ভারতের গুজরাটের রাস্তায় ‘ছেলেরা এটিএম নয়’ প্ল্যাকার্ড হাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন একদল পুরুষ। তাদের দাবি, তারা সবাই তাদের স্ত্রীদের দ্বারা অত্যাচারিত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে আইনের সুযোগ নেন নারীরা। এই পরিস্থিতির বদল চেয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। নারী কমিশনের মতো পুরুষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কিছুদিন আগে ভারতের বেঙ্গালুরুতে ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষের আত্মহত্যার ঘটনা সারা দেশকে নাড়া দিয়েছিল। স্ত্রীর বিরুদ্ধে হেনস্তা, একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে গিয়েছেন অতুল। সেই ঘটনাকে সামনে রেখেই গুজরাটে ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তুলতে চান পুরুষেরা।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, শুধু নারীরা নন, সমাজে পুরুষেরাও অত্যাচারিত, নিগৃহীত হয়ে থাকেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিযোগের তীর থাকে নারীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু অন্যায় করলেও পার পেয়ে যান তারা। পুরুষদের ভাগ্যে ‘বিচার’ জোটে না। সেসব ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়। সমাজের এই ‘সিস্টেম’ আন্দোলনকারীরা বদলাতে চান।
পুরুষদের জন্য বিচার চেয়ে একাধিক স্লোগান লেখেন প্ল্যাকার্ডে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘পুরুষরা এটিএম নয়’। অভিযোগ, পুরুষদের কেবল টাকা রোজগারের মাধ্যম হিসেবে দেখেন নারীদের একাংশ। তার বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়া হয়েছে এই প্ল্যাকার্ডে। এ ছাড়া সুরাটের রাস্তায় প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল ‘মিথ্যা মামলা জঘন্য অপরাধ’, ‘পুরুষ বাঁচাও দেশ বাঁচাও’, ‘আইন সকলের জন্য সমান’, ‘নারীদের উচিত ভরণপোষণ না নিয়ে চাকরি খোঁজা, সেটাই লিঙ্গবৈষম্য’ ইত্যাদি।
বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকেই অনেকে পুরুষ কমিশনের দাবি তোলেন। সমাজে পুরুষদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য সরকারের এ ধরনের কমিশন তৈরি করা উচিত বলে মনে করেন তারা। স্ত্রী বা অন্য কোনো নারীর আনা অভিযোগে এবং হেনস্তায় ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কত পুরুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন, তার একটি পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয় বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে।
পুরুষদের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে মিথ্যা প্রমাণিত হয়, দাবি ওই বিক্ষোভকারীদের। তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের অভিযোগে শুধু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নন, তার পরিবারকেও সমানভাবে মানসিক অশান্তির শিকার হতে হয়। অবিলম্বে এই পরিস্থিতির বদল চেয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাট থেকে ইঞ্জিনিয়ার অতুলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়। তিনি ২৪ পাতার সুইসাইড নোট এবং দেড় ঘণ্টার মৃত্যুকালীন ভিডিওবার্তা রেখে যান। সেখানেই স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়ার বিরুদ্ধে দিনের পর দিন হেনস্তার অভিযোগ তোলেন অতুল। পারিবারিক আদালতে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। কিন্তু মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মঘাতী হন।
ঠিকানা/এনআই



ঠিকানা অনলাইন


