Thikana News
০৫ জানুয়ারী ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫

অনিবার্য হয়ে আসছে সংঘাত-সংঘর্ষ

অনিবার্য হয়ে আসছে সংঘাত-সংঘর্ষ ছবি: সংগৃহীত
দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়া নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি। মূলত তাদের প্রবল দাবির মুখে প্রধান উপদেষ্টার পর প্রধান নির্বাচন  কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করেছেন। তিনি এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। নির্বাচন কমিশন আরও খোলাসা করে জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হবে। তাতে অসন্তুষ্ট বিএনপি নির্বাচনের তারিখ আরও এগিয়ে আনার দাবি করছে। তারা নতুন বছরের (২০২৫) জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবিও উঠেছে। এ পর্যায়ে অন্যতম রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন থেকে এর তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। সংস্কারকাজ শেষ করার পরই জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছে তারা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এবং সামনের সম্ভাব্য পরিবেশ-পরিস্থিতি-প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলসমূহ এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করবে ও তাঁর পরামর্শ নেবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সরকার দুই দফা আলোচনা করেছে। এই আলোচনায় অবশ্য সংগতভাবেই আওয়ামী লীগকে ডাকা হয়নি। বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আগামী এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। এখন আবার তাতেও বিএনপির অসন্তুষ্টি তাদের হতাশ করেছে।
নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে ক্ষমতা হস্তান্তর চায় বিএনপি। অপরদিকে জামায়াত তার পক্ষে নয়। বৈষম্যবিরোধীরাও এর বিপক্ষে। তারা উভয়েই মনে করে, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়া যাদের মুখ্য উদ্দেশ্য, তারা সংস্কারে যে আন্তরিক নয়, তা স্পষ্ট। নির্বাচন বিলম্বিত হলে ক্ষমতায় যাওয়াও বিলম্বিত ও অনিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে বলেই বিএনপি নেতাদের আশঙ্কা। জামায়াত ও বৈষম্যবিরোধীদের অবস্থান এর বিপরীতে। ক্ষমতায় যাওয়ার আর আসার প্রচলিত রাজনীতি, সমাজের অবহেলিত-অনাদৃত মানুষের ভাগ্য নিয়ে রাজনীতি করে ক্ষমতায় যাওয়াকে যারা সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চায়, তাদের বিপক্ষে তারা। বৈষম্যবিরোধী ও জামায়াতের এবং বিএনপির পরস্পর বিপরীত অবস্থান অন্তর্বর্তী সরকারকে কেবল বিব্রতকরই নয়, বিপজ্জনক অবস্থায় ফেলেছে। বিএনপি চলতি জানুয়ারি মাসেই অতি দ্রুত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণার কথা সক্রিয় বিবেচনায় রেখেছে বলেই জানা যায়। নতুন বছরের জুনে সর্বাধিক নভেম্বর-ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় বিএনপি। জামায়াত ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনÑউভয়েই ক্ষমতাপ্রত্যাশী। প্রয়োজনে পারস্পরিক সমঝোতায় প্রার্থী দেওয়া, নির্বাচন করার পরিকল্পনাও তারা নিয়ে রেখেছে। উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সরকার পতনের আন্দোলনে রাজপথে অবতীর্ণ করার পেছনে মুখ্য ভূমিকায় ছিল জামায়াত।
জানা যায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্ব-বিরোধের অবসান কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে সরকার চিন্তিত। কারণ তারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় হিংসাত্মক রাজনীতির চর্চা শুরু হতে দিতে চায় না। আবার তা ঠেকিয়ে রাখার উপায়ও পাচ্ছে না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন এগিয়ে আনার প্রস্তাব বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব নিয়ে তারা আলোচনায় বসবে।
অন্যদিকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে কীভাবে নির্বাচনের বাইরে রাখা যায়, তা-ও বড় রকমের ভাবনার বিষয় হয়ে রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নয়। একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদেরকে নির্বাচনের বাইরে রাখার কোনো এখতিয়ার সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নেই। এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও নির্বাচনের প্রার্থী হতে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা নেই নির্বাচন কমিশনের। কারণ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের ও সেখান থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও শেখ হাসিনা দণ্ডিত নন। সে জন্য তার প্রার্থী হতে সাংবিধানিক বাধা নেই। একই অবস্থা সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া, নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণা চালানোর বৈধ অধিকার তাদের রয়েছে। বিএনপি বিরোধিতা না করলেও বৈষম্যবিরোধীরা তাদের প্রতিরোধ করবে, বাধা দেবে। এ অবস্থা অনিবার্য সংঘাত-সংঘর্ষময় পরিস্থিতির জন্ম দেবে, যা প্রতিহত করে নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি ও বজায় রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়াবে।

কমেন্ট বক্স