৪১০ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামা শ্রীলঙ্কার স্কোর তখন ১৭৭/৭। সাতটি উইকেটই নিয়েছেন নুমান আলি। জিম লেকার, অনিল কুম্বলে, এজাজ প্যাটেলের পর চতুর্থ বোলার হিসেবে টেস্টের এক ইনিংসে সব কটি উইকেট নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন এই বাহাতি স্পিনার। কিন্তু পরের ওভারেই ‘বাগড়া’ দিলেন নাসিম শাহ!
ডানহাতি এই পেসার দারুণ রিভার্স সুইংয়ে তার ৬ বলে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে দ্রুতই গুটিয়ে দেন শ্রীলঙ্কার ইনিংস। ১৮৮ রানে মুখ থুবড়ে পড়ল শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে ১৬৬। মাঝে পাকিস্তান করেছে ৫৭৬/৫। ইনিংস ও ২২২ রানের বিশাল ব্যবধানে কলম্বো টেস্ট জিতে দুই টেস্টের সিরিজও জিতল পাকিস্তান।
লঙ্কানদের বিপক্ষে এটিই পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় জয়। আগেরটি ছিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ১৯৯৯ সালে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে, ইনিংস ও ১৭৫ রানে।
দুই দলের দুই বা তার বেশি ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এ নিয়ে দশমবার সিরিজ জিতল পাকিস্তান। আর শ্রীলঙ্কাকে ধবলধোলাই করে সিরিজ জিতল ২৯ বছর পর, সর্বশেষটি ছিল ১৯৯৪ সালে।
এই জয়ে দুই টেস্টে পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট নিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই চক্রে সবার উপরে উঠল পাকিস্তান।
চতুর্থ দিনের সকালে পাকিস্তান আরও দুই ওভার ব্যাট করার পর ইনিংস ঘোষণা করলে ৪১০ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামে শ্রীলঙ্কা। করুনারত্নে-মাদুশকা উদ্বোধনী জুটিতে অবশ্য প্রতিরোধ গড়ারই ইঙ্গিত ছিল, প্রথম ১৮ ওভারেই ৬৯ রান তুলে নেন দুজনে। তবে নুমান বোলিংয়ে আসতেই খেই হারাতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। প্রথম বলেই বোল্ড হন মাদুশকা। ৭২ বলে ৩৩ রান করে মাদুশকা ফিরে যান আগের ইনিংসে মাত্র ৩ ওভার করা নুমানের বলে।
৩৬ বছর বয়সী এই বাঁহাতি স্পিনার এরপর শ্রীলঙ্কার আর কোনো ব্যাটসম্যানকে থিতু হতে দেননি। তার একেকটি স্পিন ভেলকিতে আউট হয়ে ফেরেন করুনারত্নে (৬১ বলে ৪১), দিনেশ চান্ডিমাল, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, সাদিরা সামারাবিক্রমা ও রমেশ মেন্ডিসরা। বিনা উইকেটে ৬৯ থেকে ১৭৭ রানে সপ্তম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা, সব কটিই নুমানের। ২৩-৮-৭০-৭, নুমানের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। এর আগের সেরা ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬/১০৭।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শ্রীলঙ্কা : ১৬৬ ও ১৮৮ (ম্যাথুজ ৬৩*, করুনারত্নে ৪১, মাদুশকা ৩৩; নোমান ৭/৭০, নাসিম ৩/৪৪)।
পাকিস্তান: প্রথম ইনিংস: ৫৭৬/৫ ডিক্লে. (শফিক ২০১, সালমান ১৩২*, শাকিল ৫৭; আসিথা ৩/১৩৩, জয়াসুরিয়া ২/১৯৪)।
ফল : পাকিস্তান ইনিংস ও ২২২ রানে জয়ী।
সিরিজ : পাকিস্তান ২–০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : আব্দুল্লাহ শফিক।
সিরিজসেরা : আগা সালমান।
ঠিকানা/এনআই