Thikana News
১৬ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪


 
সাক্ষাৎকারে সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও মহসিন কবীর

রেমিটারদের সেবা দিতে পেরে গর্ববোধ করছি

রেমিটারদের সেবা দিতে পেরে গর্ববোধ করছি


সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও মোহাম্মদ মহসিন কবীর বলেছেন, রেমিটার ভাইবোনদের সেবা প্রদান করতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, মিশিগান, মেরিল্যান্ড, আটলান্টা ও ফ্লোরিডা রাজ্যে ১০টি শাখা/বুথের মাধ্যমে রেমিট্যান্স সেবা প্রদান করছি। সোনালী ব্যাংকসহ দেশের সকল ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাবে, হিসাব নম্বর না থাকলে সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখার মাধ্যমে শুধু মোবাইল নম্বর দিয়ে ক্যাশ পিকআপের সুবিধা, এমএফএস তথা বিকাশ/নগদের মাধ্যমেও আমরা টাকা পাঠিয়ে থাকি এবং সকল ক্ষেত্রে একই রেট দিয়ে থাকি। আমরাই একমাত্র কোম্পানি, যারা রেমিট্যান্স প্রেরণে কোনো ফি/চার্জ নিই না। গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নে ও দ্রুততার সঙ্গে রেমিট্যান্স সেবা প্রদানের জন্য ইতিমধ্যে সোনালী এক্সচেঞ্জ মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। প্লে-স্টোর ও গুগল অ্যাপ স্টোর থেকে খুব সহজেই এই অ্যাপ আইফোন/মোবাইলে ইনস্টল করে ঘরে বসেই বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারবেন গ্রাহকেরা। ঠিকানার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মহসিন কবীর। তিনি গত আগস্ট মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তিনি চেষ্টা করছেন দেশে রেমিট্যান্স-প্রবাহ আরও বাড়ানোর।
সোনালী এক্সচেঞ্জে যোগদান প্রসঙ্গে মহসিন কবীর বলেন, সোনালী ব্যাংক পিএলসি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক। আমি সোনালী ব্যাংকের একজন নির্বাহী হিসেবে খুবই গর্ববোধ করি। আমার দীর্ঘ ১৬ বছরের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে বিভিন্ন সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শাখার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করাসহ বিভিন্ন শাখা, করপোরেট শাখা, আঞ্চলিক কার্যালয়, জেনারেল ম্যানেজার অফিস ও প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনে দায়িত্ব পালন করেছি। ব্যাংকের নিজস্ব ফরেন পোস্টিং পলিসি অনুসরণের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের কম্পিউটার এপটিটিউট টেস্ট, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে সবচেয়ে বেশি মেধাবী প্রার্থীকেই সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনক্ এর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিইও হিসেবে বদলি ও পদায়ন করা হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় আমি সোনালী এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিইও হিসেবে যোগদান করেছি।
আপনি কখন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন? সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও হওয়ার আগে আপনার জীবন কেমন ছিল- এই প্রশ্নের উত্তরে মহসিন কবীর বলেন, আমি চলতি বছরের ১১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এসেছি। সোনালী এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিইও হওয়ার আগে আমার জীবন খুবই সুন্দর ও আনন্দময় ছিল। কারণ পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশে আমি পরিবার-পরিজন, সহকর্মী ও বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পেরেছি। এখানে অনেক বড় ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকাংশে সবার সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে না পেরে মাঝে মাঝে খারাপ লাগে। যাই হোক, এখানেও নতুন সহকর্মী ও নতুন নতুন রেমিটার ভাইবোনদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে তাদের সেবা দিতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি।
আপনি কেন অর্থ স্থানান্তরের কাজ করতে চেয়েছেন, বিশেষ করে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য এই কাজ করতে কেন আগ্রহী- এ প্রসঙ্গে মহসিন কবীর বলেন, আমি মূলত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের একজন নির্বাহী। একজন ব্যাংকারকে ব্যাংকিংয়ের বিভিন্ন সেক্টরে পারদর্শী হতে হয়। ফরেন রেমিট্যান্স সোনালী ব্যাংকের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেবা, যার মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ হতে রেমিট্যান্স-যোদ্ধা তথা সম্মানিত রেমিটার ভাইবোনদের প্রেরিত রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়ে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সক্রিয় অংশীদার হিসেবে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনক্ বিগত প্রায় ৩০ বছর যাবৎ যুক্তরাষ্ট্রের ছয়টি স্টেটে বসবাসকারী বাংলাদেশি অভিবাসী ভাইবোনদের বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের কাজ করে যাচ্ছে। সোনালী ব্যাংকের একজন ব্যাংকার হিসেবে সবারই স্বপ্ন থাকে ফরেন পোস্টিং নিয়ে বিদেশের মাটিতে, বিশেষ করে সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনক্ যুক্তরাষ্ট্রে সোনালী ব্যাংকের প্রতিনিধিত্ব করা। তাই আমিও চেয়েছিলাম যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশি অভিবাসী ভাইবোনের উন্নত ও গুণগত সেবা প্রদানপূর্বক তাদের প্রেরিত রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করব।
অতীতের কোন অভিজ্ঞতা সোনালী এক্সচেঞ্জে ভূমিকা রাখতে সাহায্য করবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মহসিন কবীর বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখার ম্যানেজার, করপোরেট শাখার সেকশন ইনচার্জ ও প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন ডিভিশনের নির্বাহী হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে আমি দায়িত্ব পালন করেছি। তাই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শাখা ব্যবস্থাপনা, কর্মী ব্যবস্থাপনা, টিম ম্যানেজমেন্ট, মানবসম্পদ উন্নয়ন, ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, রেগুলেটরি কমপ্লায়ান্স, ডেভেলপমেন্ট অব পলিসি অ্যান্ড প্রসিডিউর, মনিটরিং অ্যান্ড সুপারভিশন, ইনোভেশন অব নিউ প্রোডাক্টস অ্যান্ড মার্কেটিং এবং কাস্টমার কমপ্লেইন্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে অর্জিত বাস্তব অভিজ্ঞতা সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনকের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিইও হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
আপনি সোনালী এক্সচেঞ্জে কোন কোন পরিবর্তন করতে চান, যাতে গ্রাহকদের আরও ভালোভাবে সাহায্য করা যায়- এ বিষয়ে মহসিন কবীর বলেন, আমরা মূলত একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি ভাইবোনদের প্রেরিত রেমিট্যান্স দিয়েই বাংলাদেশের ফরেন কারেন্সি রিজার্ভ সমুন্নত হয় এবং অর্থনীতির চাকা সচল হয়ে ওঠে। আমি বিশ্বাস করি, Customer is the king, they can’t do wrong. সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনক্ এর প্রত্যেক কর্মকর্তা সর্বদা হাসিমুখে সেবা প্রদান করে থাকেন। গ্রাহকসেবার মান আরও উন্নত করে গুণগত সেবা প্রদান করাই আমার মূল লক্ষ্য। তারই ধারাবাহিকতায় আমি যোগদান-পরবর্তী প্রতিটি শাখার ম্যানেজার ও কর্মকর্তাদের ইতিমধ্যে mindset and attitude পরিবর্তন করে সেবার মানসিকতা নিয়ে হাসিমুখে রেমিট্যান্স-যোদ্ধাদের সেবা প্রদানে নির্দেশনা প্রদান করেছি।
সোনালী এক্সচেঞ্জ নিউইয়র্কে বাংলাদেশের সম্প্রদায়কে কীভাবে সাহায্য করছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনক্ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশি সম্প্রদায়কে সেই ১৯৯৪ সাল থেকেই তাদের কষ্টার্জিত টাকা নিরাপদে ও দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশে তাদের প্রিয়জনদের নিকট পৌঁছে দিচ্ছে। সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনক্ যুক্তরাষ্ট্রে একমাত্র সরকারি রেমিটার প্রতিষ্ঠান, যেটি সকলের মাঝে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে পরিণত হয়েছে। আমরা রেমিট্যান্স-সেবা ছাড়াও অভিবাসী ভাইবোনদের বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা প্রদানে সর্বাত্মক সহায়তা করে থাকি।
সোনালী এক্সচেঞ্জের অফার সম্পর্কে বাংলাদেশের সম্প্রদায়ের কাছে আপনি কি কোনো বার্তা দিতে চান- এমন এক প্রশ্নের জবাবে মহসিন কবীর বলেন, সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনক্ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের প্রতিষ্ঠান। রেমিট্যান্স-যোদ্ধা হিসেবে প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার। তাই প্রবাসীরা সোনালী এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও জোরালো ভূমিকা পালন করবেন এবং আমরা যাতে তাদের সার্বক্ষণিক সেবা দিতে পারি, সে সুযোগ প্রদান করব। সোনালী ব্যাংক পিএলসির নির্দেশনার আলোকে আমরা দ্রুতই Agent Based Remittance Services শুরু করব। যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ১০টি শাখার বাইরেও ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস ও ভার্জিনিয়ায় আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। উৎসবে-আনন্দে সোনালী এক্সচেঞ্জ কোং ইনক্ যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই রয়েছে প্রবাসীদের পাশে। তাই সকল রেমিটার ভাইবোনের নিকট অনুরোধ করব, আপনারা পূর্বের ধারাবাহিকতায় সব সময় আমাদের পাশে থেকে সেবা প্রদানের সুযোগ দেবেন।

 

কমেন্ট বক্স