সকল শূন্যতার এক মহা পূর্ণতা নিয়ে বুঝি দাঁড়িয়ে আছে সোনা-সোনামণি। যার একক আধিপত্য একমাত্র অসীম। ক্রমে অসীমের কাচভাঙা স্বপ্নগুলো জোড়া দিয়ে দিয়ে যেন এক পূর্ণ অবয়বে লাভ করে। এক মুহূর্তে সে হয়ে ওঠে মহা এক পূর্ণ। অসীমের ভেতরে মিইয়ে যাওয়া স্বপ্নফুলটা বুঝি আকস্মিক লকলকিয়ে জেগে ওঠে পাপড়ি মেলে। স্বপ্নপাখিরা গুনগুনিয়ে ডানা মেলে। অসীম নতুন এক প্রাণশক্তি নিয়ে দেদীপ্যমান হয়ে জেগে ওঠে নিজের ভেতর। সোনামণিকে দাঁড় করিয়ে রেখেই সে কী মনে করে দ্রুত ঘরে ঢুকে যায়। একটু পরই ফিরে আসে-হাতে নয়নার জন্য কিনে আনা গোলাপি রঙের টি-শার্ট আর কালো প্যান্টখানি। মা, এটা পরে এসো তো। দেখি, এ দেশের পোশাকে আমার মা-জননীকে কেমন দেখায়।