গজপত্রহীনদের (আনডকুমেন্টেড ইমিগ্র্যান্ট) সংকট এবং কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের করণীয় এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, বর্তমানে ইমিগ্রেশনের যে সংকট চলছে তা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে বিশেষজ্ঞ অ্যাটর্নির পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, যাদের বিপদের আশঙ্কা রয়েছে তারা বর্তমান সময়ে সাবধানে থাকুন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আতঙ্ক না ছড়িয়ে যে যার অবস্থান থেকে একে অপরকে সহযোগিতা করুন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের বারী টাওয়ারে রিভারটেল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছিল নিউইয়র্ক সেমিনার গ্রুপ। সহযোগিতায় ছিল যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি মালিকানাধীন একমাত্র মোবাইল অপারেটর রিভারটেল।
বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ এন মজমুদারের সঞ্চালনা ও স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে মতবিনিময় সভাটি শুরু হয়। এতে আলোচক হিসাবে ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম পরিচালক এবং ইমিগ্রেশন ও অ্যাক্সিডেন্ট কেইস বিশেষজ্ঞ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, সেমিনারের আয়োজক সিপিএ জাকির চৌধুরী, রিয়েলটর ইমাম হাসান, মর্গেজ স্পেশালিস্ট ফাহিম হোসেন, মূলধারার রাজনীতিক ও ব্যবসায়ী নেতা ফাহাদ সোলায়মান এবং রিভারটেল-এর ফাউন্ডার ও সিইও রুহিন হোসেন।
মকবিনিময় সভায় অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা বিশ্বের সেরা। তাই যারা বৈধভাবে এ দেশে আছেন তাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। যারা গ্রিনকার্ডধারী তাদের উচিত একটি ফটোকপি সাথে রাখা। তবে যাদের কোনো কাগজপত্র নেই তাদের উচিত হবে অ্যাটর্নির সঙ্গে পরামর্শ করা। যাদের কেইস পেন্ডিং আছে তাদের উচিত সংশ্লিষ্ট অ্যাটর্নির সেলফোন নম্বর সাথে রাখা। এটি তাদের উপকারে আসতে পারে।
মোহাম্মদ এন মজমুদার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যাদের বৈধ স্ট্যাটাস নেই এবং ইমিগ্রেশনে কোনো কেইস পেন্ডিং নেই, তাদের উচিত হবে এই মুহূর্তে চুপ থাকা। আবার অনেকের ডিপোর্ট অর্ডার হয়েছে, কিন্তু তিনি জানতেন না। তাদের কেউ কেউ আদালতে কেইস মোশন করতে গিয়ে ডিপোর্ট হয়েছেন এমন নজির রয়েছে। ওইসময় আদালতে না গেলে তিনি হয়তো ডিপোর্ট হতেন না। তিনি বলেন, প্রায় ৪০ হাজারের মত অবৈধ অভিবাসী রয়েছে। তারা অবৈধ থাকলেও কোনো অসুবিধা হবে না। কিন্তু কেইস ফাইল করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন এমন ঘটনাও আছে। অতএব, এই মুহূর্তে নিরাপদে থাকাই শ্রেয়।
সিপিএ জাকির চৌধুরী বলেন, বিপদে কমিউনিটির পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মানুষের কর্তব্য। আমিও কমিউনিটির পাশে দাঁড়িয়েছি। আমাদের সবার উচিত যে যার সাধ্যমত কমিউনিটির পাশে দাঁড়ানো।
ফাহাদ সোলায়মান বলেন, এই সংকটে ইমিগ্র্যান্টদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস সদস্য ওকাসিও। তিনি অভিবাসীদের জন্য একটি ফরম ছেড়েছেন। ওই ফরম পূরণ করলে কেউ বিপদে পড়লে তাকে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দেবেন তিনি। আবেদনকারীর সব তথ্য গোপন রাখার নিশ্চয়তা দিয়েছেন ওকাসিও।
রিভারটেল সিইও রুহিন হোসেন বলেন, রিভারটেল সবসময় বাংলাদেশি কমিউনিটির পাশে আছে এবং থাকবে। তিনি ইমিগ্রেশনের এই সংকটে কোনো ধরনের আতঙ্ক না ছড়িয়ে বরং সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এবং সঠিক তথ্য দিয়ে বাংলাদেশিদের পাশে থাকার আহ্বান জানান।