এক বছর পেরিয়ে গেছে ইসরাইল বনাম হামাস যুদ্ধের। এর মধ্যেই আশার কথা শোনালো হামাস বাহিনী। ৩৪ জন পণবন্দিকে ছাড়তে চলেছে তারা। ইসরাইলের সাথে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বিবিসির সাথে ৩৪ জন পণবন্দির একটি তালিকা শেয়ার করেছেন। পণবন্দিদের মধ্যে কতজন বেঁচে আছেন তা স্পষ্ট নয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আক্রমণের সময় দুজন বাদে বাকি সবাই ধরা পড়েছিল। তালিকায় এক বছরের শিশু যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছেন ৮৬ বছরের বৃদ্ধ। এর মধ্যে এমন শিশুও রয়েছে যাদের মনে করা হয়েছিল ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছে। অসুস্থ বলে দাবি করা বেশ কয়েকজনও সেই তালিকায় রয়েছে। যদিও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় হামাস কর্তৃক ৩৪ জন পণবন্দিকে মুক্তি দেবার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে- 'মিডিয়ায় প্রকাশিত পণবন্দিদের কোনো তালিকা হামাসের তরফে ইসরাইলে পাঠানো হয়নি, তবে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম দিকে ইসরাইল থেকে মধ্যস্থতাকারীদের পাঠানো হয়েছিল।
অপহৃতদের অবস্থা সম্পর্কে ইসরাইল হামাসের কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি। বৃটিশ ইসরাইলি এমিলি দামারি, যাকে ৭ অক্টোবর কিবুতজ কাফার আজার থেকে গুলি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, হামাসের তালিকায় তার নাম রয়েছে। ১৯ বছরের লিরি আলবাগের নাম রয়েছে সেখানে, যিনি সপ্তাহান্তে হামাসের পোস্ট করা একটি ভিডিওতে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তার সরকারকে একটি চুক্তি করার জন্য অনুরোধ করতে দেখা গেছে লিরিকে।
এছাড়াও তালিকায় রয়েছে দুই ভাই- কেফির বিবাস (১ বছর) এবং তার দাদা এরিয়েল (৫ বছর)- যাদের তাদের পিতামাতার সাথে পণবন্দি করা হয়েছিল। হামাস এর আগে বলে এসেছে যে শিশুরা ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছে। জিম্মিদের পরিবার এক বিবৃতিতে বলেছে যে তারা তালিকাটি দেখে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও ব্যথিত’।
জিম্মিদের নাম প্রকাশের হামাসের সিদ্ধান্তকে কেউ কেউ ইসরাইলি সরকারের ওপর জনসাধারণের চাপ বাড়ানোর চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। সপ্তাহান্তে কাতারের দোহায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা আবার শুরু হয়েছে, কিন্তু আলোচনায় এখনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।
হামাসের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরাইলি জিম্মিদের ফেরত দেওয়ার যে কোনো চুক্তি নির্ভর করবে ইসরাইলের গাজা থেকে সরে যাওয়ার চুক্তি এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি বা যুদ্ধের অবসানের ওপর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বা যুদ্ধ প্রত্যাহারের বিষয়ে ইসরাইল কোনও পদক্ষেপ নিতে এগিয়ে আসেনি।’
ইসরাইল এবং হামাস ক্রমাগত একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অগ্রগতিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সিউলে সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে, তিনি আশাবাদী কোনও এক সময়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে তা শীঘ্রই নয়। তিনি স্বীকার করেছেন যে জানুয়ারির ২০ তারিখে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট অফিস ছেড়ে যাওয়ার পরে এটি ঘটতে পারে। সূত্র: বিবিসি
ঠিকানা/এসআর



ঠিকানা অনলাইন


