যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের জেলা-উপজেলাভিত্তিক আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মধ্যে সদস্য ও কর্মকাণ্ড বিচারে সন্দ্বীপ সোসাইটি ইউএসএ’র অবস্থান তালিকার শীর্ষস্থানে রয়েছে। সঙ্গত কারণে এই সংগঠনের নির্বাচন মানেই অনেক বড় কিছু। নির্বাচন এলেই সরগরম হয়ে ওঠে প্রবাসী সন্দ্বীপবাসী অধ্যুষিত নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড অ্যাভিনিউ এলাকা। বর্তমানে সন্দ্বীপ সোসাইটি ইউএসএ’র নর্বাচনী প্রচারণা তুঙ্গে। সরব প্রার্থীরা। জনে জনে করছেন ভোট প্রার্থনা।
নিউইয়র্কে সন্দ্বীপের কৃতি সন্তান ও সিনিয়র সাংবাদিক সোহেল মাহমুদ তার ফেসবুকে সন্দ্বীপ সোসাইটিকে অল্পকথায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বঙ্গোপসাগরের দ্বীপ সন্দ্বীপ চট্টগ্রাম জেলার একটি উপজেলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রে এ এলাকার অভিবাসীদের সংখ্যাটা অনেক জেলার চেয়েও বেশি। কেউ বলেন- অন্তত ২০ হাজার, কারোর দাবি এ সংখ্যা ৩০ হাজারের কম নয়। নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে সন্দ্বীপীদের বেশিরভাগেরই বসবাস। সেখানেই গড়ে উঠেছে ‘সন্দ্বীপ সোসাইটি ইউএসএ’। সদস্যদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডে এ সংগঠনের খ্যাতি আছে বেশ। এ কারণে, এর নেতৃত্বে আসতে পারাটা ভীষণ প্রতিযোগিতামূলক, সেইসাথে মর্যাদারও। কমবেশি চার হাজার সক্রিয় সদস্যের ভোটাভুটিতে সন্দ্বীপ সোসাইটি ইউএসএ’র সরাসরি নির্বাচন হতে যাচ্ছে আর কয়েক সপ্তাহ পর। আনুষ্ঠানিক দিনক্ষণ জানানো না হলেও এখন পর্যন্ত দু'টি প্যানেল এ নির্বাচন নিয়ে সক্রিয়। এর একটি ফিরোজ-আলমগীর পরিষদ। অন্যটি ফয়সল-আমজাদ পরিষদ।’
সাংবাদিক সোহেল মাহমুদের লেখায় ফুটে উঠেছে সন্দ্বীপ সোসাইটির গুরুত্ব। যেহেতু সংগঠনটির গুরুত্ব রয়েছে এই প্রবাসে, এ কারণেই এই নির্বাচনও ভোটারদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আগামী অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ মাসের শেষে সংগঠনের কার্যকরী কমিটির বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং তফসিল নিয়ে আলোচনা হবে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে আসন্ন নির্বাচনে ইতিমধ্যেই দুটি প্যানেল প্রকাশ্যে লিফলেট ও পোস্টার বিতরণ শুরু করেছে। সোস্যাল মিডিয়াতেও তাদের রঙ-বেরঙয়ের পোস্টারে সয়লাব। একটি প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সভাপতি পদপ্রার্থী কমিউনিটির অতি পরিচিত মুখ, মূলধারার রাজনীতিক ও ফোবানার কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ। ফিরোজ আহমেদ অতীতে সন্দ্বীপ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনারও ছিলেন। তার প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন আলমগীর হোসাইন।
অন্যদিকে আরেকটি প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমলাক হোসেন ফয়সল। এর আগে তিনি সন্দ্বীপ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাব ও সন্দ্বীপ এডুকেশন সোসাইটির সভাপতি হিসাবে কাজ করেছেন। সোসাইটি বর্তমান কমিটির সভাপতি আব্দুল হান্নান পান্না ও এসএম আলাউদ্দীনের আশীর্বাদ রয়েছে তার প্যানেলের ওপর। এই প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়বেন আমজাদ হোসেন। ২০১৯ সালের পর সন্দ্বীপ সোসাইটির আর কোন নির্বাচন হয়নি।
জানা গেছে, গত ১০ বছর বর্তমান সভাপতি আব্দুল হান্নান পান্না ও ৪ বছর ধরে এসএম আলাউদ্দীন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। নতুন নেতৃত্ব দেখার জন্য সন্দ্বীপবাসী আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছে।
একটি সূত্র জানায়, আগামী অক্টোবরে (২০২৪-২০২৫) নতুন কার্যকরি কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবার সাথে সাথে গঠিত হবে নির্বাচন কমিশন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৯ পদের এ নির্বাচনে টার্মস অব রেফারেন্স ঠিক করবেন নির্বাচন কমিশন।