যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে স্থানীয় সময় ১০ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) রাতে। বিতর্ক সফল করতে দুই প্রার্থী ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। তারা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের কাছে প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন। কারণ এই বিতর্কে ব্যর্থতার কারণেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে। এদিকে বিতর্কের আগে বিভিন্ন জনমত জরিপ অব্যাহত রয়েছে। এসব জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা সমানে সমান।
কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে এই প্রথম সরাসরি টেলিভিশন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবিসি নিউজের আয়োজনে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে ফিলাডেলফিয়ার ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন সেন্টারে। সেখানে কোনো দর্শক শ্রোতা থাকবে না। ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কমলা হ্যারিসের টিম এবিসি নিউজকে পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছে, চলমান ব্যবস্থায় কমলা হ্যারিস সমস্যার মুখে পড়বেন। ট্রাম্পের প্রচারণা দলের জ্যাসন মিলার জানিয়েছেন, তারা এবিসি নিউজকে সিএনএনের আদলে বিতর্কের আয়োজন করতে বলেছেন। এজন্যই তারা বিতর্ক করতে রাজি হয়েছেন। এবিসি নিউজের উপস্থাপক ডেভিড মুয়ের এবং লিনসে ডেভিস বিতর্ক পরিচালনা করবেন। ফিলাডেলফিয়ার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে।
জরিপে সমানে সমান
সর্বশেষ সমীক্ষাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, ট্রাম্প এখনো প্রায় অর্ধেক ভোটারের দৃঢ় সমর্থন ধরে রেখেছেন। যদিও তিনি একজন অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত এবং ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হারের ফলাফল বদলানোর চেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর পর প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নামেন হ্যারিস। দ্রুত নিজেকে একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তবে জনমত জরিপে দেখা গেছে, তিনি এখনো বড় কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেননি। ফলে নির্বাচনি লড়াই অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা কলেজের একটি জরিপ অনুসারে, ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প জাতীয়ভাবে ৪৮ শতাংশ সমর্থন পেয়ে হ্যারিসের চেয়ে ১ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। হ্যারিস ৪৮ থেকে ৪৭ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন, যা মার্জিন অব এরর সীমার মধ্যে রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জাতীয়ভিত্তিতে বেশি ভোট বা জনপ্রিয়তা দ্বারা নির্ধারিত হয় না, বরং রাজ্যভিত্তিক ভোটের ফলাফলের মাধ্যমে হয়। ফলে কিছু নির্দিষ্ট দোদুল্যমান রাজ্যই সাধারণত ফলাফল নির্ধারণ করে। জরিপে দেখা গেছে, হ্যারিস উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ায় সামান্য এগিয়ে আছেন। নেভাদা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও অ্যারিজোনায় ট্রাম্পের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি অবস্থানে আছেন। সিবিএস নিউজ/ইউগভের আরেকটি জরিপ অনুসারে, হ্যারিস মিশিগান ও উইসকনসিনে ১ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে এবং পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্পের সঙ্গে সমান অবস্থানে আছেন।
নির্বাচন কর্মকর্তাদের হুমকি ট্রাম্পের
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে ২০২০ সালের নির্বাচনে প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যারা ২০২০ সালের নির্বাচনে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘যারা প্রতারণা করেছে, আমি জয়ী হওয়ার পর তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন বিচার করা হবে। তাদের দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড হতে পারে, যাতে করে বিচারের অবমাননা না হয়।’
কমলাকে পুতিনের সমর্থনে ‘মর্মাহত’ ট্রাম্প
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে সমর্থন জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, কমলাকে পুতিনের সমর্থনে তিনি ‘মর্মাহত’। এবারের নির্বাচনেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আবারও আলোচনায় আসছে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ। গত শনিবার উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনি প্রচারণায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, পুতিন কেন হ্যারিসকে সমর্থনের কথা বললেন বিষয়টি তার বোধগম্য নয়। সূত্র: রয়টার্স ও সিএনএন
ঠিকানা/এসআর