Thikana News
২১ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

দরিদ্র মহিলাদের বঞ্চিত করে মদনে মহিলা মার্কেট দুর্বৃত্তায়নের দখলে

দরিদ্র মহিলাদের বঞ্চিত করে মদনে মহিলা মার্কেট দুর্বৃত্তায়নের দখলে দরিদ্র মহিলাদের বঞ্চিত করে মদন উপজেলার তিয়শ্রী বাজারের মহিলা মার্কেট পুরুষরা নিয়ন্ত্রণ করছেন- সংগৃহীত
তোফাজ্জল হোসেন ,নেত্রকোনা প্রতিনিধি :  নেত্রকোনার মদনের একটি  মহিলা মার্কেট শিক্ষক, অফিস সহকারী ও আওয়ামী লীগ পত্নিদের দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মার্কেটে মহিলার পরিবর্তে পুরুষরাই জমজমাট ব্যবসা করছেন। তবে অধিকাংশ দোকানেই জামানত নিয়ে ভাড়াটে চলছে। উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী বাজারে মহিলা মার্কেটে (ওম্যান্স কর্ণার) এমন ঘটনা ঘটছে। 
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের তহবিলে কোন টাকা জমা হচ্ছে না। প্রশাসনের কোনো দপ্তরও জানে না এ মার্কেটটি কার? অথচ, নিয়ম রয়েছে প্রতিটি (ওম্যান্স কর্ণার) একশ টাকা করে সরকারি কোষাগার রশিদের মাধ্যমে ভাড়ার  টাকা জমা দেয়ার। এসবের কোন তোয়াক্কাই করছে না দখলদার ব্যক্তিরা । মহিলাদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও মার্কেটের দোকান ঘর দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবহার করে আসছেন কতিপয়  সুবিধাবাদী প্রভাবশালী পুরুষরা। তাদের লাগামহীন দুর্বৃত্তায়নের ফলে সরকার মার্কেটটি থেকে প্রায় দুই যুগ ধরে হারাচ্ছে রাজস্ব। মদন উপজেলার তিয়শ্রী  ইউনিয়নের তিয়শ্রী বাজারে মহিলাদের জন্য ২০০০ সালের দিকে নির্মাণ করা হয় মার্কেটটি।  এ মার্কেটের সুবিধাভোগী হবেন হতদরিদ্র খেটে খাওয়া মহিলারা। মহিলা মার্কেটের দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে উপজেলা  প্রকৌশলী অধিদপ্তর।  কিন্তু  বাস্তবে কেউই জানেন না এসব দোকান ঘর কার নামে বরাদ্দ রয়েছে।  

২০ নভেম্বর (বুধবার) সরজমিনে ঘুরে দেখা যায, তিয়শ্রী বাজারে মহিলা মার্কেটে কোন মহিলা সদস্যের দোকান নেই। মার্কেটে প্রথম দোকানটি রায়হান টেলিকমের। এ দোকানটি বরাদ্দ নেন তিয়শ্রী নূর হোসেন  খান একাডেমিকের সাবেক অফিস সহকারী জিয়াউল হকের স্ত্রীর নামে।  জিয়াউল হকের নিকট থেকে ৪ বছরের জন্য ভাড়া নিয়েছে রায়হান টেলিকম।  তিনি প্রতিমাসে ৬০০ টাকা করে ভাড়া দিচ্ছেন।  অন্যদিকে  বাস্তা দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক নূরুল আলম খানের স্ত্রীর  বাজিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পান্না আক্তারের  নামে রয়েছে মহিলা মার্কেটের ঘর বরাদ্দ। বাস্তা দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র মৌলবির দখলেও রয়েছে একটি ঘর। আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন মিয়ার দখলে রয়েছে  দুটি ঘর । সাবেক ইউপি সদস্য খোকন মিয়ার স্ত্রীর নামেও রয়েছে একটি ঘর।  এভাবেই ১২টি ঘরের মালিক সেজে প্রভাবশালীরা ঘরের ভাড়া উত্তোলন করে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা না দিয়ে নিজেরাই আত্নসাৎ করছেন।  এসব দখলদারদের কারণে এলাকার হতদরিদ্র মহিলারা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় সাধারণ লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। 

বাস্তা দাখিল মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক নূরুল আলম খান জানান, আমার স্ত্রী একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছে। যে জায়াগায় মহিলা মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে আমার একটি টিন সেট ঘর ছিল।  তৎকালীন কর্তৃপক্ষের  নির্দেশে আমাকে একটি ঘর বরাদ্দ দিয়েছিল । যেটা আমার স্ত্রী পান্না আক্তারের নামে নেই। ঘরটি আমি ভাড়া দিয়েছি। 
বাস্তা দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র মৌলবী সাদেক মিয়া জানান, আমি যে ঘরটি নিয়েছি এটি আমার স্ত্রীর নামে বরাদ্দ নয়। আমি আরেক জনের নিকট থেকে ঘরের চাবি নিয়েছি। ঔষধের দোকান দেয়ার জন্য। বর্তমানে ঘরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। 
ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান মহিলা মার্কেট পুরুষের দখলে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মহিলা মার্কেটের ব্যাপারে সাবেক ইউএনও স্যার প্রতিবেদন চেয়ে ছিলেন।  আমি দুই বার প্রতিবেদন দাখিল করেছি।  এখন কোন অবস্থায় আছে তা আমার জানা নেই।  
উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়াল জানান, মহিলা মার্কেটের কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রেজোয়ান ইফতেকার জানান, বিষয়টি যাচাই বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  
আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন ও সাবেক অফিস সহকারী  জিয়াউল হকের মোবাইলে ফোন  করলে তাদের নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ঠিকানা/এসআর



 

কমেন্ট বক্স