ইচ্ছা করলেও আরও কয়েক বছর খেলা চালিয়ে যেতে পারতেন। বেশ কয়েকটি ক্লাবও তাকে দলে ভেড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু সদ্যোজাত কন্যার সঙ্গে সময় কাটানোকেই বেশি প্রাধান্য দিলেন তিনি। পেশাদার ফুটবলকেই বিদায় বলে দিলেন ‘উরুগুয়ের যোদ্ধা’ নামে পরিচিত ডিফেন্ডার ডিয়েগো গডিন।
লম্বা সময় স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে খেলেছেন গডিন। দলটির রক্ষণে অন্যতম ভরসা ছিলেন তিনি। দলকে নেতৃত্ব দেন ৯ মৌসুমে। ২০১৯ সালে অ্যাটলেটিকো ছেড়ে পাড়ি জমান ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানে। এরপর কাইয়ারিতে কাটিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে যোগ দেন ব্রাজিলের ক্লাব অ্যাটলেটিকো মিনেইরোয়। মাস ছয়েক পর নাম লেখান আর্জেন্টিনার ভেলে সারফিলে।
ফুটবলকে বিদায় জানালেনও সেখানেই। আর্জেন্টিনার ক্লাব ভেলে সারফিলের হয়ে রোববার নিজের শেষ ম্যাচ খেলেন গডিন।
যদিও শেষটা ভালো হয়নি, তার দল উরাকানের কাছে হেরেছে ১-০ গোলে।
পেশাদার ফুটবলে গডিনের ক্যারিয়ার বেশ সমৃদ্ধ। সব মিলিয়ে ৬২৭ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এ সময়ে গোল করেছেন ৩৮টি। যে দলেই গেছেন রক্ষণে ভরসা হয়ে উঠেছেন, লড়াকু মানসিকতার কারণে পরিচিতি পেয়েছেন ‘যোদ্ধা’ হিসেবে।
২০০৩ সালে উরুগুয়ের ক্লাব অ্যাটলেটিকো সিরোর হয়ে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয় গডিনের। তিন বছর পর যোগ দেন উরুগুয়ের সফলতম ক্লাব নাসিওনালে। ২০০৭ সালে ভিয়ারিয়ালের যোগ দিয়ে পাড়ি জমান ইউরোপিয়ান ফুটবলে।
২০ বছরের ক্যারিয়ারে ১০টি শিরোপা জিতেছেন তিনি। এর মধ্যে আছে অ্যাটিেল্টকো মাদ্রিদের হয়ে দুটি ইউরোপা লিগ, তিনটি উয়েফা সুপার কাপ, একটি করে লা লিগা ও কোপা দেল রের শিরোপা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রানার্স আপ হয়েছেন দুই বার।
উরুগুয়ে জাতীয় দলের হয়েও গডিন সর্বকালের সেরাদের একজন। ১৬১ ম্যাচ খেলেছেন দেশের জার্সি গায়ে, যেটা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। উরুগুয়েকে নেতৃত্বও দিয়েছেন লম্বা সময়।
২০১০ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল খেলা ও ২০১১ কোপা আমেরিকা জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন গডিন। এছাড়া ২০১৮ বিশ্বকাপে জায়গা পান ফিফা ড্রিম টিমে।
ফিট থাকা স্বত্তেও অবসর নেওয়ার কারণ ব্যাখা করেছেন গডিন। তিনি বলেন, এখন ফুটবলের চেয়ে পরিবার ও মেয়ে তার কাছে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।
গডিন বলেন, ‘আমি সবসময়ই চেয়েছি সিদ্ধান্তটি এভাবে নিতে। ফিট থাকার পরও এই সিদ্ধান্ত অনেকের কাছে বিস্ময়কর মনে হতে পারে। তবে আমি ভাবছিলাম বেশ কিছুদিন ধরেই।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমার ভাবনায় বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে আসলে অন্য দুটি ব্যাপার। আমার পরিবার এখন উরুগুয়েতে এবং সম্প্রতি আমি বাবা হয়েছি। এখন বিশ্রাম নিতে চাই এবং জীবনের অন্য দিকগুলো উপভোগ করতে চাই। ভালো ভাবমূর্তি নিয়েই মাঠ থেকে বিদায় নিতে চেয়েছি সবসময়।’
ঠিকানা/এসআর