Thikana News
০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নির্বাচন ঘিরে প্রশাসন দখলে চতুর্মুখী লড়াই

নির্বাচন ঘিরে প্রশাসন দখলে চতুর্মুখী লড়াই সংগৃহীত
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। ইতিমধ্যে প্রশাসন দখলে চলছে চতুর্মুখী লড়াই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ- সবাই চেষ্টা করছে মাঠ নিজেদের দখলে নিতে। তবে প্রশাসনের মাঠ ছাড়তে নারাজ আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদ আমলারা। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে প্রথমে প্রশাসন দখলে নিতে এগিয়ে জামায়াতপন্থীরা। সরকার ও জামায়াতপন্থী কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়ে বিএনপিপন্থী বঞ্চিত কর্মকর্তারা পদোন্নতি পাচ্ছেন না। আওয়ামী লীগপন্থীরাও চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। আবার নতুন করে প্রশাসন দখলে নিতে পরিকল্পনা শুরু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের। তারা ইতিমধ্যে মাঠ প্রশাসনে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব কারণে প্রশাসনে গতি ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নানান উদ্যোগ নিলেও এখনো তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
জাতীয় সংসদ এবং স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগাগোড়া পুরো দায়িত্বে থাকেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও থাকে। ভোটকেন্দ্রে সরকারের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, এমনকি মাদরাসার শিক্ষকেরাও থাকেন। তবে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য না হলে ভোটে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা একে অপরকে দোষারূপ করেন। নির্বাচন সুষ্ঠু করার দায়িত্ব যাদের, তাদের নিয়ে তর্কের বদলে দলগুলো অভিযোগ খাড়া করে পরস্পরের বিরুদ্ধে। রাজনীতি বিশ্লেষক, নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচন কমিশনের তদারকি ও নির্দেশনায় নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার দায়িত্ব কার্যত প্রশাসনের। ভোটকেন্দ্রের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা ও অবাধ ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে ভোটকেন্দ্র দখল, জালভোট প্রদান, জোর করে ব্যালটে সিল মারা, কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটার কথা নয়। সুষ্ঠু পরিবেশের অভাবেই পুরো নির্বাচন-ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী কর্মকর্তারা। তারা বড় বড় মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ ছাড়তে নারাজ। এসব আমলা পদে থাকতে উপদেষ্টাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আওয়ামী সমর্থিত কিছু কর্মকর্তাকে বদলি করা হলেও তারা আবার ভালো ভালো মন্ত্রণালয়ে বদলি নিতে উঠেপড়ে লেগেছেন। সব মিলে চতুর্মুখী চাপে বিপাকে পড়েছেন দল নিরপেক্ষ সরকারি কিছু আমলা। তবে প্রশাসনের বেশির ভাগ আমলা এখনো বিএনপি ও আওয়ামী লাগের বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দিতে রাজি নন বলে জানা গেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি সারসংক্ষেপ পাঠানো হলেও সেখানে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু যারা আসল ঘটনা ঘটিয়ে বিভিন্ন জেলা ডিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কিছুই করা হয়নি বলে বঞ্চিত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নাম প্রকশে অনিচ্ছুক এক সচিব বলেন, আসলে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দীর্ঘ দিন প্রশাসন ও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছে। সে কারণে সরকারি কর্মকর্তারা এই দুই দলের বাইরে যেতে চান না। এবারও সরকারি কর্মকর্তারা এই দুই দলের মধ্যে সমর্থন দিয়ে আসবেন।

কমেন্ট বক্স