যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রবেশ ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকারের গৃহীত একটি নীতি স্থগিত করা হয়েছে। ২৫ জুলাই মঙ্গলবার এক রায়ে ওই অভিবাসন নীতি আটকে দেন দেশটির এক ফেডারেল বিচারক। বিষয়টিকে বাইডেন প্রশাসনের জন্য একটা বড় আঘাত বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে ‘টাইটেল-৪২’ নামে একটি বিধিনিষেধ আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি বছরের মে মাসে এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অভিবাসন নিয়ে নতুন করে বিধিনিষেধ দেয় বাইডেন প্রশাসন।
নতুন নীতিতে বলা হয়, যারা মার্কিন ফেডারেল সরকারের গৃহীত বৈধ পথগুলোর সুবিধা না নিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করবেন, তারা আশ্রয় পাওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
নতুন বিধি কার্যকর হওয়ার পর গত কয়েক মাসে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পায়। তিন মাসের মাথায় বাইডেন প্রশাসনের সেই বিধিনিষেধ স্থগিত করা হলো।
নতুন বিধিনিষেধকে চ্যালেঞ্জ করে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নসহ (এসিএলইউ) আরও কয়েকটি নাগরিক অধিকার সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এ বিষয়ে নতুন আদেশ দেন ক্যালিফোর্নিয়ার নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টের ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক জন টিগার।
বিচারক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনে স্পষ্ট বলা আছে, অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি আশ্রয় পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে না। তবে এর বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন আপিল করতে পারবে।
১৯৪৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি আইনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের স্রোত রুখতে ‘টাইটেল ৪২’-এর অবতারণা করা হয়। কিন্তু তখনো সেটি খুব বেশি প্রয়োগের প্রয়োজন পড়েনি। তবে ২০২০ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আইনের প্রয়োগ করেন এবং সীমান্তে কাড়াকাড়ি আরোপ করেন।
এই টাইটেল ৪২ এর ফলে মার্কিন কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে কোনো অভিবাসনপ্রত্যাশী বা উদ্বাস্তুকে নিজেকে রক্ষার জন্য আবেদন করার সুযোগ দ্রুত সংশ্লিষ্ট দেশে ফেরত পাঠানোর অনুমতি দেয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, এই আইনের আওতায় এখন পর্যন্ত ২৮ লাখের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০২১ সালে ক্ষমতায় এসেই অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্পের কঠোর নীতি পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেন বাইডেন। কিন্তু অভিবাসনপ্রত্যাশী ঠেকাতে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপে ট্রাম্পের নেওয়া সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছেন তিনি। সূত্র : ফক্স নিউজ ও দ্য গার্ডিয়ান।
ঠিকানা/এনআই