ইন্ডিয়ানার লাফায়েত এলাকার জন টি মায়ার্স পথচারী সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমেস্ট্রি ও মলিক্যুলার বায়োলজির সহকারী অধ্যাপক অনিক পাল (৩১)। গত ৩ জুলাই এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এরপর প্রায় ৩ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি এই শিক্ষকের। সর্বশেষ গত ১১ জুলাই পুলিশের কর্মকর্তা ব্রায়ান লও স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, তারা আর অনিকের অনুসন্ধান করবেন না।
এদিকে নিখোঁজ অনিকের পরিবারের দাবি, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না। নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর তারা অনিকের সন্ধান চেয়ে পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা চাইলেও সন্তোষজনক কোন তথ্য তারা পাচ্ছেন না। স্থানীয় পুলিশ অনিকের সন্ধান না দিয়ে তদন্ত শেষ করেছে।
জানা গেছে, পশ্চিম লাফায়েতের পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরাল গবেষক ছিলেন অনিক। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োকেমেস্ট্রি ও মলিক্যুলার বায়োলজির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ছিলেন। পশ্চিম লাফায়েত পুলিশের বরাত দিয়ে দ্য লাফায়েত জার্নাল অ্যান্ড কুরিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
পশ্চিম লাফায়েত পুলিশের বরাত দিয়ে ‘দ্য লাফায়েত জার্নাল অ্যান্ড কুরিয়ার’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে, ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের লাফায়েত এলাকার জন টি. মায়ার্স পথচারী সেতু থেকে লাফ দেন অনিক।
পশ্চিম লাফায়েত পুলিশ লেফটেন্যান্ট জন এগারের বরাত দিয়ে ওই জার্নালে বলা হয়েছে, ‘নদীতে যে যুবক ঝাঁপ দিয়েছিলেন, তিনি অনিক পাল। এ বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।’
ওয়েস্ট লাফায়েত পুলিশ বুলেটিন জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে থাকা অফিসার প্রথমে নদীতে এক যুবককে ঝাঁপ দিতে দেখেন। এরপর উদ্ধারকর্মী ও পুলিশ সেদিন প্রায় ৯ ঘণ্টা কে-৯এস দিয়ে নদীতে এবং তীরে অনুসন্ধান চালায়। পরদিন থেকেই স্বাধীনতা দিবসের সাপ্তাহিক ছুটি পড়ে যায়। সাত দিন পর এজেন্সিগুলো নদীতে আবারও অনুসন্ধান শুরু করে, যা অব্যাহত রয়েছে। একটি এজেন্সি আটিকা থেকে পথচারী সেতু পর্যন্ত নৌকা দিয়ে নদী তল্লাশি করেছে। তবে কোনো আলামত মেলেনি।
জানা গেছে, দারিদ্র্য জয় করে এগিয়ে যাওয়া অনিক পাল তুখোড় মেধাবী ছিলেন। পরিবারে আছেন দুই বোন আর মা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োকেমিস্ট্রিতে পড়াশোনা শেষ করে ২০১৬ সালে সেই বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। কোভিডের মধ্যেই ২০২১ সালের আগস্টে পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পান তিনি।
ঢাকায় বেড়ে উঠা অনিক নিখোঁজ হওয়ার মাত্র ২৫ দিন আগে বাংলাদেশ থেকে পারডুতে ফিরেছিলেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই ব্যক্তির জীবনে কি এমন ঘটনা ঘটল যে কিছু না বলে সে উধাও হলো?
অনিকের সন্ধানে সহযোগিতার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসকে লিখিতভাবে জানানোর পরও দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অনিকের পরিবারের অভিযোগ।