বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার ঘটনা নিয়ে জাতীয় পার্টি ও ছাত্র আন্দোলনের পাল্টাপাল্টি মিছিল ও আলটিমেটামে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রংপুর। ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় পার্টির সহযোগী সংগঠন জাতীয় যুব সংহতি এবং জাতীয় ছাত্রসমাজ।
এদিকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, রংপুর থেকে জাতীয় পার্টি যে আন্দোলন শুরু করল এর ভবিষ্যৎ কোন দিকে যায় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করুন।
মোস্তফা আরও বলেন, ছাত্র-জনতা গণ অভ্যুত্থানে জাতীয় পার্টিও অংশ নিয়েছিল। রংপুরে আমাদের মেরাজুল ও মানিক নামে দুজন কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ২২টি মামলায় আসামি করা হয়েছিল দলের কর্মীদের। এরমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ১৬ জুলাই আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়, সেদিনও জাতীয় পার্টির যুব ও ছাত্র সংগঠন মিছিলে অংশ নিয়েছিল এবং নির্যাতনে শিকার হয়েছিল। অথচ ৫ আগস্টের পর জাতীয় পার্টিকে হাসিনা সরকারের সহযোগী আখ্যা দিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও তাঁর স্ত্রী শেরিফা কাদেরকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতীয় পার্টিকে সংলাপে ডাকা যাবে না—এ ধরনের ঘোষণা দেওয়ার সারজিস আলম বা হাসনাত আব্দুল্লাহ কী কোনো কর্তৃপক্ষ, এমন প্রশ্ন তুলে ধরেন জাপা কো-চেয়ারম্যান মোস্তফা।
মোস্তফা আরও বলেন, জাতীয় পার্টি নিয়ে আর কোনো ষড়যন্ত্র করা হলে রংপুরকে অচল করে দেওয়া হবে।
গত ১৪ অক্টোবর রাতে এক কর্মিসভা থেকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার প্রতিবাদে আজ বিকেলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন এবং সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তফাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আলটিমেটাম দেয়। এরই প্রতিবাদে রাত ৯টার দিকে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে জাতীয় পার্টি অফিস থেকে যুব সংহতি ও ছাত্র সমাজের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে দলীয় অফিসের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়।
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আরও বলেন, আগে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে, তারপর তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন।
ঠিকানা/এএস